দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে যাদবপুরে উত্তরপত্র ফাঁসকাণ্ডে এফআইআর নিল পুলিশ
হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেল মারফত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের এক ছাত্রের দ্বিতীয় সেমিস্টারের উত্তরপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করার অভিযোগ ওঠে ওই বিভাগেরই এক গবেষকের বিরুদ্ধে।
যাদবপুরে উত্তরপত্র ফাঁসকাণ্ডে এবার নতুন মোড়। হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমেল মারফত গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের এক ছাত্রের দ্বিতীয় সেমিস্টারের উত্তরপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করার অভিযোগ ওঠে ওই বিভাগেরই এক গবেষকের বিরুদ্ধে। তারপরেই ওই রিসার্চ স্কলারকে বরখাস্তের দাবি করে প্রতিবাদে সরব হয় যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা।
সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তরফে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ওই গবেষকের ক্যাম্পাসে প্রবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ নিতেও অনুরোধ করা হয় যাদবপুর থানায়।
অন্যদিকে শুক্রবার রাতেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করে আক্রান্ত ছাত্র জয়দীপ দাস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের 'আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সদস্যরা যাদবপুর থানায় এফআইআর দায়ের করতে আসে। কিন্তু থানায় রাত্রিতে উচ্চপদস্থ কোনো আধিকারিক না থাকায় পরেরদিন সকালে আসতে বলা হয় তাদের।
আজ শনিবার ওই ছাত্র ও ইউনিয়নের তরফে থানায় এফআইআর করতে এলে ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়। উপস্থিত কর্মরত সাব-ইন্সপেক্টর জানান, "আমি এফআইআর নিতে পারব না, উপর মহলের নির্দেশ নেই।" এরপর কর্তব্যরত অফিসার ইনচার্জ পুলক কুমার দত্তের সাথে এই বিষয়ে তীব্র বাতানুবাদে জড়ায় আফসুর সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ ও আক্রান্ত ছাত্র জয়দীপ দাসে।
এই উত্তরপত্র ফাঁসের 'চক্রান্ত'টি কগনিজেবেল নাকি নন-কগনিজেবেল তা নিয়ে দেখা যায় ধোঁয়াশা। যদিও 'অজ্ঞাত কারণে' এই ঘটনার কিছুক্ষন পরেই ছাত্র সংসদ, আক্রান্ত ছাত্র, ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিকে মান্যতা দিয়ে এফআইআর দায়ের করে যাদবপুর থানার পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৩, ৪০৬ ও তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৬নং ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
অন্যদিকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে মঙ্গলবারই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত 'তদন্ত কমিটি' তাদের কাজ শুরু করতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে আগামী সেমিস্টার থেকেই সাংবাদিকতা বিভাগে স্বচ্ছ মূল্যায়নের জন্য ডিনের তত্ত্বাবধানে একটি 'নিয়ামক কমিটি' ও গঠন করতে চলেছে কর্তৃপক্ষ।