মমতা 'শূদ্র', অবুঝ! 'বহিরাগত' আক্রমণের বদলে বাংলায় জাতপাতের রাজনীতি বিজেপির?
পশ্চিমবঙ্গে গত বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে 'বহিরাগত' তরজা নিয়ে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ। রাজনৈতিক ময়দানে চরম উত্তাপ ছড়িয়ে জেপি নাড্ডা, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহকে 'বহিরাগত' তকমা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'শূদ্র' বলে কটাক্ষ করেন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকর।

মমতা পাগল হয়ে গিয়েছেন
এদিন প্রজ্ঞা মমতাকে আক্রমণ করে বলেন, 'মমতা পাগল হয়ে গিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জয় নিশ্চিত। সেখানে হিন্দু রাজ কায়েম হবে।' এরপরই তিনি বলেন, 'ক্ষত্রিয়কে ক্ষত্রিয় বললে তাঁৎা রাগেন না, ব্রাহ্মণকে ব্রাহ্মণ বললেও তাঁরা রাগবেন না। বৈশ্যদের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য। তবে শূদ্রদের তাদের নাম ধরে ডাকলে তারা রেগে যায়। কারণ কী? তাদের মাথায় কিছু ঢোকে না।'

'নাড্ডা, চাড্ডা, গাড্ডা, ফাড্ডা' বিতর্ক
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাড্ডা, চাড্ডা, গাড্ডা, ফাড্ডা-র মতো শব্দ ব্যবহার করে ছন্দ মেলান। যা রাজনৈতিক মহলে সমালোচিত হয়। তৃণমূলের 'বহিরাগত' আক্রমণকে প্রতিহত করতে বিজেপি প্রশান্ত কিশোরকেও বহিরাগত বলে দাবি করেন। তবে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবে শূদ্র আখ্যা দিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ নজিরবিহীন।

বিজপির নজরে বাংলার উচ্চবর্ণের ভোটাররা
বাংলার ২৭ শতাংশ মুসলিম ভোটের বদলে বিজেপি চাইছে এরাজ্যের হিন্দু ভোটকে এক করতে। সেই লক্ষ্যে দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আনাগোনা বেড়েছে রাজ্যে। এদিকে হিন্দুদের এক করতে আদিবাসী এবং তপশিলি জাতিদের নিজেদের দিকে টানতে ব্যস্ত বিজেপি। এদিকে দক্ষিণবঙ্গের শহুরে এলাকা, বিশেষ করে কলকাতায় এখনও শিক্ষিত উচ্চবর্ণের মধ্যে সেরকম প্রভাব ফেলতে পারেনি বিজেপি। এবার কি বিজেপি সেদিকেই নজর দিচ্ছে?

ময়দানে আরএসএস
উল্লেখ্য, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতও কলকাতায় এসে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এছাড়া দক্ষিণ কলকাতাতে ধীরে ধীরে সংগঠন সম্প্রসারণ করার দিকে এগিয়েছে আরএসএস। এরই মধ্যে এদিন মমতাকে শূদ্র বলে কটাক্ষ করে নতুন বিতর্ক উস্কে দেওয়ার পাশাপাশি জন্ম দিয়েছেন এক নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত।

দক্ষিণবঙ্গে জমি শক্ত করতে মরিয়া বিজেপি
ইতিহাস বলে, স্বাধীনতার আগের শেষ দশ বছরে হিন্দু-মুসলমান সংঘাতের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল জাতপাতের রাজনীতি। এরপর থেকে সেভাবে জাতপাতের নিরিখে ভোট বিভাজন হয়নি রাজ্য রাজনীতিতে। তবে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়। এই পরিস্থিতিতে এখন বিজেপির পাখির চোখ শহুরে শিক্ষিত সমাজের ভোট। উত্তরবঙ্গে বিজেপির যতই প্রভাব বাড়ুক না কেন, তারাও জানেন যে দক্ষিণ বঙ্গে জমি শক্ত না করতে পারলে ভোটে জেতা কঠিন হবে।
প্রকাশ্যে কৃষক সংগঠনগুলির অন্তর্দ্বন্দ্ব! রাস্তার অবরোধ সরানো ঘিরে আন্দোলনে চিড়?