কেন গুরুংদের গুলিতে প্রাণ খোয়ালেন এসআই অমিতাভ, ব্যাখ্যা দিলেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা
এসআই অমিতাভ মালিকের মৃত্যু নিয়ে নাগরিক সমাজ যেমন প্রশ্ন তুলছে, তেমনই পুলিশের অন্দরেও প্রাক্তনরা প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছেন না।
শুক্রবার দার্জিলিংয়ে বিমল গুরুংকে ধরতে গিয়ে শহিদ হয়েছেন রাজ্য পুলিশের এসআই অমিতাভ মালিক। গোর্খা বাহিনীর দুষ্কৃতীদের গুলি এফোঁড় ওফোঁড় করে দিয়েছে অমিতাভর খুলি। বীর পুলিশ আধিকারিকের প্রাণের বলি যাওয়ায় সারা রাজ্যে হাহাকার পড়ে গিয়েছে। সব স্তর থেকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিমল গুরুংকে গ্রেফতারের শপথ নিয়ে ফেলেছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। এমনকী শোকগ্রস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কবিতা পর্যন্ত লিখে ফেলেছেন। এসবের মাঝে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন কিন্তু উঠছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে আলোড়ন শুরু হয়েছে ফেসবুকে। নাগরিক সমাজ যেমন প্রশ্ন তুলছে, তেমনই পুলিশের অন্দরেও প্রাক্তনরা প্রশ্ন তুলতে ছাড়ছেন না।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা কেন পিছনে?
প্রাক্তন ডেপুটি সুপারিটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ সুব্রত বসু নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে বেশ কিছু প্রশ্ন করেছেন যা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন তিনি করেছেন, মাত্র তিন বছর সার্ভিস করা সাব ইনস্পেক্টর যাঁকে দুই বছর শুধু প্রশিক্ষণ নিতে হয় তাঁকে কেন বিমল গুরুংকে ধরতে নেতৃত্বে রেখে অভিযানে পাঠানো হল। বাকী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, অভিজ্ঞতাপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকেরা কোথায় ছিলেন?
আগাম খবর থাকার পরও কেন নেতৃত্বে অমিতাভ
অমিতাভর স্ত্রী বিউটি জানিয়েছেন, আগের দিন অনেক রাতে বাড়ি ফিরেছিলেন তাঁর স্বামী। রাতে ভালো করে খাওয়া হয়নি। সেইসময়ই জানিয়েছিলেন, ভোর চারটেয় উঠে অপারেশনে বেরতে হবে। তার মানে আগাম খবর পুলিশের কাছে ছিল। তা সত্ত্বেও এত বড় একটি অভিযানের নেতৃত্বে কেন থাকবেন না বড় পুলিশ অফিসাররা? কেন অমিতাভকে সামনে এগিয়ে দেওয়া হবে?
কেন বলি হলেন এসআই
এর পিছনে কি কোনও অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে? প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। আরও মারাত্মক অভিযোগও রয়েছে তাঁর। বলছেন, বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে চরম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই কি রাজ্যের এক সম্ভাবনাময় পুলিশ আধিকারিককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হল?
বিমল এখন শত্রু বলেই কি!
আরও অভিযোগ তিনি করেছেন। সুব্রত বসু অভিযোগ, যেভাবে বিমল গুরুংকে এখন গ্রেফতার করার জন্য রাজ্য তৎপরতা দেখাচ্ছে, কয়েকবছর আগে মদন তামাং হত্যায় অভিযুক্ত গুরুংকে কেন গ্রেফতারে তৎপরতা দেখায়নি রাজ্য? তাহলে কি সে তখন সরকারের বন্ধু ছিল, এখন শত্রু হয়ে উঠেছে?
এতদিন পুলিশ কী করছিল?
শুক্রবারের অভিযানের পর পাহাড়ে প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই অস্ত্র দিয়ে পাহাড়ে অশান্তির ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে গুরুং, এমনটাই অভিযোগ। তাহলে সেই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন, এত অস্ত্র তো একদিনে আসেনি। তাহলে এতদিন ধরে পুলিশ কী করছিল? পাহাড়ে ষড়যন্ত্রের কোনও আঁচই কি পুলিশ এতদিনে পায়নি? আজ এক বীর শহিদের মৃত্যুর পর পুলিশের টনক নড়ল?