জিটিএ-তে কতটা দুর্নীতি করেছেন বিমল গুরুংরা, মমতার চালে সামনে আসছে তথ্য
জিটিএ-র খরচাপাতির গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র উধাও। নেই বিভিন্ন ক্ষেত্রের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেটও। তদন্ত সম্পূর্ণ হলে বিস্তর গরমিলের তথ্য সামনে আসার সম্ভাবনা।
বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রই উধাও। গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অডিট শুরুর প্রায় সপ্তাহ দুয়ের পরে তছরুপের অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এমনটাই জানিয়ে দিল অডিট টিম।
বিমল গুরুং-এর নেতৃত্বাধীন জিটিএ-র গত পাঁচ বছরের কার্যকালের মধ্যে তিন বছরের, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭-র অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা এখনও বাকি আছে। পাঁচ বছরে স্থানীয় এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে জিটিএ সদস্যদের হাতে যাওয়া প্রায় সাড়ে চল্লিশ কোটি টাকার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পরীক্ষকরা। সাংসদ, বিধায়কদের মতোই জিটিএ সদস্যরা স্থানীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে বছরে ত্রিশ লক্ষ টাকা করে পেয়ে থাকেন। বছরে দুদফায় সদস্যরা এই টাকা তুলতে পারেন। জিটিএ সদস্যদের এমনই একটি তহবিলের প্রায় সাড়ে চল্লিশ কোটি টাকার কোনও হদিশ নেই।
বিভিন্ন খাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে দেওয়া টাকার হিসেবেরও অনেকক্ষেত্রেই কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি বলে অডিট প্যানেল জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং অন্য সরকারি বিভাগ থেকে গত পাঁচ বছরে এরকমই প্রায় নশো কোটি টাকা পেয়েছে জিটিএ।
রাজ্যের তরফে বিভিন্ন খাতে দেওয়া টাকার আটষট্টি শতাংশের খরচের কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। রাজ্য সরকার ২০১১-র সেপ্টেম্বরে পাহাড়ে ভূমিকম্পের পর টাকা এবং যে পরিমাণ খাদ্যশস্য দিয়েছিল তাও এই হিসেবের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ দফতরের আধিকারিকরা।
অডিটররা দেখেছেন, জিটিএ-র রিপোর্টে দেখানো হলেও, কালিম্পং দুই ব্লকে জিটিএ একটিও বাড়ি তৈরি করেনি। অন্যদিকে, দার্জিলিং এবং মিরিকের বাসিন্দারা তাদের জন্য বরাদ্দ খাদ্যশস্য পাননি।
ত্রাণ ও পুনর্বাসনের বিভাগের কোনও মাস্টার রোল পাওয়া যায়নি। কোনও ভাউচার কিংবা জিটিএ অনুসৃত বন্টন ব্য়বস্থা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন রাজ্যের অফিসাররা। এইসব কাজের জন্য প্রায় দশ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
রাজ্যের অডিট প্যানেল জানিয়েছে, রেকর্ড রাখা কিংবা প্রথা মফিক ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট রাখারও কোনও প্রয়োজন মনে করেনি জিটিএ। হাউসিং, ত্রাণ, পুনর্বাসন কিংবা খাদ্য দফতরের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট খুঁজে বেরাচ্ছেন অফিসাররা।
মুখ্যমন্ত্রী জিটিএ-র বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগ করে যেমন স্পেশাল অডিটের কথা বলেছিলেন, তেমনই তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভায় চেয়ারম্যানকে সরিয়ে একই রকম অডিটের কথা জানিয়েছিলেন।
মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি অবশ্য এই অডিটকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন। জিটিএ-তে তছরুপের অভিযোগ নিয়েও কোনও উত্তর দিতে তিনি রাজি হননি।