প্রশান্ত কিশোর এক্স ফ্যাক্টর বাংলার নির্বাচনে, তৃণমূলে অস্বস্তি উড়িয়ে বাড়তি তাগিদ
প্রশান্ত কিশোর এক্স ফ্যাক্টর বাংলার নির্বাচনে, তৃণমূলে অস্বস্তি উড়িয়ে বাড়তি তাগিদ
প্রবীণ সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী রাজ্যসভা থেকে অভিনব উপা্য়ে পদত্যাগের পর তৃণমূল ছাড়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়ন্ত্রণে নেই। তৃণমূল এখন কর্পোরেট এজেন্সি দ্বারা চলছে। এহেন অভিযোগ উঠলেও ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর যে এবার একুশের নির্বাচনে এক্স ফ্যাক্টর তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তৃণমূলে প্রশান্ত কিশোর যখন শিখণ্ডি
তৃণমূলের ভোট কৌশলী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই প্রশান্ত কিশোর তাঁর এজেন্সি ইন্ডিয়ান পলিটিকাল অ্যাকশন কমিটি বা আই-প্যাককে ময়দানে নামিয়ে বাংলার ভোট-বাজারে জল মাপার কাজটা শুরু করে দেন। এরপর বেশ কয়েকজন অসন্তুষ্ট তৃণমূল নেতা প্রশান্ত কিশোরকে শিখণ্ডি খাঁড়া করে সরে দাঁড়ান।
প্রশান্ত কিশোর ফ্যাক্টরে যাঁরা তৃণমূলত্যাগী
কোচবিহারের মিহির গোস্বামী থেকে শুরু করে ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত-সহ অনেক তৃণমূল নেতা দল ছাড়ার জন্য প্রশান্ত কিশোরকে দায়ী করেন। শুভেন্দু অধিকারীও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের নাম জুড়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণ হিসেবে। তারপর তাঁকে নিশানা করতেও ছাড়েননি তিনি।
একটা অজুহাত তো খাঁড়া করতে হবে দলত্যাগের
তৃণমূল অবশ্য প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করে দিয়েছেন। তৃণমূলের দাবি, প্রশান্ত কিশোরকে বলির পাঁঠা করে বিজেপিতে যাওয়ার সোপান তৈরি করেছিলেন তাঁরা। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার, তখন কোনও একটা অজুহাত তো খাঁড়া করতে হবে। তাঁদের কাছে সহজ পন্থা হয়ে উঠেছিলেন প্রশান্ত কিশোর।
তৃণমূলের হারিয়ে যাওয়া জায়গা পুনরুদ্ধারে
প্রশান্ত কিশোর ২০১৯-এর জুন মাসে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কৌশলীর দায়িত্বে আসার পর নীতি, কৌশল ও সাংগঠনিক বিষয়ে গাইড করে চলেছেন। তৃণমূলের হারিয়ে যাওয়া জায়গা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করছেন। তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তৃণমূলের দিকে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার পক্ষে একটা বড় কারণ হয়ে উঠেছে।
মোদীকেও বিশাল মাইলেজ দিয়েছিলেন পিকে
প্রশান্ত কিশোর বা পিকে ভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর পরিচয় রেখেছেন ২০১৪-তেই। সেবার তিনি মোদীকে দিল্লির কুর্সিতে বসানোর মূল কারিগর হয়ে উঠেছিলেন। প্রশান্ত কিশোর ২০১২ সালের গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের নরেন্দ্র মোদীকে বিশাল মাইলেজ দিয়ে গিয়েছেন।
এক দশকেরও বেশি রাজনৈতিক পরামর্শদাতা
প্রশান্ত কিশোর ভারতের বুকে প্রায় এক দশকেরও বেশি রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করে চলেছেন। বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার পর তিনি কংগ্রেস, নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড, অন্ধ্রের জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং ২০২০ সালে দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রতি ক্ষেত্রেই তিনি সাফল্য পেয়েছেন। ব্যর্থতা শুধু ২০১৭ সালে কংগ্রেসের হয়ে উত্তরপ্রদেশে।
মোদী বনাম মমতার লড়াইয়ে পিকে বনাম শাহ
এবার তাঁর লড়াই বাংলায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের হয়ে ব্যাট ধরেছেন প্রশান্ত কিশোর। মোদী বনাম মমতার লড়াইয়ে তাঁর লড়াই একদিকে অমিত শাহের সঙ্গে আবার অন্য দিকে মুকুল রায়ের সঙ্গে। বিজেপির বেঙ্গল ইউনিটকে এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন অমিত শাহ। তাই তাঁকে হারানোর বাড়তি তাগিদ রয়েছে প্রশান্ত কিশোরের।
জোট-জটের মধ্যেও বদরুদ্দিনকে নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামছে কংগ্রেস