For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

শতাব্দীর যাবতীয় পরিকল্পনা রামপুরহাটকে ঘিরেই, সিউড়িতে ছোঁয়া লাগেনি উন্নয়নের

সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন এলাকা উন্নয়নের। কিন্তু বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি একাংশের উন্নয়ন করতেই ব্যস্ত থাকেন, তাঁর সংসদ এলাকার অন্য অংশ ডুবে থাকে অন্ধকারে।

  • By Sanjay
  • |
Google Oneindia Bengali News

দিদির উন্নয়নের সঙ্গী হতে অভিনয় জীবনে ইতি টেনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মানুষের সেবায়। মানুষের পাশে থাকতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে পাঠিয়েছিলেন বীরভূমে। বীরভূমের সাংসদ হয়ে শতাব্দী রায় সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন এলাকা উন্নয়নের। কিন্তু বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি একাংশের উন্নয়ন করতেই ব্যস্ত থাকেন, তাঁর সংসদ এলাকার অন্য অংশ ডুবে থাকে অন্ধকারে।

এরই মধ্যে ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে তাঁর একটি মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তিনি বলে বসেন, 'যে এলাকার মানুষ আমাদের বেশি ভোট দেবেন, সেই এলাকার উন্নয়ন আগে হবে। যে এলাকা আমাদের কম ভোট দেবেন তাঁদের এলাকায় পরে উন্নয়ন হবে। এলকার উন্নয়ন চাইলে জোড়া ফুলে বেশি করে ভোট দিন।' প্রচারে বেরিয়ে অদ্ভুত এই উন্নয়নের ফরমান বুমেরাং হয়ে যায়। ভোট পাওয়ার জন্য উন্নয়নের শর্তকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা। এখনও সেই বিতর্ক থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেননি তিনি। দলের অন্দরেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশেষ এলাকা বেছে নিয়েই উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করেন সাংসদ।

একাংশে উন্নয়ন হলেও একাংশ ডুবে রয়েছে ঘোর অন্ধকারে

সাংসদ হওয়ার পর কী কী কাজ করেছেন?

  • মামুদপুরে শাল নদীর উপর ভাসাপোল তৈরি হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হত মানুষকে। এলাকার মানুষের চার দশকের দাবি পূরণ করেছেন সাংসদ। সাংসদের এলাকা উন্নয়নের তহবিলের টাকায় তৈরি ওই ভাসাপোলই এখন যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হয়েছে।
  • বিশালপুর থেকে পিরিজপুর যাওয়ার পথে সেচ খালের উপরও পাকা ব্রিজের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল মানুষের। সেই দাবি মেনেও ব্রিজ নির্মাণের সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে সাংসদ কোটায়।
  • দুবরাজপুরে তিনটি সেতু নির্মাণের দাবিও ছিল এলাকাবাসীর। অগ্রাধিকার দিয়ে সেই কাজ তালিকাভুক্ত করিয়েছেন সাংসদ।
  • রামপুরহাটের গান্ধী ময়দানে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই প্রকল্পের শিলান্যাসও হয়ে গিয়েছে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এই শিলান্যাস করেন।
  • এছাড়া এই স্টেডিয়াম সংলগ্ন একটি মাল্টিজিম করার করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে সাংসদ কোটায়। একইসঙ্গে সেটিরও শিলান্যাস হয়েছে। রাজ্যে খেলাধূলা উন্নয়নের জন্য জেলাগুলির খেলার মানোন্নয়ন জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করে যান।
  • খেলার মাঠের উন্নয়নেও জোর দেওয়া হয়েছে। মাঠগুলিতে মাটি ফেলে উঁচু করা হচ্ছে। সাংসদের পাশাপাশি সিএবি-র পক্ষ থেকেও ময়দান উন্নয়নে সাহায্যের আশ্বাস দেন সৌরভ।
  • তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া সাংসদ কোটায়।
  • সাঁইথিয়া পুরসভাকে সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছেন শতাব্দী রায়। নিজেই শহরের রাস্তায় চালিয়ে এই অ্যাম্বুল্যান্সটি উদ্বোধন করেন।
  • পানীয় জল বহনের জন্য ট্রেলার ও ট্র্যাঙ্ক বিতরণ করা হয়। সংসদ তহবিলের টাকায় এই ট্রেলার ও ট্র্যাঙ্ক বিতরণ করা হয়। দুবরাজপুর ও রাজনগর এলাকার ১২টি পঞ্চায়েতে ট্রেলার ও ট্র্যাঙ্ক দেওয়া হয়েছে। এক-একটিতে বরাদ্দ ৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা।
  • সন্ধ্যা নামলেই মুরারইয়ের রাজগ্রামের বাজার মুখ ঢাকতো অন্ধকারে। শুরু হল নাগরিক ভোগান্তি। সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য বাড়ত। এই অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পথবাতি লাগানো হয় সাংসদ শতাব্দী রায়ের উদ্যোগে। এলাকা মানুষের দাবি মেনে তিনি ১৮ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা ব্যায়ে পূর্ব ও পশ্চিম বাজারে পথবাতির ব্যবস্থা করেন।
  • পথবাতির উদ্বোধন করে সাংসদ শতাব্দী রায় রাজগ্রামের অন্যান্য এলাকাগুলিতেও স্ট্রিট লাইট লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।
  • গত বছর পর্যন্ত এলাকায় মোট ৫০টি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছেন সাংসদ।
  • মাইনোরিটি সেক্টারাল ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টে এলাকার সংখ্যালঘুদের জন্য পলিটেকনিক করেছেন।
  • এছাড়া পানীয় জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থাতেও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন সাংসদ।
  • স্কুলঘর, গ্রন্থাগার নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করেছেন সাংসদ কোটার টাকা।
  • সাংসদ তহবিলের টাকা কমিউনিটি হল নির্মাণে বরাদ্দ করেছেন শতাব্দী রায়।

কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে?

  • খরাপ্রবণ এলাকা বীরভূম। সেখানে গভীর নলকূপ গড়ে তোলা হয়নি পর্যাপ্ত। বড় জলপ্রকল্প গড়ে তোলা দরকার। কিন্তু তেমন কোনও পরিকল্পনা সাংসদের নেই। শুধু রাজ্য সরকারের উপর দায় চাপিয়ে সাংসদ দায় এড়াতে পারেন না।
  • শুধু খরাপ্রবণই নয়, বীরভূমের একাংশ বন্যাপ্রবণও। এই সাংসদ ক্ষেত্রের নলহাটি এলাকা দিয়ে বয়ে চলেছে ব্রাহ্মণী নদী। প্রতি বৎসর বন্যায় ভাসিয়ে দেয় এলাকাকে। একইভ্ববে ময়ূরাক্ষী নদীর বাঁধ ছাপিয়ে বানভাসি অবস্থা হয় এলাকায়। কিন্তু সাংসদ এই আট বছরেও বন্যা প্রতিরোধের কোনও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে পারেননি। এ নিয়ে কোনও ভাবনাই নেই সাংসদের।
  • এলাকায় গরিব মানুষের বাস। অনেকেই নির্ভরশীল একশো দিনের কাজের উপর। কেন্দ্র একশো দিনের কাজে বেড়ি পড়িয়ে দিয়েছে। এলাকার মানুষের কর্ম সুনিশ্চিত করার কোনও প্রয়াস চোখে পড়েনি।
  • মানুষের কর্মসংস্থানের কোনও স্থায়ী বন্দোবস্ত হয়নি। সাংসদেরও একটা দায়িত্ব থেকেই যায়।
  • রাস্তাঘাটের কোনও উন্নয়ন হয়নি। কোনও ওভারব্রিজ কিংবা উড়ালপুল নেই এলাকায়। নিত্য যানজট লেগেই রয়েছে। যানজটমুক্ত শহর গড়ে তোলার কোনো পরিকল্পনা চোখে পড়েনি।
  • প্রান্তিক থেকে সিউড়ি পর্যন্ত রেল লাইন তৈরির প্রস্তাব ছিল। কিন্তু সেই কাজ এতটুকু এগোয়নি। এই রেল লাইন সম্প্রসারণে সাংসদের একটা বড় ভূমিকা থাকে। সেই ভূমিকায় দেখা যায়নি বীরভূমের সাংসদকে।
  • এলাকায় রবীন্দ্র সদন দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। রবীন্দ্র সদনের আধুনিকীকরণের প্রয়োজন। সেখানেও উদ্যোগহীনতাই প্রকট হয়েছে।
  • সিউড়িতে নতুন কমিউনিটি হল স্থাপনের প্রয়োজন। এ ব্যাপারেও সাংসদের ভূমিকা বা তাঁর সাসংদ কোটার টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন। কিন্তু সিউড়ির উন্নয়ন হয়নি সেভাবে। সিউড়িকে ব্রাত্য রেখে দেওয়া হয়েছে দিনের পর দিন।
  • সাংস্কৃতিক মঞ্চ গড়ে তোলার পিছনেও সাংসদের উদ্যোগ চোখে পড়েনি। সংস্কার মূলক কোনও কাজই সে অর্থে হয়নি এলাকায়। সেদিকগুলো আরও গুরুত্ব দেওয়ার দরকার ছিল বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

