পার্কস্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডের অভিযুক্তরা ফেসবুকে পোস্ট করছে জেলে বসেই?
কলকাতা, ২৩ মার্চ : ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে গরাদের পিছনে পাকর্স্ট্রিট গণধর্ষণ কাণ্ডের তিন অভিযুক্ত নাসির খান, রুমন খান এবং সুমিত বাজাজ। কিন্তু ২০১৪ সালের ডিসেম্বরেও আপডেট হয়েছে তাঁদের ফেসবুক প্রোফাইল। তবে কী জেলে বসেই চলছে ফেসবুক করা?
আরও পড়ুন : মারা গেলেন পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের পীড়িতা সুজেট জর্ডন, রেখে গেলেন শুধু লড়াইটা
অভিযুক্তদের প্রোফাইল অন্তত তেমনটাই বলছে। প্রোফাইল বলছে, মাঝে মধ্যেই চ্যাট করা হয় এই প্রোফাইলগুলি দিয়ে। ছবিতে লাইক, কমেন্টের মাধ্যমে সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ডভাবেই সক্রিয় এই প্রোফাইলগুলি। জেল কর্তৃপক্ষের মদতেই এসব চলছে বলে অনুমান একাংশের। জেল কর্তৃপক্ষ ঘটনা জানা সত্ত্বেও চোখে আঙুল দিয়ে রেখেছে।
এই প্রথমবার নয়, এর আগে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকাকালীন এই ত্রয়ী ফেসবুকের ব্যহার করত। ২০১৪ সালে জেল কর্তৃপক্ষ এই তিন অভিযুক্তর কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছিল। এরপর শাস্তিস্বরূপ তাদের অন্য জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তাতেও কাজ হয়নি বলেই মনে হচ্ছে।
রুমনের প্রোফাইলে কভার ফটো ১৯ মার্চ দুবার বদল করা হয়েছে। ছবি পাল্টানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যে ১৮টি লাইকও পড়েছে ছবিতে। নাসিরের প্রোফাইল বলছে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষবার প্রোফাইল ছবি ও কভার ফটো বদলিয়েছিল। এদিকে ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি সুমিত নিজের ফেসবুক বন্ধুদের গণতন্ত্র দিবেসর শুভেচ্ছাও জানান। সুমিতের প্রোফাইলে অবশ্য এমন একটি ছবিও রয়েছে যা কারাগারে বসেই নেওয়া হয়েছে।
জেল এডিজি অধীর শর্মার কথায়, জেলে বসে অভিযুক্তদের সেলফোন ব্যবহার বা ফেসবুকে চ্যাটের বিষয়ে আমাদের কাছে খবর নেই। তবে দমদম, আলিপুর ও প্রেসিডেন্সি এই তিন জেলে জ্যামার লাগানো রয়েছে। খুব শীঘ্রই এই ধরণের কার্যকলাপ বন্ধ করা যাবে।
কারাগার পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাসের সময়কালে প্রেসিডেন্সি জেলের বন্দীদের থেকে ১৪৬টি সেল ফোন ও সিম, আলিপুর জেল থেকে ৪৮টি ফোন এবং দমদম জেল থেকে ১৪০টি ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পার্কস্ট্রিটে চলন্ত গাড়িতে বন্দুকের নিশানায় রেখে গণর্ধষণ করা হয় সুজেট জর্ডনকে। এই ঘটনায় উত্তাল হল রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে নিজের পরিচয় প্রকাশ করেন সুজেট। চলতি বছর ১৩ মার্চ কলকাতার একটি হাসপাতালে এনসেফেলাইটিসে আক্রান্ত হয় মৃত্যু হয় সুজেটের। তবে পার্কস্ট্রিট ঘটনার ৩ বছর কেটে গেলেও এখনও সুজেটের অপরাধীরা আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়নি, মেলেনি শাস্তিও।