মোদীর সভায় দুর্ঘটনা ঘিরে বিপাকে বিজেপি, জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা পুলিশের
মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় শামিয়ানা ভেঙে পড়ার ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল পুলিশ। মামলা রুজু করা হল ডেকোরেটার্স সংস্থার বিরুদ্ধেও।
মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় শামিয়ানা ভেঙে পড়ার ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল পুলিশ। মামলা রুজু করা হল ডেকরেটার্স সংস্থার বিরুদ্ধেও। এই ঘটনায় আয়োজক ও মঞ্চ প্রস্তুতকারক সংস্থা কোনওমতেই দায় এড়াতে পারে না। তাই বিজেপি ও ডেকরেটার্সের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিন মেদিনীপুর জেলা পুলিশ বিজেপি ও ডেকরেটার্সদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আয়োজক ও মঞ্চ প্রস্তুতকারকদের গাফিলতির কারণেই বড় দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। মঙ্গলবার সকালেই ঘটনাস্থলে যান পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার। ঘটনাস্থলে যায় ফরেনসিক টিমও। এই দুর্ঘটনায় মোট ৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে।
বিজেপি এই ঘটনায় পাল্টা দিয়েছে পুলিশ ও রাজ্য সরকারকে। বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন ষড়যন্ত্র করে মানুষ মারতে চেয়েছিল। সেই কারণে নিরাপত্তা ও নজরদারিতে গুরুত্ব দেয়নি। প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিভিআইপির সভাতেও নিরাপত্তায় ফাঁক রয়ে গিয়েছিল। এসব হয়েছে পুলিশের গাফিলতিতেই।
উল্লেখ্য, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভায় দুর্ঘটনার দায় নেয় বিজেপি। খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানান, এই দায় তাঁদেরই, তাঁদের আরও সজাগ থাকা উচিত ছিল। রাজ্য সরকার বা তৃণমূলের তরফে কারও দিকে আঙুল না তুলে, আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল।
কিন্তু মোদীর সভার দুর্ঘটনা নিয়ে একদিন পরেই চাপান-উতোর শুরু হয়ে গেল। সম্মুখ সমরে যুযুধান দুই পক্ষ বিজেপি ও রাজ্য প্রশাসন। সোমবার রাতেই সভাস্থল সিল করে দেয় জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলাপ্রশাসনের তরফে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্ত যাচ্ছে সিআইডি টিমও।
এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ভিআইপি নিরাপত্তা বিষয়ক সচিব এসকে সিনহা এবং যুগ্ম সচিব আরতি ভাটনগর মেদিনীপুরে তদন্তে আসেন। সেখানে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও সভাস্থল ঘুরে দেখবে তাঁরা। আয়োজকদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে। অনুষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেকরেটর্স এবং পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন কেন্দ্রের পাঠানো আধিকারিকরা।
বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এদিন স্বীকার করে নেন কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তার কারণ রাজ্য প্রশাসন বিজেপির কোনও সভার অনুমতি দেয় না। না পুলিশ, না পিডব্লুডি- কেউই অনুমতি দেয়নি। তাঁরা লিখিত আবেদন করেও অনুমতি পায়নি। তাই বিনা অনুমতিতেই এই সভা ছিল। প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিভিআইপির সভা সত্ত্বেও পুলিশ যড়যন্ত্র করে নিরাপত্তা দেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সভা বানচাল করাই ছিল উদ্দেশ্য।
উল্লেখ্য, সোমবারের দুর্ঘটনায় সব মিলিয়ে ৯১ জন আহত হন। যাঁদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় আনা হয়েছে। মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা চলাকালীন ভেঙে পড়ে মঞ্চের শামিয়ানা। তাঁদের তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সভা শেষ করেই প্রধানমন্ত্রী যান আহতদের দেখতে। মেদিনীপুর হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে তিনি আহত কর্মী-সমর্থকদের আশ্বস্ত করেন।