বিরোধীরা কী বলছেন?


বিরোধীদের কথায়, তিনি হয়তো কিছু কিছু কাজ করেছেন। কিন্তু রাজনৈতিক চরিত্র হয়ে উঠতে পারেননি। সাড়ে সাত-আট বছর সাংসদ থাকার পরও এখনও অভিনেত্রীই রয়ে গিয়েছেন। তাই তিনি এলেই তাঁকে দেখতে ভিড় হয়। তাঁর মধ্যে সে অর্থে কোনও নেতৃত্ব গুণও চোখে পড়েনি। তাই তাঁকে অন্য নেতার মুখাপেক্ষী থাকতে হয়। তাঁর দলেরই অনেকে অভিযোগ করেন, উনি বীরভূমের একটা অংশের সাংসদ হয়েই রয়ে গিয়েছেন। তাঁর যত কর্মকাণ্ড রামপুরহাটকে ঘিরে। সিউড়ি এলাকায় তাঁর নাকি কোনও অফিসও নেই। এমন কথা প্রচলিত রয়েছে তাঁর সাংসদ এলাকায়।

কংগ্রেস-সিপিএমের অভিযোগ, শতাব্দী রায়ের সাংসদ এলাকায় ঘুরলেও তেমন উন্নয়নমূলক কাজ চোখে পড়বে না। কোনও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। কখনও এলাকার সমস্যা নিয়ে তাঁকে সংসদে সরব হতেও দেখা যায়নি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানস হাঁসদার কথায়, এলাকার জন্য কোনও বড় প্রকল্প কেন্দ্রের কাছ থেকে ছিনিয়েও আনতে পারেননি অভিনেত্রী সাংসদ। সাংসদ কোটার টাকা তিনি কোন কোন খাতে খরচ করলেন বা আদৌ খরচ করতে পারলেন কি না সেটাই সংসদের একমাত্র কাজ নয়।

সাংসদ কী বলছেন?

আমি চেয়েছি সাংসদ কোটার টাকায় যথাসাধ্য এলাকার উন্নয়ন করতে। রাজনীতিই এখন আমার সর্বক্ষণের কাজ। মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছি। দিদি আমাকে সেই সুযোগ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ মতোই এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। বরাদ্দের বহু কাজের ইউসি না মেলায় সরব হয়েছি নতুন কাজ করার জন্যই। বিরোধীরা অনেক কথা বলবেন, কিন্তু উন্নয়ন দিয়েই সেই সমালোচনার জবাব দেবো আমি। আমর নেত্রীর কাছে আমি সেই শিক্ষাই পেয়েছি। মানুষের দাবি মেনে কাজ করাই আমার এক ও একমাত্র লক্ষ্য।

English summary
The development in a section, the other part is immersed in the dark
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X