মুকুল-শুভেন্দুদের বিরুদ্ধে মমতার লড়াইয়ে নেপথ্য-ভূমিকা পিকে'র, একুশের লড়াই নয়া কৌশলে
মুকুল-শুভেন্দুর বিরুদ্ধে মমতার লড়াইয়ে নেপথ্য-ভূমিকায় পিকে, একুশের লড়াই নয়া কৌশলে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশের লড়াই অনেক কঠিন। ২০১৬-য় তাঁকে লড়তে হয়েছিল চেনা শত্রুর বিরুদ্ধে। এবার লড়তে হবে অচেনা শত্রুর বিরুদ্ধে। ২০১৯-এ এই শত্রুর শক্তি দেখেছে তৃণমূল। কিন্তু এবার ঘরের ছেলে মুকুল ছাড়াও মমতাকে লড়তে হবে শুভেন্দু-রাজীবদের বিরুদ্ধে। সহায় শুধু ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। যিনি নয়া কৌশলে ফের মমতাকে ক্ষমতায় ফেরাতে সিদ্ধাহস্ত
মমতার ভাবমূর্তিকে জনসংযোগে ব্যবহার পিকের
প্রশান্ত কিশোর বাংলায় একুশের বিধানসভার নির্বাচনে তৃণমূলের দায়িত্ব নিয়েই মমতার ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে জনসংযোগের ক্ষেত্র তৈরি করেছিলেন। তৃণমূলের প্রচারের এমন এক মাধ্যম তিনি তৈরি করে দিয়েছিলেন, যার সুফল পাবেই তৃণমূল। সরাসরি বাংলার জনতার সঙ্গে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগাযোগ করে দিতে সমর্থ হয়েছিলেন।
স্বচ্ছ-অস্বচ্ছ নেতার প্রকারভেদ করতে সমর্থ পিকে
দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে 'কাট-মানি' ইস্যুকে সামনে এনেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল যে মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করেছে, তার আভাস পেয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন দলের সদস্যরা কাটমানি খাচ্ছে। তা নিয়ে বিক্ষোভে পড়েছিলেন অনেক নেতা। কিন্তু স্বচ্ছ-অস্বচ্ছ নেতার প্রকারভেদ করতে সম্ভবপর হয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর।
পিকের জন্য বাংলার জনতা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে
প্রশান্ত কিশোর তারপরই শুরু করেছিলেন প্রধান জনসংযোগ প্রচার 'দিদিকে বলো' । ২০১৯-এর ২৯ জুলাই এমন একটি কর্মসূচি তিনি ঘোষণা করেছিলেন যার মাধ্যমে বাংলার জনতা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে অভিযোগ নিয়ে হাজির হতে পেরেছেন সরাসরি। এর ফলে জনসংযোগ পৌঁছেছিল সর্বোচ্চ পর্যায়ে।
অনুপ্রেরণামূলক নেত্রী থেকে ‘শৃঙ্খলাপরায়ণ’ মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি সর্বদাই অনুপ্রেরণামূলক নেত্রী হিসাবে বিবেচিত হয়ে এসেছেন, হঠাৎ করেই তিনি 'শৃঙ্খলাবদ্ধ' হয়ে উঠলেন। কেন এই পরিবর্তন? সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'এটি তৃণমূলের আধুনিকীকরণ এবং আমরা আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে চাই। তাই অভিনব পদ্ধতিতে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াব, মানুষের সমস্যার সমাধান করব। সেটাই আমাদের ব্রত।'
অভিযান শুরুর পরই সোশ্যাল মিডিয়া ঝড় ওঠে
সরাসরি সাধারণ মানুষের উত্থাপিত বিষয়গুলিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, 'আমরা মানুষের সমস্যাগুলি সম্পর্কে জানতে এবং সরাসরি তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য এই প্রচারণা শুরু করছি। অভিযান শুরুর পরই সোশ্যাল মিডিয়া ঝড় উঠেছে। এক লক্ষ কল এসেছে এবং ওয়েবসাইটে প্রায় ৫০ হাজার অভিযোগ জমা হয়েছিল শুরুতেই।
জন-সংযোগে অভিনব প্রচারের আইডিয়া পিকের
একুশের নির্বাচনের প্রাক্কালে আবার একটি অভিযান শুরু হয়েছে বাংলায়। 'দিদির দূত' নামে প্রচার শুরু হয়েছে বাংলায়। মোবাইলে মোবাইলে ঘুরছে ওই নয়া অ্যাপ। সাত দিনেই রেকর্ড গড়ে ফেলে দিদির দূত। প্রশান্ত কিশোরের মস্তিস্কপ্রসূত এই প্রচারও জনসংযোগের নামান্তর মাত্র। মোট কথা নেতারা যখন দল ছাড়ছেন, জনতাকে ধরে রাখতেই অভিনব প্রচারের আইডিয়া বের করছেন ভোট কৌশলী পিকে।
অভিনব ভাবনায় পিকে বাংলার জনতার দরবারে
এই যে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার মানুষের যোগাযোগ, সেটাই তৃণমূলকে বিরাট মাইলেজ দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। মমতা-মুখকে ব্যবহার করেই প্রশান্ত কিশোর যাবতীয় পরিকল্পনা তৈরি করছেন। প্রথমে 'দিদিকে বলো', তারপর 'বাংলার গর্ব মমতা', আবার এখন 'দিদির দূত'। তারপর 'দুয়ারে সরকার', 'পাড়ায় পাড়ায় সমাধান'- এইসব অভিনব ভাবনায় প্রশান্ত কিশোর বাংলার জনতার কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূলকে।
নারায়ণস্বামীর পদত্যাগেও সরকার গড়ার দাবি জানাবে না বিজেপি, পুদুচেরির ভবিষ্যৎ ঘিরে ধোঁয়াশা