‘বিদ্রোহী’ রাহুল সিনহা কি তৃণমূল-যোগের ইঙ্গিত দিলেন, ১০-১২ দিনের মধ্যেই ‘বড়’ সিদ্ধান্ত
৪০ বছর গেরুয়া রাজনীতি করার পর পদ হারাতে হয়েছে রাহুল সিনহাকে। এককালে তিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন, বর্তমানে ছিলেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক। দলে গুরুত্ব হারিয়ে তাই বিদ্রোহী হলেন রাহুল সিনহা। সাফ জানিয়ে দিলেন, ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই তিনি তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঠিক করবেন।

৪০ বছরের সম্পর্ক কি ছিন্ন করবেন রাহুল
রাহুলের এই মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি তিনি দলবদলের কথা ভাবছেন। তিনি বিজেপির সঙ্গে ৪০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে যোগ দিতে পারেন তৃণমূল কংগ্রেসে। কিংবা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলে তিনি পাড়ি জমাতে পারেন একুশের আগে! নাকি এটা তাঁর নিতান্তই একটা চাপ সৃষ্টি করার চাল।

‘বিদ্রোহে’র বার্তায় ১০-১২ দিন সময় নিলেন রাহুল
বিজেপিতে যোগদানের তিন বছর পর মুকুল রায়ের পদপ্রাপ্তির দিনেই বঙ্গ বিজেপিতে বিদ্রোহের সুর চওড়া হয়েছে রাহুল সিনহা পদ হারানোয়। তিনি পদ হারিয়ে ‘বিদ্রোহে'র বার্তা দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ হারানোর পর রাহুল বলেন, ১০-১২ দিনের মধ্যেই তিনি যা বলার বলবেন। অর্থাৎ তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ তিনি চূড়ান্ত করবেন।

৪০ বছর দলকে সেবার পুরস্কার! চর্চায় রাহুল
মুকুল-ঘনিষ্ঠ অনুপম হাজরার কাছে পদ খুইয়ে রাহুল সিনহা বলেন, ৪০ বছর দলকে সেবা করার পুরস্কার পেলাম। জন্মলগ্ন থেকে বিজেপিকে সেবা করার পুরস্কার দিল দল। পার্টি যে পুরস্কার দিল তার পক্ষে বিপক্ষে কিছু বলতে চাই না। যা বলার বলব ১০-১২ দিনের মধ্যে বলব। তাঁর এই বিশেষ ইঙ্গিত নিয়েই এখন চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে

তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসতে পদহীন রাহুল
কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি পেয়ে রাহুল সিনহার আক্ষেপ, ৪০ বছর ধরে যে দলের সেবা করে এসেছি, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসতে আমাকে সরতে হবে সেই দল থেকে! এর থেকে বড় দুর্ভাগ্যের বিষয় হতে পারে না। তিনি এদিন পরোক্ষে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন মুকুল রায় ও মুকুল-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল ছেড়ে আসা অনুপম হাজরার দিকে।

রাহুলের তিন মুকুল আর মুকুল-ঘনিষ্ঠের দিকে
রাহুলের প্রত্যক্ষ অভিযোগ, মুকুল-ঘনিষ্ঠ অনুপম হাজরাকে জায়গা করে দিতেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ থেকে। দল তাঁর কথা ভাবেনি। অন্য কোনও পদ দেয়নি। তাই এবার রাহুল সিনহা নিজেই ভাবছেন কী করবেন। ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হবে ১০-১২ দিনের মধ্যেই।

রাহুলের অপসারণে বঙ্গ বিজেপিতে সিঁদুরে মেঘ
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে মুকুল রায়-সহ তিনজনকে পদ দেওয়া হল, তখন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক রাহুল সিনহাকে বাদ পড়তে হল। তাঁকে কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। রাহুলের এই অপসারণে বঙ্গ বিজেপিতে ফের সিঁদুরে মেঘ দেখা দিয়েছে।

বিজেপিতে পদহীন, তাঁর অপমান মনে করছেন রাহুল
রাহুল সিনহা বাদ পড়লেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কমিটি থেকে। আবার নেই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কমিটিতেও। তিনি শুধু রাজ্য কর্মসমিতির সদস্য এখন। অর্থাৎ পদহীন রাহুল সিনহা। বিজেপিতে তাঁকে পদহীন করে দেওয়া তাঁর অপমান বলে মনে করছেন রাহুল সিনহা। তাই তিনি এবার ভেবেচিন্তেই বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

২০২১-এর আগে বুমেরাং হবে বঙ্গ বিজেপিতে
অর্থাৎ মুকুল রায়কে নিয়ে যাবতীয় জল্পনার অবসান হতে না হতেই বঙ্গ বিজেপিতে রাহুল সিনহার গুরুত্ব নিয়ে চর্চা শুরু হল। তবে কি রাহুল সিনহা একুশের আগে কোনও বুমেরাং ঘটাবেন নাকি বিজেপির সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া হয়ে যাবে। ২০২১-এর আগে বঙ্গ বিজেপিকে কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখিয়ে দিতে পারেন রাহুল সিনহা।

মুকুলদার অভিজ্ঞতা-দূরদৃষ্টতাই হঠিয়ে দেবে তৃণমূলকে, বাবুলের মুখে পরিবর্তনের বাণী