মমতার ‘অনুগত’ মুকুলও পারেননি, অবলীলায় সেই কাজ করে দেখালেন ‘বাচ্চাছেলে’ পার্থ
তৃণমূলে একমাত্র নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাকি সবাই সৈনিক। গর্ব করে এই কথা বলেন তৃণমূলের মহাসচিব থেকে শুরু করে, রাজ্য সভাপতি, যুব সভাপতিরা। এতদিনে তা করে দেখালেন পার্থ চট্ট্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের কোর কমিটির বর্ধিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া, আর কারও পোস্টার-হোর্ডিং ব্যবহার করা যাবে না। তাঁদের দলে একমাত্র নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাকি সবাই সৈনিক। গর্ব করে এই কথা বলেন তৃণমূলের মহাসচিব থেকে শুরু করে, রাজ্য সভাপতি, যুব সভাপতিরা। কিন্তু তা কাজে কেউই করে দেখাতে পারেননি। এবার সেই কঠিন কাজটাই অবলীলায় করে ফেললেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্বয়ং।
[আরও পড়ুন:জনগণ তৃণমূল সরকারের অহংকার, বিধায়কদের ধমকে পঞ্চায়েতের আগে বার্তা মমতার]
গত ৩১ জানুয়ারি তিনি নিজে দলের বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন, সভা-সমাবেশে বা যেকোনও দলীয় অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না। শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে তৃণমূল স্তরের সকল নেতৃত্বকে এই নির্দেশ মেনে চলতে হবে। কিন্তু তারপরও সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিভিন্ন নেতা-নেত্রীদের পোস্টার-হোর্ডিংয়ে ছেয়েছিল শহর।
এবার দলীয় শৃঙ্খলার পাঠ দিতে নিজেই তা করে দেখালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থবাবু স্বয়ং এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর তিনিই দলের অনুষ্ঠানে নিজের পোস্টার খুলিয়ে সবক শেখালেন দলীয় নেতৃত্বকে। তাঁর এই অবিনব উদ্যোগে স্থাপন হল নয়া দৃষ্টান্ত। পার্থবাবু শুধু আনুগত্যের পরিচয়ই দিলেন না নেত্রীর প্রতি, তিনি বুঝিয়ে দিলেন দলীয় শৃঙ্খলাই সবার আগে।
এখনও শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তৃণমূলের মুখ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেক নেতামন্ত্রী। সেইসব কাট আউট সরানো হয়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সাইয়ের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে সল্টলেকে হাজির হয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দেখেন, তাঁর পোস্টারে ছেয়ে রয়েছে অনুষ্ঠান ক্ষেত্র। তৎক্ষণাৎ পার্থবাবু ডেকে পাঠান আয়োজকদের। তাঁর ছবি-সম্বলিত পোস্টার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর নির্দেশের পর তড়িঘড়ি সেইসব পোস্টার সরিয়ে নেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: রাজ্যের মহা ধামাকা 'অফার', প্রবীণদের অধিকার রক্ষায় কর ছাড় মমতার সরকারের]
পার্থবাবু নিজের ছবি দেওয়া পোস্টার না সরানো পর্যন্ত মঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারপর তিনি বক্তব্য রাখেন। এই ঘটনাকে শুধু দৃষ্টান্ত বলেই ব্যাখ্যা করতে চাইছে না রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তাঁদের মতে, এটি দলীর অনুশাসনের একটি পাঠও। সেক্ষেত্রেও এই ঘটনা দলের কাছে শিক্ষণীয় বিষয় বলে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা। তিনি নিজের হাতে পোস্টার খুলিয়ে এদিন গোটা দলকেই বার্তা দিলেন।
পার্থবাবু বুঝিয়ে দিলেন, শুধু মুখে নেত্রীকে মুখে এক বা অদ্বিতীয় বললে হবে না, তা করে দেখাতে হবে কাজে। তিনি যেমন বুঝিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের ক্যাপ্টেন ও কোচ একজনই, বাকি সবাই খেলোয়াড়। তেমনই সবাইকে তা অনুসরণ করতে হবে। শুধু মুখে আনুগত্য প্রকাশ করেন অনেকে। কাজে করেন না। একটা সময় মুকুল রায় একান্ত অনুগত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনিও এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে উঠতে পারেননি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজের পোস্টার-হোর্ডিং খুলিয়ে নয়া দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বুঝিয়ে দিলেন মুখে ও কাজে তিনি এক।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে বিজেপির টার্গেট অনুব্রত, দিলীপদের ভোকাল টনিক দিতে আসছেন অমিত]