সিঙ্গুরের ছায়া ভাঙড়ে, পাওয়ার গ্রিড বন্ধে দক্ষিণবঙ্গে বিদ্যুৎ চিত্রে বদলের সম্ভাবনা বিশ বাঁও জলে
আবার সিঙ্গুরের মতো হাত কামড়াতে হবে না তো ভাঙড় নিয়ে। আরও একটা প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেল রাজ্যে। জমি আন্দোলনের থাবা আবারও গ্রাস করে নিল একটি উন্নয়ন ভাবনাকে।
কলকাতা, ১৯ জানুয়ারি : আবার সিঙ্গুরের মতো হাত কামড়াতে হবে না তো ভাঙড় নিয়ে। আরও একটা প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেল রাজ্যে। জমি আন্দোলনের থাবা আবারও গ্রাস করে নিল একটি উন্নয়ন ভাবনাকে। তার ফল তো ভোগ করতেই হবে রাজ্যকে। অদূর ভবিষ্যতেই এই ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের অভাব বোধ করবেন রাজ্যবাসী।[ভাঙড়ে যে গুজবের কারণে পাওয়ার গ্রিডের জমি নিয়ে আন্দোলনে গ্রামবাসীরা]
এখনই সেই আওয়াজ উঠে পড়েছে। ভাঙড়ে সাব স্টেশন হলে বদলে যেত দক্ষিণ বঙ্গের বিদ্যুৎ চিত্রটাই। বিশাল রাজস্ব লাভও হত সরকারের। রাজ্যের কোষাগার তাতে পরিপুষ্ট হত। কিন্তু আবার বাধ সাধল জমি আন্দোলন। নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের ছায়া নেমে এল ভাঙড়ের বুকে। আর সেই আন্দোলনের প্রকোপে একটা পরিকল্পনার সলিল সমাধি ঘটল।[ভাঙড়ের ঘটনা তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, দাবি বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার]
রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি, জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়। মানুষ না চাইলে কোনও প্রকল্প হবে না। সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেওয়া হবে মানুষের ইচ্ছাকে। তাই আন্দোলন সংঘটিত হতেই নবান্ন থেকে ঘোষণা করে দেওয়া হয় ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প হবে না। মানুষ যখন চাইবে না তখন কাজ বন্ধ। ব্যস, বন্ধ হয়ে গেল পাওয়ার গ্রিড।[ভাঙড়ের পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী, ভবানি ভবনে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক]
কিন্তু যদি এই পাওয়ার গ্রিড হত, তাহলে কী বিপুল পরিবর্তন আসতে পারত দক্ষিণবঙ্গে, তা একবার বিচার করে দেখবেন না। অবশ্যই দেখা উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাঙড়ে এই পাওয়ার গ্রিড হলে দক্ষিণবঙ্গের বিদ্যুৎ চিত্র আমূল বদলে যেত। লোডশেডিংয়ের প্রকোপ একেবারেই কমে যেত বাংলায়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে তা বেচতেও পারবে রাজ্য। কিন্তু ভাঙড়ের প্রকল্প বরবাদ হয়ে যাওয়ায় এখন সব বিশ বাঁও জলে।[কে চালাল গুলি? উর্দিই বা কার? ভাঙড়বাসীর ধন্দ কাটছে, শুরু রাজনৈতিক তরজা ]
বিশেষজ্ঞদের মতে ভাঙড়ে এই পাওয়ার গ্রিড তৈরি হলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষমতা বাড়বে তিন হাজার মেগাওয়াট। কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনায় এক হাজার ও বাকি রাজ্য দু'হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এখানে পাওয়ার গ্রিড হলে তা ফারাক্কা, গোকর্ণ, জিরাট ও সুভাষগ্রামের সঙ্গে আদানপ্রদান হত। ফলে বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে জোগানের ফারাক কমে আসত।[তবু মমতায় আস্থা, মুখ্যমন্ত্রীর পথ চেয়ে ভাঙড়বাসী]
ভাঙড়ে বিদ্যুৎ আসার কথা ছিল পূর্ণিয়া থেকে। এই পূর্ণিয়া ন্যাশনাল গ্রিডের অন্তর্গত। ফলে জাতীয় হারে বিদ্যুৎ কিনে তা বিক্রি করার সুযোগও পেত রাজ্য। ফলে ৩০০ কোটি টাকা কোষাগের আসত রাজ্যের।