ফিরে এল নব্বইয়ের দশক! রাজ্যে পরিবর্তনের কি কোনও প্রয়োজন ছিল, ভোট-হিংসায় প্রশ্ন
পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যজুড়ে হিংসার ঘটনা কেড়ে নিয়েছে একাধিক প্রাণ। আর এই রাজনৈতিক হিংসায় মৃত্যুকে নিয়ে তৃণমূলের যে প্রতিক্রিয়া তা নিয়েই উঠে গেল পাল্টা প্রশ্ন। রাজনৈতিক মহলের বৃহৎ এক অংশের জিজ্ঞাস্য, পঞ্চায়েতে হিংসা নিয়ে এই যদি ব্যাখ্যা হবে তৃণমূল মন্ত্রী-সাংসদের, তবে কেন ২০১১ সালে পরিবর্তন হল? সেই পরিবর্তনের কী সত্যিই কোনও দরকার ছিল?

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ওব্রায়ান যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে সমর্থনযোগ্য নয়। পার্থ বলেছন, যা ঘটেছেন তা একেবারেই নগণ্য ঘটনা। আমাদেরও ৬ জন কর্মী মারা গিয়েছে। সারা রাজ্যে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তা অন্য নির্বাচনের নিরিখে যৎসামান্য।
একই কথার পুনরাবৃত্তি করে সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়ানের একটি টুইটও করেন। তাঁর টুইট বুঝিয়ে দিয়েছে, রাজনৈতিক হত্যাকে তিনি প্রকারান্তরে সমর্থন করছেন। সেই কারণের ডেরেকের টুইট পোস্টের পরই রিটুইটে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অনেকেই। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
ডেরেক এদিন টুইট করেন, আগের সমস্ত পঞ্চায়েত ভোটে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার নিরিখে এবার মৃত্যু সংখ্যা নগণ্য। তিনি টুইটারে লেখেন- এ রাজ্যের হিংসার ইতিহাস নিয়ে নতুন জন্ম নেওয়া রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে আমি কয়েকটি প্রশ্ন রাখছি। শুধু নব্বইয়ের দশকে বাম আমলে ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৩ সালে রাজ্যে মারা গিয়েছেন ৪০ জন। সেই তুলনায় এবারের ভোটে ডজন খানেক লোক মারা গিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন শতাংশের বিচারে ৫৮ হাজার বুথের নিরিখে সংখ্যাটা কত।
ডেরেকের এই টুইট ভালো চোখে নেননি তাঁরই গুণমুগ্ধ একটা অংশ। সোশাল মিডিয়ায় তাঁরাই ডেরেকের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁদের বক্তব্যের সারবস্ত এটাই যে, তাঁরা বিশ্বাস করতে পারছেন না ডেরেক ওব্রায়ানের মতো একজন শ্রদ্ধাশীল মানুষ এই টুইট করতে পারেন। ডেরেকের মতো মানুষের কাছ থেকে তাঁরা এটা আশা করেননি।
একইভাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যাও সমালোচিত হয়েছে। সমালোচিত হয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে শুরু করে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ-সহ অনেকেই। এভাবে রাজনৈতিক হিংসার আবহে পঞ্চায়েত ভোট কেউ চাননি। কেন এক দফায় গোটা রাজ্যের ভোট করে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হল, তা নিয়েই আঙুল তুলছে রাজনৈতিক মহল, আঙুল তুলছেন বিরোধীরাও।
[আরও পড়ুন: লাল গোলাপের বার্তা তৃণমূলের কেষ্টর, পঞ্চায়েত ভোট মিটলেই বিলোবেন উন্নয়নের লিফলেটও]