রাজীব কেঁদে ফেললেন মমতার মন্ত্রিসভা ছেড়ে, আবেগঘন বার্তায় জানালেন ইস্তফার কারণ
রাজীব হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন মমতার মন্ত্রিসভা ছেড়ে, দিলেন আবেগঘন বার্তা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। হাওড়ার ডোমজুড়ের বিধায়ক তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের মন্ত্রী ক্ষোভে-দুঃখে-অভিমানে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন। তারপরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কেঁদে ফেললেন। বাধ্য হয়েই তাঁকে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে বলে দাবি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে পদত্যাগ পত্র দিয়ে আসার পর পরই রাজভবনে রাজ্যপালকে পদত্যাগের চিঠি দিতে আসেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবন থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। প্রথমেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি থেকে শুরু করে মন্ত্রী হয়ে ওঠার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মমতা বিরুদ্ধে অসৌজন্যতার অভিযোগ রাজীবের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার পর সমালোচনা করতেও কসুর করেননি। তিনি প্রকাশ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে অসৌজন্যতার অভিযোগ করেন। রাজীবের ক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইচ্ছা করলেই তাঁর মন্ত্রিসভা রদবদল করতে পারেন। কিন্তু তাঁর আগে সৌজন্যের খাতিরে একবার জানানোর প্রয়োজন কি ছিল না? সেই আশাটুকু তো অন্তত করতে পারি একজন সহকর্মী হিসেবে।
সেচমন্ত্রী হিসেবে বদলির পরই কঠোর রাজীব
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সেচমন্ত্রী হিসেবে বদলি করা হয়েছে আড়াই বছর আগে। দফতর বদলের সময় মুখ্যমন্ত্রী সামান্য সৌজন্যও দেখাননি। মন্ত্রী হিসেবে কাজ সেরে দলীয় কার্যালয়ে কর্মী পরিবেষ্টিত থাকাকালীন টিভি দেখে জেনেছি, আমি আর সেচমন্ত্রী নেই। মন থেকে মনে নিতে পারিনি সেই অসৌজন্য।
ভগ্নহৃদয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত রাজীবের
রাজীব বলেন, সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আর মন্ত্রী থাকব না। পরদিন চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম মন্ত্রী থাকতে চাই না। একজন কর্মী হিসেবে শুধু কাজ করতে চাই। তারপর মুখ্যমন্ত্রী আমাকে নিরস্ত্র করেন। মুখ্যমন্ত্রী কথায় এতদিন এই দফতর চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু নেতানেত্রীর কথা আমাকে ব্যথিত করেছে। আমি তাই ভগ্নহৃদয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
মনে প্রাণে আঘাত নিতে পারছিলাম না! তাই সিদ্ধান্ত
রাজীব বলেন, চিরকৃতজ্ঞ থাকব দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। এতদিন যে সব দফতরে ছিলাম, যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁদের প্রত্যেকের কাছে শিখেছি। তাঁদের প্রতিও আমার কৃতজ্ঞতা। আমার খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু আমাকে ছাড়তেই হয়। আমি মনে প্রাণে আঘাত নিতে পারছিলাম না। তাই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম।
যে প্লাটফর্মই পাই আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাব
আমাকে যখন যা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, আমি সই কাজ দায়িত্ব সহকারে পালন করেছি। বন দফতরের কর্মীদের অনুরোধ রাখতে পারিনি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। জানি না কী প্লাটফর্ম পাবো, যে প্লাটফর্মই পাই আমি মানুষের জন্য কাজ করে যাব। মানুষ বিচার করবেন কী কাজ করেছি।
ভাবিনি এমন দিন আসতে পারে! আবেগতাড়িত রাজীব
রাজীব এরপরই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ভাবিনি কোনওদিন এমন দিন আসতে পারে। আমাকে ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। বিগত এক-দেড়মাস সহকর্মীদের কথা, আমার সতীর্থদের কথা আমাকে মনে প্রাণে আঘাত করেছে। আমি সেসব কথা নেত্রীকে বলেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু কথা আমাকে যেভাবে ব্যথিত করেছে আমি ছাড়তে বাধ্য হলাম ভগ্নহৃদয়েই।
'দিদি আপনার কেমন লাগছে'! রাজীবের পদত্যাগের পর এক পুরনো রাজনৈতিক অধ্যায় তুলে খোঁচা প্রদীপের