কুরুচিকর বিদ্রুপের শিকার পুলওয়ামার শহীদের স্ত্রী! অনড় থেকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মিতা
'যুদ্ধ না চাওয়া'র জন্য পুলওয়ামার শহীদ বাবলু সান্ত্রার বিধবা স্ত্রী মিতা সান্ত্রাকে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যঙ্গ বিদ্রুপের শিকার হতে হল।
পুলওয়ামার সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সারা দেশ বলেছিল শহিদ পরিবারদের দাঁড়ানো কথা। কিন্তু, সেই বর্বরোচিত আক্রমণে স্বামী হারানোর পর, পুলওয়ামার শহিদ বাবলু সান্ত্রার স্ত্রী মিতা সান্ত্রাকেই তীব্র ব্যঙ্গ বিদ্রুপ সহ্য করতে হচ্ছে। তাঁর অপরাধ? স্বামীর মৃত্য়ুর পরও তিনি যুদ্ধের পক্ষে মত দেননি। স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যুদ্ধ চান না।
সুরে সুর না মিলতেই, শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ভুলে গিয়েছে একাংশের মানুষ। জঘন্য কুরুচিকর ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করা হচ্ছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সোশ্য়াল মিডিয়ায়। বলা হচ্ছে 'কাপুরুষ', 'আত্মকেন্দ্রীক'। কিন্তু তারপরেও নিজের অবস্থান থেকে একচুলও সরেননি শহিদ বাবলু সান্ত্রার স্ত্রী।
কেন যুদ্ধ চান না?
ইতিহাসের শিক্ষিকা মিতা জানিয়েছেন, ইতিহাসে তিনি দেখেছেন যুদ্ধ কখনই কোনও স্থায়ী সমাধান দিতে পারে না। শুধুমাত্র স্ত্রীরা তাঁদের স্বামীকে হারান, মায়েরা তাঁদের সন্তানদের, মেয়েরা বাবাদের। তাই স্বামীর মৃত্যুর পরও যুদ্ধ-বিরোধী অবস্থান থেকে সরেননি তিনি।
শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতিই নয়
মিতার যুদ্ধ-বিরোধিতা নিয়ে কেউ কেউ সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি শুধু নিজের ক্ষতির কথাই ভাবছেন, দেশ তাঁর সন্তানকে হারাল, সেই কথা ভাবছেন না। মিতা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যুদ্ধে শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয় গোটা দেশেরই ক্ষতি হয়। দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিকাশ থমকে যায়।
বায়ুসেনার অভিযান প্রসঙ্গে
মিতা জানিয়েছেন অনেকেই তাঁকে ভুল বুঝেছেন। তিনি মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বায়ুসেনার অভিযানকে সমর্থন করেন বলে সাফ জানিয়েছেন। যেভাবে অসামরিক নাগরিকদের আঘাত না করে সন্ত্রাসবাদীদের তাঁরা খতম করেছেন, তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহীদ বাবলুর বিধবা স্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন সন্ত্রাসবাদীরা দেশও সমাজের শত্রু। তাদের নিধন করাই উচিত।
পাকিস্তান নয়, বাবলুর হত্য়াকারী...
বায়ুসেনার সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়াকে সমর্থন করলেও, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার বিরোধী তিনি। তাঁর মতে কোনও দেশ নয়, বাবলুকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসবাদ। একই সঙ্গে তিনি পুলওয়ামার ঘটনার দিন সেনা কনভয়ের নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগও ফের তুলেছেন।