তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের পদ বদলে যাচ্ছে অজান্তেই, প্রশান্ত কিশোরের সামনেই বিতর্ক তুঙ্গে
নেতারা জানেন না, বদলে যাচ্ছে পদ। তৃণমূল কংগ্রেসে তা নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। পুরুলিয়ায় টিম পিকের বৈঠকে সেই বিতর্কের আঁচ গিয়ে পড়ল। এর ফলে দলের অভ্যন্তরে চোরাস্রোত বইতে শুরু করেছে। ভিতরে ভিতরে বাড়ছে ক্ষোভও। অভিযোগ, আমন্ত্রণপত্রে নেতাদের পদ বদলে দেওয়া হয়েছে। তা কেন হল, জানেন না কেউই।

অজান্তের অনেকের পদ বদলে গিয়েছে
পুরুলিয়া জেলা নেতৃ্ত্বের সঙ্গে বৈঠক ছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভোট-কৌশলী প্রশান্ত কিশোরও। আর দলের সাংগঠনিক বৈঠকে স্থানীয় নেতাদের যে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছিল, সেখানে অনেকের পদ বদলে গিয়েছিল। সাংগঠনিক পেদর পরিবর্তে উল্লেখ করা হয়েছিল সরকারি পদগুলি। তা নিয়েই বিতর্ক চরমে উঠেছে।

নামের পাশে নেই সাংগঠনিক পদ
পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। অথচ তাঁর নামের পাশে নেই সেই পদের উল্লেখ। সেখানে উল্লেখ রয়েছে মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। আবার সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামের পাশে উল্লেখ রয়েছে সভাধিপতি। সেখানে তাঁকে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদাধিকারী বলে উল্লেখ করা হয়নি।

নির্দল থেকে তৃণমূলে এসে তালিকায়
পুরুলিয়া পিএওসি হিসেবে নাম রয়েছে শান্তিরাম মাহাতো ঘনিষ্ঠ হেমন্ত রজকের। এই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন নির্দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া দেবেন্দ্র মাহাতো। তবে তাঁর সঙ্গে বিজেপি ছেড়ে আসা কারোরই নাম নেই ওই তালিকায়। আরও বহু নেতার পদ বদলে গিয়েছে অজান্তেই।

দলের অভ্যন্তরে সমালোচনার ঝড়
এই তালিকা ঘিরে দলের অভ্যন্তরে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। সোশাল সাইটেও সমালোচনা হচ্ছে। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায় ফেসবুকে লিখেছেন, কেউ কেউ দলটাকে পৈতৃক সম্পত্তি ভাবছে। তারা আসলে দলটাকে বিজেপির কাছে বিক্রি করে দিতে চাইছে। লোকসভায় হারের পরও তাদের লজ্জা হল না। কোন্দল চরমে উঠল পুরুলিয়ায়।

ভুলভ্রান্তি হয়েছে, সব ঠিক হয়ে যাবে
তবে আশ্বস্ত করেছেন জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছে, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তিনি বললেও দলের অন্দরে আচমকা জমাট বাঁধা অন্ধকার সরছে না। তাল কেটে গিয়েছে জেলা তৃণমূলের। পিকের বৈঠকের আগে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

আরও যেসব নাম-পদ নিয়ে বিতর্ক
নতুন করে জেলা কমিটি ঘোষণা হওয়ার আগে বাঘমুন্ডি ব্লক যুব সভাপতি শশীপ্রসাদ মাহাতের নাম নেই তালিকায়। তাঁকে যুবর জেলা সম্পাদক হিসেবে দেখানো হয়েছে। জেলা যুব সম্পাদক পগে রয়েছে সভাধিপতি সম্রাট বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। যুব সহ সভাধিপতি সৌমেন বেলথরিয়ার নাম নেই। ব্লক তৃণমূল সভাপতি হিসেবে দেখানো হয়নি মন্ত্রী সন্ধারানি টুডুকে।

ভুল-ভ্রান্তি দূর করে নতুন তালিকা
অভিযোগ, এই জেলায় দায়িত্বে থাকা নেতারা নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে কাজ করেছে। কেউ দলের কথা ভাবেনি। তৃণমূলের এহেন পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে পড়েছেন প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর টিমের সদস্যরা। জেলায় ‘দিদিকে বলো'র দায়িত্বপ্রাপ্ত গুরুপদ টুডু জানিয়েছেন, কারও নাম বাদ যাবে না। ভুল-ভ্রান্তি দূর করে নতুন তালিকা আসছে।
বসন্তের পথ আটকে তুষারে ঢাকল পাহাড়, তামপাত্রায় পতন সমতলেও