শোভনকে জায়গা দিতেই কি রত্নার ‘অব্যাহতি’, নাকি মমতার হস্তক্ষেপে ত্রিকোণ-সমীকরণ বদল
শোভন-কাণ্ডের ত্রিকোণ সমীকরণ ফের অন্য মোড় নিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈশাখীর বৈঠকের পর রত্নার দায়িত্ব ছাড়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
শোভন-কাণ্ডের ত্রিকোণ সমীকরণ ফের অন্য মোড় নিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈশাখীর বৈঠকের পর রত্নার দায়িত্ব ছাড়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের সুপ্রিমোর চাপেই শোভনের পথ পরিষ্কার করতে রত্না সরে গেলেন, নাকি রত্না স্বেচ্ছায় শোভনকে তৃণমূলে জায়গা করে দিতে সরে গেলেন, তা নিয়েই জল্পনার পারদ তুঙ্গে উঠেছে।
রত্নার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি, জল্পনা
তৃণমূলে রত্নার উত্থানের পর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপিতে সক্রিয় হওয়া নিয়ে যখন চর্চায় ব্যস্ত রাজনৈতিক মহল, তখনই সবাইকে অবাক করে দিয়ে নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক হয় শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর তারপরই রত্নার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাওয়ার মধ্যে কোনও যোগসাজোশ রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মমতা-বৈশাখী বৈঠকের পর
বৈশাখী বলেছিলেন, দিদির প্রতি আস্থা রয়েছে। যে কোনও সমস্যার তিনি চটজলদি সমাধান করেন। দীর্ঘদিন ধরে শোভনের ভবিষ্যৎ ঝুলে রয়েছে। তিনি তৃণমূলে না বিজেপিতে তা নিয়ে ধন্দের মধ্যে বৈশাখীর ওই বার্তার দুদিন পরই রত্না সরে দাঁড়ালেন তাঁর দায়িত্ব থেকে। তা থেকেই জল্পনার সূত্রপাত। কেননা শোভন শর্ত দিয়েছিল, রত্নার সঙ্গে এক মঞ্চে রাজনীতি তিনি করবেন না।
রত্নার স্বাগত বার্তা শোভনকে!
এহেন অবস্থায় রত্না তাৎপর্যপূর্ণ জবাব দিয়েছিলেন, শোভন চট্টোপাধ্যায় ফিরে এলে তাঁর চেয়ে খুশি আর কেউ হবেন না। তিনি যদি তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে আসেন, তবে তাঁকে স্বাগত। এখানে বিধায়ক হিসেবে তাঁরই সবথেকে বেশি অধিকার। তিনি আসছেন না বলেই তো মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন দিদি।
শোভন যদি ফিরে আসেন
ওইদিন রত্না এমনও জানিয়েছিলেন, শোভন ফিরে এলে তাঁকে জায়গা ছাড়তেও প্রস্তত তিনি। রত্নার কথায়, তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করতে রাজনীতির ময়দানে নামেননি। নেমেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পরিষেবা না পাওয়া মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে। আজ দু-বছরেরও বেশি সময় বেহালার একাংশ রাজনৈতিক অভিভাবক হীন। কারণ তাঁদের বিধায়ক এখানে আসনে না। তাই বিধায়ক এলে, তিনি জায়গা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।
রত্নার অব্যাহতি অন্য বার্তা দেয় রাজ্য রাজনীতিতে
উল্লেখ্য রত্নার গুরুত্ব বাড়তেই বৈশাখী প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তারপরে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী। শোভন একদিকে বৈশাখীকে পাঠিয়ে তৃণমূলে তাঁর অবস্থান পরখ করে নিতে তৎপর হন, অন্যদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নাড্ডার ডাকে সাড়া দিয়ে বিজেপিতেও সক্রিয় হওয়ার সম্ভবনা বাড়িয়ে তোলেন। এই পরিস্থিতিতে মমতার সঙ্গে বৈশাখীর সাক্ষাৎ অন্য বার্তা দেয় রাজ্য রাজনীতিতে।