হলদিয়ায় ২ মহিলাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ, পুলিশের জালে অভিযুক্ত
হলদিয়ায় ২ মহিলাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগ, পুলিশের জালে অভিযুক্ত
হলদিয়ার ঝিকুরখালি এলাকায় এক যুবতী ও তার মাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল । গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে হলদি নদীর তীরে দুজনের দেহ পুড়তে দেখে পুলিশের কাছে খবর দেন এলাকার লোকজন । পুলিশ এসে আগুন নিভিয়ে পুড়ে যাওয়া দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। তারপর মৃতদের চুল, কাপড়ের অংশ ও গহনা দেখে নিশ্চিত হয় যে এই দুজনেই মহিলা ।
এরপর তদন্ত করার জন্য একটি বিশেষ টিম তৈরি করা হয়। যাদের পুড়িয়ে মারা হয়েছিল তাদের পরিচয় জানা গিয়েছে । তাদের নাম রিয়া দে (২০) ও তার মা রমা দে (৪২) । তাদের বাড়ি কলকাতার কাছে নিউ বারাকপুর। রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল এই এলাকার শেখ সাদ্দাম হোসেন এর । সাদ্দাম তাদের এখানে ডেকে পাঠায় । তারপর পরিকল্পনা করে তাদের মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে পুড়িয়ে মারে । ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে এই দুজনেই জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল । এই ঘটনায় সাদ্দাম ও তার এক সঙ্গী মনজুর আলম মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । এই ঘটনায় আর কারা জড়িত তাদের খোঁজ চলছে, জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় ।
জানা গিয়েছে, যে সাদ্দাম হলদিয়া এলাকায় একজন ঠিকাদার । পুলিশের কাছে সে জানিয়েছে, ম্যাসাজ পার্লারে যাওয়ার সূত্রে তার সঙ্গে রিয়ার পরিচয় হয়। ফেসবুকে সেই আলাপ আরও বেশি হয়। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । কিন্তু সাদ্দাম হোসেন যে বিবাহিত তা রিয়াকে জানায়নি । রিয়া তাকে বিয়ের জন্য বললেও বারে বারে পিছিয়ে যায় সাদ্দাম। শেষ পর্যন্ত রিয়া জোর করলে তাকে হলদিয়া এলাকায় আসতে বলে সাদ্দাম । রিয়া তার মাকে নিয়ে আসে । তখনই সাদ্দাম তাদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে । ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে খাবারের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে তাদের দুই জনকে বেহুঁশ করা হয় । তার পর নদীর তীরে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ।
পুলিশ জানায় যে রিয়া ও তার মা রমা দে হয়ত জেনে গিয়েছিল যে সাদ্দাম বিবাহিত ও মিথ্যা পরিচয় ও সম্পর্কের কথা বলে রিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। তাই পরিকল্পনা করে তাদের এখানে ডেকে নিয়ে এসে এমন নৃশংস ভাবে পুড়িয়ে মারা হয়। এমন ভাবে খুন করার পিছনে কী রহস্য আছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ ।