পুলিশের প্রাণপণ বাধা, মাকড়ায় ত্রাণ নিয়ে ঢুকতে পারল না বিজেপি
মাকড়ায় সন্ত্রাসের পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। গ্রামের বাড়িগুলিতে খাবার নেই, পানীয় জল নেই। শিশুরা দুধ পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিজেপি নেতা তথাগত রায়ের নেতৃত্বে মাকড়ায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তিনটি গাড়িতে চাল, ডাল, সবজি, শিশুদের গুঁড়ো দুধ, কম্বল, ওষুধ ইত্যাদি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মাকড়ার কিছু আগে ব্রাহ্মণডিহি গ্রামে বিজেপি প্রতিনিধিদের আটকায় পুলিশ। বিজেপি নেতারা অনুরোধ করলেও পুলিশ রাস্তা ছাড়েনি।
পুলিশের সঙ্গে বচসার পর ক্ষুব্ধ তথাগতবাবু বলেন, "ওরা বলল, আমরা দল বেঁধে গ্রামে গেলে নাকি শান্তিভঙ্গ হবে। আমি বললাম, আমাদের তরফে তিনজন গিয়ে ত্রাণ বিলি করে আসবে। কিন্তু তাতেও পুলিশ রাজি হয়নি। অ্যাডিশনাল এসপি এসে পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে রইলেন। নিজে নড়লেন না, আমাদেরও নড়তে দিলেন না। পুলিশ উর্দি পরে তৃণমূল কংগ্রেসের গৃহভৃত্যের কাজ করছে।"
"পুলিশ উর্দি পরে তৃণমূল কংগ্রেসের গৃহভৃত্যের কাজ করছে",তোপ দাগলেন তথাগত
বিজেপি নেতাদের পুলিশ বাধা দিয়েছে, এই খবর পেয়ে ব্রাহ্মণডিহি ও আশপাশের গ্রাম থেকে ছুটে আসেন মানুষ। কয়েক মাস আগেও এই গ্রামগুলি ছিল তৃণমূল প্রভাবিত। এখন পুরোপুরি এরা বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। পুলিশও তৎপর হয় পাল্টা অ্যাকশনে। রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটতে পারে বুঝে বীরভূম জেলার বিজেপি সভাপতি দুধকুমার মণ্ডল এগিয়ে আসেন। তিনি হাতজোড় করে গ্রামবাসীদের শান্ত হওয়ার আবেদন জানান। দুধকুমারবাবুর আবেদনে সাড়া দিয়ে সংযত হন গ্রামের মানুষ। এর পর বিজেপি প্রতিনিধিরা ত্রাণবোঝাই গাড়ি ঘুরিয়ে কলকাতার দিকে রওনা হন।
এদিকে, বিজেপি প্রতিনিধিরা যখন ত্রাণ নিয়ে আসার পথে আটকে গিয়েছেন, তখনই বীরভূম জেলা প্রশাসনের কর্তারা তড়িঘড়ি মাকড়ায় চাল, ডাল বিলি করেছেন বলে খবর। বিজেপির পাল থেকে হাওয়া কাড়তে শাসক দলের নির্দেশে প্রশাসন এমনটা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, এ দিন সকালে মাকড়া গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করলে গ্রেফতার করা হয় লেখিকা বোলান গঙ্গোপাধ্যায়কে। পরে পাড়ুই থানার পুলিশ তাঁকে মুক্তি দেয়। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "গ্রামের আতঙ্কগ্রস্ত মানুষগুলোর সঙ্গে একটু কথা বলতে এসেছিলাম। আমার অপরাধ কী, সেটাই তো বুঝতে পারলাম না।"
দু'দিন আগেই বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকেও আটকেছিল পুলিশ। মুখতার আব্বাস নাকভি, কীর্তি আজাদ প্রমুখকে গ্রেফতার করেছিল পাড়ুই থানার পুলিশ।