পাড়ুইকাণ্ডের শুনানিতে ৩ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ, হাজিরা রদ করে ডিজির রিপোর্ট তলব
পাড়ুইকাণ্ডে রাজ্য় সরকারের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত। অনুব্রত মণ্ডল মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহধন্য হওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করতে ভয় পাচ্ছেন ডিজি। সাগর ঘোষ হত্যা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডলকে সঙ্গে নিয়ে জনসভা করায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ভর্ৎসনা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। পাড়ুউ কাণ্ডে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে কেন এখনও অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়নি তা জানার জন্য আজ ডিজিকে আদালতে হাজিরার আদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতির বক্তব্য অনুব্রত মণ্ডলকে পুলিস ভয়ে গ্রেফতার করতে পারছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ ধন্য। বিচারপতির এই ধরণের মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে রাজ্যের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
ডিজির রিপোর্ট পেলে তারপরই রাজ্য সরকারের আর্জির শুনানি হবে, জানিয়েছে আদালত
আপত্তিকর মন্তব্য করলেও অনুব্রত মণ্ডেলর বিরুদ্ধে কোনওরকম পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে অনুব্রচকে সাবধান পর্যন্ত করা হয়নি। একাধিকবার কলকাতা হাইকোর্টের বলা সত্ত্বেও পুলিস গ্রেফতার করেনি তাঁকে।
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদ ধন্য বলেই অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করতে পারছেন না। আদালত বারবার বলা সত্ত্বেও পুলিস গ্রেফতার করেনি অনুব্রত মণ্ডলকে। মমতা অনুব্রতর এক মঞ্চে থাকার প্রসঙ্গে বিচারপতি এদিন বলেন অভিযুক্তকে মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে করে নিয়ে ঘুরলে ডিজি তাকে গ্রেফতারের সাহস পাবেন কী করে?
শুধু আদালতেই ভর্ৎসনা নয়, লিখিত নির্দেশে বিচারপতি নজিরবিহীন মন্তব্য করেছেন। রাজ্যে কি আমরা নিরাপদ? কার্যত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ভূমিকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ডিজি কি আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন? তিনি লিখেছেন, অনুব্রতর মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর হাত থাকায় ডিজি তাঁকে ছুঁতে সাহস দেখাচ্ছেন আর সেই সুযোগটাই ভোগ করছেন অনুব্রত মণ্ডল।
লোকসভা ভোটের আগেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংঘাতে গিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়ছেন ভেবেই শেষে পিছিয়ে আসেন মমতা। আবার এই পাড়ুই কাণ্ডে বিচারপতির এমন নজিরবিহীন ভর্ৎসনায় বিপাকে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তাঁর সরকার। কিন্তু প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে যে সময় হাতে পাওয়া গিয়েছে তাতে অনেকটাই স্বস্তি পেলেন তৃণমূল নেত্রী। কিছু স্বস্তিতে অনুব্রতও।
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ডিজির হাজিরা রদ করে তার থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন। তার জন্য ৩ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। পাড়ুইকাণ্ডে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট ডিজিকে দিতে বলা হয়েছে।