জৈব চাষে উৎসাহ বাড়ছে উত্তর দিনাজপুরে
ভারতবর্ষের অন্যতম ধান উৎপাদিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী ধানের উৎপাদন বাড়াতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে।
ভারতবর্ষের অন্যতম ধান উৎপাদিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী ধানের উৎপাদন বাড়াতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে। যা মানুষের শরীরে বিষের সমান কাজ করছে। শরীরে বাসা বাঁধছে দুরারোগ্য ক্যানসার থেকে সুগার, ব্লাড প্রেশার। এমনকী বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলস্তর নেমে যাওয়ার অন্যতম কারণ রাসায়নিকের ব্যবহারের ফলে। আর তা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে পারে চাষে জৈব সারের ব্যবহার। আর এই কাজটাই করে দেখাচ্ছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার বেশকিছু চাষীরা।
নিজেদের জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে ৬০ রকম প্রজাতির ধান ফলিয়ে নজির গড়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতের ভট্টদিঘির চাষীরা।
পরিবেশ বান্ধব চাষ অর্থাৎ সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার চাষিরা। গোচনা, গোবর, গাছের পাতা পচিয়ে সেই সার দিয়ে ব্যবহার করে।
প্রায় ষাঠ রকমের ধান চাষ করে প্রচুর ফলনের নজির সৃষ্টি করেছেন এই কৃষকেরা। মূলত ভট্টদিঘিতে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে এই জৈব পদ্ধতিতে চাষ করার পাশাপাশি ভরতপুর, নয়াপাড়া, সাহাপুর, বিন্দোল, বুড়িডাঙ্গী, শীজগ্রাম এলাকাতেও সম্পূর্ণ রাসায়নিক বিহীন ভাবে ধান চাষ করা হয়। গোবিন্দভোগ, রাধাতিলক, তুলাইপঞ্জি, পারিজাত, তুলসীমুকুল, কেরালা সুন্দরী, কালো জিরা, জয় প্রকাশ, লাল বাসমতী, বহুরূপী, মনিপুরী চখাও, যশোয়া সহ বিভিন্ন প্রকারের ধান চাষ করা হয়ে থাকে।
মূলত দুরারোগ্য ব্যধীর কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। রাসায়নিক সার থেকে বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলস্তর নেমে যাওয়ার পিছনেও পরোক্ষভাবে প্রভাব রয়েছে রাসায়নিক সারের। এমনটাই দাবি করেছেন কৃষক টিপু মন্ডল। তিনি বলেন, দীর্ঘ দশ বছর ধরে এই জৈব চাষের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। তাঁদের লক্ষ্য হল সম্পূর্ণ রাসায়নিক সার বাদ দিয়ে শুধুমাত্র জৈব সার প্রয়োগ করে সব ধরনের ফলন করা।
উল্লেখ্য মালদা জেলার বামনগোলা ব্লক থেকে প্রায় ৪০ জন চাষি এই জৈব পদ্ধতিতে কীভাবে ধান চাষ করা হবেতার পদ্ধতি শিখেছেন। মানবেন্দ্র কুমার সাহা বলেন, এই পরিবেশ বান্ধব চাষ দেখার পর এই চাষ শেখার জন্য মালদা জেলা থেকে এসেছেন এক ব্যক্তি। তিনি নিজেদের এলাকায় এই পদ্ধতিতে চাষ করে পরিবেশ ও মানবজাতি উভয়কেই বাঁচানোর চেষ্টা করার কথা জানিয়েছেন।