শুভেন্দু-রাজীবদের নম্বর কম তৃণমূলে, কাদের নম্বর বেশি! একুশের আগে বিভাজনে জল্পনা
শুভেন্দু-রাজীবদের নম্বর কম তৃণমূলে, কাদের নম্বর বেশি! একুশের আগে বিভাজনে জল্পনা
তৃণমূল কংগ্রেসে শুভেন্দু অধিকারী বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নম্বর কম। কেন তাঁদের নম্বর কম, আর কাদের নম্বরই বা বেশি, তার যথার্থ কারণ উঠে এল খোদ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরই কথায়। অরাজনৈতির মঞ্চ পেয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাখ্যা করলেন দলে কাদের নম্বর বেশি, আর কাজ করা সত্ত্বেও কাদের নম্বর কম।
তরুণ-তুর্কি নেতাদের বিদ্রোহে ক্রমেই ব্যাকফুটে তৃণমূল
শুভেন্দুর পর তৃণমূলে বিদ্রোহী মন্ত্রীর তালিকায় যুক্ত হয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। তিনি ঘুরিয়ে সমালোচনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে কারা সামনের সারিতে, আর কারা পিছনের সারিতে তা নিয়ে বিস্ফোরক বিবৃতি দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তরুণ-তুর্কি নেতাদের এই বিদ্রোহে ক্রমেই ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজীবের বিদ্রোহী হয়ে ওঠা তৃণমূলে বুমেরাং হবে
২০২১-এর নির্বাচনের আগে শুভেন্দুর পর রাজীবের বিদ্রোহী হয়ে ওঠা তৃণমূলের কাছে শুধু অশনি সংকেতই না তা বুমেরাং হবে। বিদ্রোহের আগুনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন দলের স্তাবকতা নিয়ে। প্রকাশ্যে বেসুরো গেয়ে রাজীব বলেন, এখন স্তাবকতার যুগ। হ্যাঁ-কে হ্যাঁ, আর নাকে না বলে মেলাতে পারলেই তুমি বেশি নম্বর পাবে।
সামনের সারিতে তাঁরাই, যাঁরা স্তাবকতা করে
কোনও রাখঢাক না করেই রাজীব আক্ষেপ করে বলেন, আমি স্তাবকতা করতে পারি না। তাই দলে আমার নম্বর কম। আমাকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে পিছনের সারিতে। আর যাঁদের মানুষ চায় না, তাঁরাই সামনের সারিতে রয়েছেন দলে। এ প্রসঙ্গে তিনি শুভেন্দুর কথাও তুলে ধরেন। যাঁরা কাজ করছে, তাদের জায়গা হয় না সামনের সারিতে, যাঁরা স্তাবকতা করে, তাঁদেরই শুধু জায়গা হয়।
রাজনীতিতে শূন্যতার তৈরি হচ্ছে, কী কারণ
রাজীব বলেন, এখনও অনেকে আছেন যাঁরা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না। অনেক রাজনীতি করে ভালো কাজ করতে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে, সমাজকে উন্নত করতে। কিন্তু ভালো কাজ করতে গেলেই পিছন থেকে টেনে ধরা হয়। এইসব কারণেই রাজনীতিতে শূন্যতার তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রাজীব।
রাজনীতির মঞ্চকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার
রাজীব বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই স্তাবকের রাজনীতি প্রকৃত নেতাদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। সামনে ভিড় করে থাকছে স্তাবকের দল। যাঁরা হ্যাঁ-কে হ্যাঁ বলে। আর না-কে না। তাঁরা মানুষ বা সমাজের কথা ভাবে না, রাজনীতির মঞ্চকে তাঁরা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে। তাঁরা মানুষকে বোকা বানাতেই ব্যস্ত। কিন্তু তাঁরা জানেন না যাঁরা মানুষকে বোকা ভাবে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে।
ঠান্ডা ঘরে বসে মানুষকে সহজে বোকা বানায় যাঁরা
রাজীব দলের অন্দরে এই বিভাজন রেখা টেনে বলেন, যাঁরা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকেন, যাঁরা মনে করেন মানুষকে সহজে বোকা বানানো যায়, তাঁরাই বিভিন্ন জায়গায় সামনের সারিতে চলে আসছেন। আর যাঁরা যোগ্যতার সঙ্গে, দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেন, তাঁদের পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি নিজের উদাহারণই তুলে ধরেন।
স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে কাজ করেও পিছনে, যন্ত্রণা দেয়
রাজীবের কথায়, দলের পক্ষে থেকে সর্বদা যোগ্যতা-দক্ষতা-স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু দল সেই পিছনের সারিতে ঠেলে দিয়েছে বারবার। এ যে কী যন্ত্রণা, তা বলে বোঝাতে পারব না। যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত তাঁরা স্তাবক বলে সামনের সারিতে। আর যাঁরা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে কাজ করছে, তাঁরা পিছনের সারিতে। সামনের সারিতে থাকা নেতাদের মানুষ পছন্দ করছে না। তবুও তাঁরা সামনে।
দক্ষরা পিছনের সারিতে, পালস বুঝতে পারছে না দল
রাজীব ব্যাখ্যা করেন, দল দক্ষ নেতাদের পিছনের সারিতে সরিয়ে দেওয়ার জন্য শূন্যতা তৈরি হচ্ছে। সেই কারণেই দল মানুষের পালস বুঝতে পারছে না। এটা কাম্য নয়। রাজনীতি শুধু ক্ষমতা দখলের জন্য নয়। মানুষের পাশে থাকার জন্য রাজনীতি, সমাজের উন্নয়নের জন্য রাজনীতি। যতদিন রাজনীতিতে থাকব, সেই চেষ্টাই করে যাব।
কুর্সি দিদির, রাজ ভাইপোর! নাম না করে অভিষেকের চশমা ও জুতোর দামের হদিশ দিলেন কৈলাশ