বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা ভোটের মুখে হলেন ‘ঘরের মেয়ে’! নেপথ্যে কি পিকে-স্ট্র্যাটেজি
বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা ভোটের মুখে হলেন ‘ঘরের মেয়ে’! নেপথ্যে কি পিকে-স্ট্র্যাটেজি
একুশের ভোটের আগে তৃণমূল নেমেছে নয়া অভিযানে। 'বাংলা নিজের মেয়ে'কেই চায়! আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনী যুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ের লক্ষ্যে এবার 'বাংলার মেয়ে' হয়ে উঠতে চাইছেন। বিরোধী নেত্রী হিসেবে তিনি ছিলে 'অগ্নিকন্যা'। আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠার পর 'বাংলার দিদি', 'বাংলার মা', 'বাংলার গর্ব' অনেক কিছুই হয়েছেন। এবার তিনি হতে চলেছে 'বাংলার ঘরের মেয়ে'।
এবার ‘বাংলা নিজের ঘরের মেয়েকেই চায়’
কিন্তু কেন 'বাংলার গর্ব মমতা' হঠাৎ করেই 'বাংলার ঘরের মেয়ে' হয়ে উঠতে চাইলেন? প্রয়োজন অবশ্যই একুশের কুরুক্ষেত্র জেতার জন্য। বাংলায় ভোট দামামা বেজে গিয়েছে। ভোটমুখী বাংলায় তাই স্লোগান তুলেছে তৃণমূল- এবার 'বাংলা নিজের ঘরের মেয়েকেই চায়'। এই স্লোগানকে সামনে রেখেই ভোট বৈতরণ পার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বাংলার বাইরে থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব নেই
তৃণমূল বলছে, এবার নির্বাচন কঠিন নয়, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ। গোটা দেশের মানুষ বাংলার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই 'বাংলা নিজের ঘরের মেয়েকেই চায়'- এই স্লোগানের মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছতে চায়। বাংলার মানুষ তাঁর ঘরের মেয়েকেই গ্রহণ করবে। তৃণমূল বোঝাতে চাইছে বাংলার বাইরে থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব দেবে না মানুষ।
মোদী-শাহ-নাড্ডাদের বহিরাগত তকমা তৃণমূলের
বাংলার ভোটকে সামনে রেখে অমিত শাহ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডারা এ রাজ্যে পড়েই আছেন। তাঁরা এবার পাখির চোখ করেছে বাংলাকে। যে কোনও মূল্যে বাংলার ক্ষমতা চাই। তাই তৃণমূল ভেঙে ঘরের ছেলেদেরও তারা ভাঙিয়ে নিয়েছেন। আর এরই মধ্যে মোদী-শাহ-নাড্ডাদের বহিরাগত তকমা দিয়েছিল তৃণমূল।
‘বাংলার অগ্নিকন্যা’ এবার ‘বাংলার ঘরের মেয়ে’
তৃণমূলের সাফ কথা, বাংলাকে গুজরাত বানাতে দেব না। বাংলা দখল করতে দেব না বহিরাগতদের। বাংলার রাশ থাকবে ঘরের মেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। 'বাংলার অগ্নিকন্যা' তাই 'বাংলার মেয়ে' হয়ে এবার ভোটপ্রার্থী বাংলার মানুষের কাছে। তাঁর 'ঘরের মেয়ে' ইমেজকে ব্যবহার করেই এবার তৃণমূল ফায়দা লুটতে চাইছে।
ব্র্যান্ড মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে পিকে-স্ট্র্যাটেজি
একুশের লক্ষ্যে ব্র্যান্ড মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রশান্ত কিশোর তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব নেওয়ার পরই 'দিদিকে বলো', 'বাংলার গর্ব মমতা', 'দিদির দূত'- এমন নানা অভিযান-কর্মসূচি নিয়েছেন। এছাড়াও সরকারকে মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছেন 'দুয়ারে দুয়ারে সরকার' ও 'পাড়ায় পাড়ায় সমাধান' কর্মসূচিতে।
মমতা ‘বাংলার মেয়ে’ হিসেবে প্রতিভাত একুশের ভোটে
মোট কথা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ও ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে এবার নির্বাচনে জয় হাসিল করতে চাইছে তৃণমূল। 'বাংলার মেয়ে'কে সামনে রেখেই তাই যুদ্ধ জয়ের ঘূঁটি সাজাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোরের মতো ভোট কৌশলী ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচারকরা। বাংলার 'অগ্নিকন্যা' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'বাংলার গর্ব' রূপে প্রকাশ করার পর এবার 'বাংলার মেয়ে' হিসেবে প্রতিভাত করাই তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ-সংযুক্তিকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, নেতৃত্বের সলতে পাকাচ্ছে কলকাতা