রাস্তা-জল-বিদ্যুৎ কিচ্ছু নেই...তাই ভোটও নেই! ঝাড়গ্রামের রামচন্দ্রপুর গর্জে উঠল ক্ষোভে
তীব্র গরম এবং বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে যখন বুথে , লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা, সেখানে এদিন ভোট বয়কটের পথে হাঁটেন ঝাড়গ্রাম শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দুরের রামচন্দ্রপু
তীব্র গরম এবং বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে যখন বুথে , লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিলেন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা, সেখানে এদিন ভোট বয়কটের পথে হাঁটেন ঝাড়গ্রাম শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দুরের রামচন্দ্রপুর গ্রামের ভোটাররা।
রামচন্দ্রপুর গ্রামে রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি মাত্র বুথ। বুথ নম্বর ২২২/১৪৫। গ্রামে মোট ভোটার ৭৪০ জন। বেশির ভাগ মানুষই কৃষিজীবী ও দিনমজুর। আগেই তারা গ্রামে পোস্টার ও ব্যানারও ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন । যেখানে পরিষ্কার ভাবে লেখা হয়েছিল , রামচন্দ্রপুর গ্রামে কোনও উন্নয়ন না হওয়ায় ভোট বয়কট চলবে ।
তারপরেও শনিবার সেখানে গিয়েছিলেন ভোট কর্মীরা। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দারা বুথে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে তাদের বোঝাতে যান এলাকার বিডিও অভিগ্না চক্রবর্তী ও ঝাড়গ্রাম থানার আইসি জয়প্রকাশ পান্ডে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তাঁরা। বিডিও এলাকার উন্নয়ন করারও আশ্বাসও দেন। কিন্তু গ্রামবাসীরা তাঁদের অবস্থানে অনড় থাকেন । গ্রামের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় মাহাত, দিলীপ পাতর, সবিতা মাহাতরা বলেন, 'আমাদের এলাকায় পাকা রাস্তা নেই, বর্ষাকাল তো দূরের কথা এখনও ঠিক মতো চলা যায় না। বড়ো বড়ো গর্ত। পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। আলো নেই । আমরা ভোট দিয়ে কি করবো? আগে রাস্তার কাজ শুরু হোক তারপর ভোট দেবো।'
ঝাড়গ্রাম শহর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে রামচন্দ্রপুর গ্রাম। গ্রামে ঢুকতে গেলেই পায়ে পায়ে হোঁচট খেতে হয়। সেই কবে লাল মোরাম পড়েছিল রাস্তায় তা আর লোকের মনে নেই। এখন আর মোরামটাও নেই । আছে শুধু বড় বড় গর্ত। গোটা গ্রামে পানীয় জলের জন্য ভরসা একটি মাত্র পাতকুয়ো। প্রখর দাবদাহে তার জলও তলানিতে। রাস্তায় বিদ্যুতের খুঁটি আছে, কিন্তু পথ বাতি জ্বলে না। গ্রামের পিছনেই জঙ্গল। প্রায় রাতেই হাতি ঢুকে পড়ে গ্রামে। ভাঙা ঘরে ঘুম ভেঙে সিঁটিয়ে থাকেন বাসিন্দারা। এত দিন বারে বারে তার সুরাহা করতে প্রসাশনের কাছে বার বার দরবার করেছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু কিছুই পান নি তারা। তাই এবার তার প্রতিবাদে ভোট বয়কটের পথে হাটলেন রামচন্দ্রপুরের মানুষ। তারা পরিস্কার জানিয়ে দেন , আগে রাস্তার কাজ শুরু হোক, আগে জল মিলুক, আগে আলো জ্বলুক, তারপর তারা ভোটের কথা ভাববেন ।