মমতার ভূয়সী প্রশংসায় প্রণববাবু, প্রথম কর্মস্থলে এসে উসকে দিলেন বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর জল্পনা
রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মনে ছড়িয়ে দিয়ে গেলেন আকাশছোঁয়া স্বপ্নের কথা।
রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। সোমবার হাওড়ার আমতায় তাঁর প্রথম কর্মস্থল এম এন রায় ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যে খুব ভালো কাজ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ জটিল। সেখানে দীর্ঘ বাম শাসনের পর মন্ত্রিসভার দায়িত্ব নিয়ে তিনি রাজ্যের উন্নয়নে ব্রতী হয়েছেন। এবং সাফল্যের সঙ্গে তিনি দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
[আরও পড়ুন:প্রণববাবু 'ফিরলেন' তাঁর প্রথম কর্মস্থল আমতার স্কুলে, ফিরল ২২ বছর আগের স্মৃতি]
বিশাল জনসমর্থন ও মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের প্রভাবে দলকে শক্তিশালী করে তিনি রাজ্যের উন্নতিতে লড়াই করে যাচ্ছেন। এদিন এই স্কুল নিয়েও আকাশছোঁয়া প্রত্যাশার কথা বলে যান প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, এখনও কেউ বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হননি। কে বলতে পারে, এই স্কুলেরই কোন ছাত্র বা ছাত্রী সেই পদ অলঙ্কৃত করতে পারবেন না। সে জন্য উচ্চাশা রাখতে হবে। আশাই আর একটা সম্ভাবনার জন্ম দেয়। এ কথা ভুললে চলবে না।
উল্লেখ্য, এই স্কুলেই শিক্ষকতার চাকরি নিয়ে প্রথম কর্মজীবনে প্রবেশ করেছিলেন প্রণববাবু। দিনটা ছিল ১৯৫৭ সালের নভেম্বরের বিকেল। সেই স্মৃতি তিনি বর্তমান ও প্রাক্তন উপস্থিত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ভাগ করে নেন। আজও তিনি ভোলেনিন চক্রবর্তী বাড়ির কথা। তাঁর শিক্ষক জীবনে তিনি যে বাড়িতে কাটিয়ে গিয়েছিলেন। আজও ভোলেন তাঁর 'মা'য়ের হাতের রান্না, ডাল, পোস্ত আর মূলোশাকের কথা। আর ভোলেননি স্কুলকে। ভোলেননি তাঁর প্রিয় ছাত্রদেরও। তাইতো স্কুলের শতবর্ষপূর্তি উৎসবে এসেছিলেন। আবার একটা ডাক পেয়েই তিনি স্কুলের অনুষ্ঠানে চলে এলেন।
আর তারপর এসেছিলেন ১৯৯৫ সালের ২৫ শে ডিসেম্বর। তাজপুর মহেন্দ্রনাথ রায় ইনস্টিটিউশনের শতবর্ষপূর্তি উৎসবে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান। ২২ বছর পর আবার তিনি সেই স্কুলে এলেন। এখন তিনি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। এককথায় এলেন, দেখলেন আর জয় করে নিয়ে গেলেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে তাজপুরবাসীর মন।
শতবর্ষের গেট উদ্বোধন করলেন স্কুলে। সেইসঙ্গে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্র রায়ের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠলেন প্রাক্তন, বর্তমান ছাত্রছাত্রী সকলে। শিক্ষকরাও নিজেদের ধন্য মনে করছেন প্রণববাবুর প্রথম কর্মস্থল এই স্কুলে চাকরি করে। এদিন সময় অভাবে চক্রবর্তী বাড়িতে আর যেতে পারেননি তিনি। তবে স্কুলেই ওই বাড়ির প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিলিত হন। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রণববাবুর প্রথম ছাত্র চক্রবর্তী বাড়ির সদস্য চিত্তরঞ্জনবাবু। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক পুলক রায়, নির্মল মাজি, সমীর পাঁজা প্রমুখ।