করোনায় লকডাউনে জেরে জব্দ দূষণ-দানবও, কলকাতার বাতাসে ভাসছে পাখিদের কলতান
করোনার হানায় দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। থমকে গিয়েছে যানবাহন, থমকে গিয়েছে জীবনযাত্রা। ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মধ্যেও একটা ভালো খবর কিন্তু আছে। এই লকডাউনের জেরে বাতাসে দূষণ-দানব জব্দ হয়েছে।
করোনার হানায় দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। থমকে গিয়েছে যানবাহন, থমকে গিয়েছে জীবনযাত্রা। ভয়াবহ এই পরিস্থিতির মধ্যেও একটা ভালো খবর কিন্তু আছে। এই লকডাউনের জেরে বাতাসে দূষণ-দানব জব্দ হয়েছে। এক ধাক্কায় ৭ থেকে আট গুণ দূষণ কমে গিয়েছে। কলকাতার আকাশ হয়ে উঠেছে সুনির্মল।
স্বস্তির নিঃশ্বাস কলকাতার বাতাসে
রাস্তায় লোক কম, নেই যানবাহন। তাই দুষণও নেই। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার একটা সুযোগ পেয়েছে ব্যস্ত কলকাতা। এই সুযোগে হু-হু করে কমছে বাতাসে দূষণের মাত্রা। কলকাত তথা বাংলার আকাশে ফের দেখা যাচ্ছে পাখিদের মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াতে। যেন স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছে তারা।
পাখিদের ডাক শুনেছে প্রকৃতি
পাখিরা এতদিন অস্ফুট স্বরে বলত- দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর। সেই আওয়াজ যেন এতদিনে শুনতে পেয়েছে প্রকৃতি। খোলা আকাশে যেন অরণ্য ফিরে পেয়েছে পাখিরা। নগরের কোলাহল নেই, পাখিদের কলতানে আকাশ-বাতাস তাই নির্মল, পরিবেশ শান্ত-সুধীর।
সুনির্মল হয়ে উঠেছে কলকাতার আকাশ
পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, বাতাসে দূষণের মাত্রা সাত থেকে আটগুণ কমে গিয়েছে এই সাত-আট দিনে। ২৩ মার্চ লকডাউনের পর আটদিন কেটেছে। এই আটদিনে দূষণের মাত্রা নেমে গিয়েছে একেবারে নিচে। একটা পরিসংখ্যান দিলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। পরিবেশবিদরা কলকাতার সাত আটদিনের দূষণ চিত্রের তুলনা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন কীভাবে সুনির্মল হয়ে উঠেছে কলকাতার আকাশ।
ডানকুনির বাতাসে দূষণের মাত্রা
দুই জাতীয় সড়কের সংযোগস্থলে ডানকুনি রাস্তায় যেখানে স্বাভাবিক দিনে দূষণের মাত্রা থাকে ১৭৩ থেকে ২১০ মাইক্রোগ্রাম, সেখানে ২৫ মার্চ ছিল ৪৩ মাইক্রোগ্রাম। এই পরিসংখ্যান চার গুণ কম স্বাভাবিক দিনের তুলনায়। আর লকডাউনের সাতদিন পর অর্থাৎ ৩০ মার্চ দূষণের মাত্রা কমে মাত্র ২৪। যা আট গুণ কম।
কলকাতায় দূষণের মাত্রা
একইভাবে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে বাতাসে দূষণের মাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ২০০ থেকে ৩০-এ। আর ধর্মতলায় ২৫-এ। অর্থাৎ রাজ্যের সর্বত্রই দূষণ কমিয়ে দিয়েছে লকডাউন। বহুদিন পর মুক্ত বাতাসে ঘোরার স্বাদ পেয়েছে পশু-পাখিরা। এটাই একমাত্র লকডাউনের ভালো দিক। দূষণ-দানবকে জব্দ করে ছেড়েছে লকডাউন।