দুর্গা আরাধনায় কেটেছিল এমএ পরীক্ষার টেনশন, আর কি বললেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়
কীর্ণাহার। নামটা শুনলে আজও আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রণব মুখোপাধ্যায়। দেশের বাড়ির টানে আজও ছুটে আসেন তিনি। অশিতীপর এখন তিনি।
কীর্ণাহার। নামটা শুনলে আজও আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রণব মুখোপাধ্যায়। দেশের বাড়ির টানে আজও ছুটে আসেন তিনি। অশিতীপর এখন তিনি। কিন্তু, কীর্ণাহার আসতে বয়স বা বার্দ্ধক্যজনিত কোনও সমস্য়াকে পাত্তা দিতে ভালবাসেন না প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। বিশেষ করে দুর্গাপুজোর সময় কীর্ণাহারের বাড়িতে তাঁর আসা চাই।
এই দুর্গাপুজোয় কী ভাবে তিনি এমএ পরীক্ষার টেনশন দূর করেছিলেন তা নিজের মুখেই শুনিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তখন দ্বিতীয় এমএ-র পরীক্ষা দিচ্ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু, পরীক্ষার ঘোর টেনশন। মন ভালো নেই। সামনে দুর্গাপুজো। কীর্ণাহারের বাড়িতে যাবেন না বলেই মনস্থির করে ফেলেছেন। বরং ওই ক'দিন পড়়াশোনা নিয়েই থাকতে চাইছিলেন প্রণব মুখোপাধ্য়ায়। ছেলে আসবেন না শুনে যারপরনাই মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল প্রণব মুখোপাধ্য়ায়ের মা-এর। তিনি খবর পাঠালেন প্রণব মুখোপাধ্যায়কে যাতে তিনি পুজোর ক'টা দিন কীর্ণাহারে এসে কাটিয়ে যান। মা-এর আদেশ পেয়ে ছুটেছিলেন প্রণব। দুর্গাপুজোর কটা দিন তিনি কীর্ণাহারেই কাটান। উৎসবের আমেজে পরীক্ষার যাবতীয় টেনশন দূর হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
প্রতিবারের মতো এবারও কীর্ণাহারে হাজির হয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। এবার পুজোর শুরুর দিন থেকেই তিনি উপস্থিত। রীতি ও আচার মেনে প্রতিটি পুজো বিধিতেই অংশ নিয়েছেন তিনি। অঞ্জলিও দিয়েছেন তিনি।
১৯৬৯ সাল থেকে দিল্লিতে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কিন্তু দুর্গাপুজো আসলেই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঠিকানা হয়ে যায় বীরভূমের কীর্ণাহার। তবে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির এখনও আক্ষেপ সেপ্টেম্বরের শুরুতে অনেক সময় পুজোর নির্ঘণ্ট থাকায় পাঁচ থেকে ছয়বার তিনি কীর্ণাহারের দুর্গাপুজোয় যোগ দিতে পারেননি। একবার রাষ্ট্রপুঞ্জে তাঁকে প্রতিনিধি দল নিয়ে যেতে হয়েছিল, যার জন্য সেবার কীর্ণাহার আর আসা হয়নি তাঁর।
এখনও দুর্গাপুজোয় কীর্ণাহারে এলে চণ্ডীপাঠ করেন প্রণব মুখোপাধ্য়ায়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দুর্গামন্দিরেই বসে থেকে মাতৃ আরাধনায় মজে থাকেন তিনি। কীর্ণাহারের মানুষ পুজোর এই কটা দিন দেশের একসময়ের রাষ্ট্রপতিকে তাঁদের মাঝে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হন। প্রণব মুখোপাধ্য়ায় যে দেশজুড়ে এক সম্মানজনক নাম এমনটা তো নয় কীর্ণাহারের ছেলে তিনি। সুতরাং, তাঁকে নিয়ে গর্বের শেষ নেই এখানকার মানুষের। কীর্ণাহারের মানুষের এই ভালোবাসার কথা ভালোমতোই জানেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পুজোর কটা দিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দূর-দূরের গ্রাম থেকে বহু মানুষ ভিড় করেন কীর্ণাহারে মুখোপাধ্যায় বাড়়িতে।