মুকুলের ভূমিকায় পিকে! ২০২১ নির্বাচনের আগে চুপিসারে বাড়ছে তৃণমূলের সংগঠন
মমতা বন্যোয়।পাধ্যায়ের দলে জন্মলগ্ন থেকে ২০ বছর সংগঠন সামলে এসেছেন সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায়। বিগত প্রায় তিন বছর তিনি নেই তৃণমূলের সঙ্গে।
মমতা বন্যোয়।পাধ্যায়ের দলে জন্মলগ্ন থেকে ২০ বছর সংগঠন সামলে এসেছেন সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায়। বিগত প্রায় তিন বছর তিনি নেই তৃণমূলের সঙ্গে। তাঁর অনুপস্থিতিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, সেটা ভরাট করার চেষ্টা করছেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর। শুধু ভোট-কৌশল বা প্রচার-পরিকল্পনাই নয়, তিনি সংগঠনও দেখছেন এখন থেকে।
মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পর...
মুকুল রায় ভোট পরিচালনার পাশাপাশি দলের সংগঠন দেখতেন বরাবর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফিরেও তাকাতে হত না দলের সংগঠনের দিকে। কিন্তু মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পর সেখানেই তৈরি হয় বিস্তর ফাঁক। তার প্রভাব পড়ে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে। তৃণমূল ধাক্কা খায় বিজেপির কাছে।
মুকুলের ভূমিকা পালন করছেন পিকে
লোকসভা নির্বাচনে আশাতীত ফল করতে না পেরেই প্রশান্ত কিশোরের শরণাপন্ন হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে ২০২১-এর লক্ষ্যে প্রচার পরিকল্পনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই প্রশান্ত কিশোর এখন থেকে দলের সংগঠনের দায়িত্বও নিয়েছেন। তাঁর টিমকে দিয়ে তিনি দলের ভিত মজবুত করছেন।
বিজেপিকে ধরাশায়ী করার পরিকল্পনা
তৃণমূল কংগ্রেস ২০২১-এর আগে বিজেপিকে ধরাশায়ী করার পরিকল্পনা করেছে প্রশান্ত কিশোরকে দিয়েই। ২০১৯-এর শেষে দায়িত্ব নিয়ে বিজেপিতে ভাঙন ধরিয়ে পাল্টা দিতে শুরু করেছিলেন তিনি। তৃণমূলকে শক্তিশালী করার প্রয়াস তিনি জারি রেখেছিলেন বিজেপিতে ধস নামিয়ে। এখন তিনি আরএসএসেও থাবা বসাচ্ছেন।
মুকুল-ত্রাস সামলাতে পিকের পন্থা
যখন তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন তৃণমূলের, তখন বাংলার শাসক দলের মনোবল ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল। প্রতিদিনই দফায় দফায় নেতা-কর্মীরা দল ছাড়ছেন। মুকুল রায় তখন ত্রাস সঞ্চার করেছেন তৃণমূল শিবিরে। গোটা তৃণমূলটাই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে, এমনই অবস্থা। সেই পরিস্থিতি থেকে তৃণমূলকে উদ্ধার করে পাল্টা বিজেপির রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন তিনি।
তৃণমূলের সংগঠন জোর মিশন একুশে
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশে জুলাইয়ের ভার্চুয়াল সমাবেশ থেকে ভুল করে দল ছাড়া নেতা-নেত্রীদের ফিরে আসার আহ্বান জানান। তারপরই প্রশান্ত কিশোর ঘোষণা করেন, তাঁর টিম তৃণমূলের সংগঠন জোরদার করতে ময়দানে নেমে কাজ করবে। বিরোধী দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকা নেতা-কর্মীদের তাঁর টিম বুঝিয়ে তৃণমূলে নিয়ে আসবে। সেই কাজটাই চুপিসারে করে চলেছে পিকের টিম।
বিজেপি-আরএসএসও ভাঙার খেলায় পিকে
২০২১-এর আগে বিজেপিকে ভাঙার পাশাপাশি বিজেপির প্রাণকেন্দ্র আরএসএসকে ভাঙতে সমর্থ হলে তৃণমূল লড়াইয়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে থাকবে। এর ফলে আসন্ন নির্বাচনের আগে পার্টির সংগঠনও বেশ মজবুত হবে। আর বিজেপিকেও প্রবল চাপের মধ্যে ফেলে দেওয়া যাবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই তিনি এগিয়ে চলেছে।
তৃণমূলের ঘর গড়তে চাইছেন পিকে
দার্জিলিংয়ে আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন ছেড়ে যাঁরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁরা সকলেই প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। প্রশান্ত কিশোর দেখছেন, তাঁদের তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি। প্রশান্ত কিশোর তাঁর টিমকে দিয়ে বিরোধীদের ভেঙে তৃণমূলের ঘর গড়তে চাইছেন।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে এগোচ্ছেন পিকে
এছাড়া তৃণমূলের রদবদলে কোন নেতাদের পদে আনা যাবে, কাকে পদাধিকার দিলে তৃণমূলের সংগঠন বাড়বে, মানুষ আস্থাশীল হবে, তা ঠিক করছেন প্রশান্ত কিশোর। না, নিছক মনগড়া নয়। একেবারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে সমীক্ষা চালিয়ে তিনি নেতাদের প্রতি মানুষের আস্থা মাপছেন, তারপরই রিপোর্ট তৈরি করে তিনি পাঠাচ্ছেন সুপ্রিমোর কাছে। সেই মোতাবেক রদবদল হচ্ছে তৃণমূলে।