রণক্ষেত্র মগরাহাট, পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর, গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জনের মৃত্যু, দেখুন ভিডিও
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এবার সংঘর্ষ মগরাহাটে। এই ঘটনায় এক জনের গুলি লেগে মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাওয়া পুলিশ আক্রান্ত হয়। তিনটি পুলিস ভ্যান ভাঙচুর করা হয়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের মার খাওয়ার ছবিটা সামনে এসেছে। বহু স্থানেই মারমুখী রাজনৈতিক দলের ক্য়াডারদের হাতে বেমাক্কা মার খেয়েছেন বহু পুলিশ। পুরুলিয়াতে একটি বুথে মারমুখী ক্যাডারদের দেখে ঘরের এককোণে ঢুকে পড়েছিলেন এক পুলিশকর্মী। সেই ঘটনার স্মৃতি এখনও লোপ পায়নি, অথচ তারমধ্যে ঘটে গেল আরও এক ভয়ানক ঘটনা। যাতে পুলিশ শুধু আক্রান্তই হয়নি, সেইসঙ্গে তিনটি ভ্যান ভাঙচুর হয়েছে। এই ঘটনায় গুলি লেগে এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে।
জানা গিয়েছ, মগরাহাটের উত্তর জুগদিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কর্মী জাকির গায়েন ও তার ছেলে বাপ্পা গায়েন তাদের দলবল নিয়ে জোট প্রার্থী ও সমর্থকদের উপরে হামলা চালায়। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত ছিল। অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কর্মী জাকির ও তার ছেলে বাপ্পা জোট প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্যও চাপ দিয়ে আসছিল। পঞ্চায়েত ভোটের পরের দিন থেকে এলাকায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ জাকির গায়েন ও তার ছেলে উত্তর জুগদিয়ার জোট প্রার্থী শাহিনু মোল্লারই ভাই-কে দা দিয়ে কোপায়। শাহিনুরের বাড়িতে ঢুকে তাঁর বাবা ও মা-কে মারধর করার পাশাপাশি ভাঙচুরও চলে। এরপর কোনওমতে শাহিনুরের বাড়ি থেকে ফোন করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। মগরাহাট থানা থেকে ৩ গাড়ি ভর্তি পুলিশ ঘটনাস্থলের উদ্দেশে যায়। অভিযোগ পুলিশকে ঘটনাস্থলে যেতে না দিয়ে আটকে রাখেন স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি ইউনুস মোল্লা। ইতিমধ্যে নতুন করে হামলা শুরু হয়। সেইসঙ্গে চলতে থাকে বোমাবাজি ও গুলি। জাকির ও বাপ্পার দলের এই তাণ্ডবে এক সাধারণ মানুষ মণিরুল গাজি গুরুতর জখম হন। তাঁর গুলি লাগে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন আহত হন। স্থানীয় পদ্মপুকুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মণিরুলকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করতেই তাদের উপর হামলা হয়। সেইসঙ্গে পুলিশের তিনটি গাড়িতে ভাঙচুর চলে। ধস্তাধস্তিতে মগরাহাট থানার ওসি-র জামা ছিড়ে যায়। বেধড়ক মার খান বাকি পুলিশকর্মীরাও। এরমধ্যে বোমা মারতে মারতে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় জাকির গায়েয়ন ও বাপ্পা গায়েন। জাকির গায়েন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নমিতা সাহার ঘণিষ্ঠ। নমিতা সাহার মদতেই জোটের কর্মী ও সমর্থকদের উপরে হামলা হয় বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন। আপাতত পলাতক জাকির গায়েন, বাপ্পা গায়েন-সহ বাকি অভিযুক্তরা।