বাংলায় আদিবাসীদের খাদ্যাভাব রয়েছে! অনাহারই মৃত্যুর কারণ উসকে দিল গবেষণা
মাস দুয়েক আগেই বাংলার জঙ্গলমহলে উপজাতীয় সম্প্রদায়ের সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণের পিছনে খাদ্য ঘাটতি রয়েছে, তা মানতে নারাজ তৃণমূল সরকার।
মাস দুয়েক আগেই বাংলার জঙ্গলমহলে উপজাতীয় সম্প্রদায়ের সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণের পিছনে খাদ্য ঘাটতি রয়েছে, তা মানতে নারাজ তৃণমূল সরকার। তবে পশ্চিমবঙ্গের উপজাতীয় পরিবারের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে অন্য ছবি উঠে এসেছে। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে- উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে।
সোমবার প্রফেসর অমর্ত্য সেনের প্রতীচী ইনস্টিটিউট ও এশিয়াটিক সোসাইটি পরিচালিত 'পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসীদের বিশ্বে তদন্ত' শীর্ষক এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এক হাজার উপজাতীয় পরিবারের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষায় উঠে এসেছে খাদাভাব রয়েছে আদিবাসী পরিবারের মধ্যে।
পশ্চিমবঙ্গে ৫০ লক্ষেরও বেশি উপজাতিদের বসবাস। ভারতের ১০ কোটি উপজাতীয় জনসংখ্যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বাস করে তার ছয় শতাংশ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক উন্নয়নে দেশের উপজাতিরা অনেক পিছিয়ে আছে। গত নভেম্বরে সাত উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
তাঁদের মৃত্যু পিছনে খাদ্যাভাব রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু অনাহারে মৃত্যু বলে মানতে চায়নি সরকার। প্রাথমিক এই সমীক্ষা রিপোর্ট দাবি করেছে, অনাহারের সমস্যা রয়েছে জঙ্গলমহলে। পশ্চিমবঙ্গের মোট উপজাতি সংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে জানা যায় গত এক বছর ধরে তাঁরা খাদ্য সংকটে রয়েছে।
এই সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে কিছু কিছু পরিবারে আগস্ট থেকে অক্টোবরে দিনে দুবার খাবার সংস্থান হচ্ছিল। এছাড়াও কিছু ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা দিনে একবার মাত্র খাচ্ছিলেন। বেশিরভাগ পরিবার প্রাণী প্রোটিন বা ডাল জাতীয় শস্যের সংস্থা ছিল না।
এছাড়াও তারা মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে জন্মগত দারিদ্র্যতার জন্য। ফলে তাঁদের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ভঙ্গুরতা দেখা দেয়। এর ফলে আদিবাসীদের জীবনধারা ও বনাঞ্চল কমে যাওয়ার ফলে তাঁরা পুষ্টিগত সমস্যায় পড়েন। ফলে অকাল মৃত্যু ঘটে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের।
আগের বছরের সমীক্ষার পরিসংখ্যানগুলিতে দেখা গেছে, আদিবাসীদের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫২, যার মধ্যে ৪৮ ছিল অকাল মৃত্যু। মাত্র চারজনের বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের গড় বয়স ছিল ৫৮ বছর, যা পশ্চিমবঙ্গের গড় আয়ু থেকে অনেক কম। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের গড় আয়ু ৭০ বছর।