সাপের কামড়ের পর বুজরুকিতে ভরসা রেখে বাড়িতেই ঝাড়ফুক, প্রাণ গেল শিশুকন্যার
শিশুকে আগলে রেখে ওঝার ঝাড়ফুঁক, সাপে কেটেছে কন্যাসন্তানকে। বহু চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি কন্যাসন্তানকে। হাসপাতাল নিয়ে গেলে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিতসকেরা।
শিশুকে আগলে রেখে ওঝার ঝাড়ফুঁক, সাপে কেটেছে কন্যাসন্তানকে। বহু চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি কন্যাসন্তানকে। হাসপাতাল নিয়ে গেলে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিতসকেরা। কিন্তু এরপরেও ঘরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মনসার মন্দিরের চাতালে, কলা পাতার উপর শুইয়ে রাখা হল মৃত শিশুকে। কিছুক্ষন পরেই এল ওঝা। শুরু হল কয়েক ঘন্টা ধরে ঝাড়ফুঁক।
পরিবারের আশা মা মনসার আশীর্বাদে প্রাণ পাবে মৃত সন্তান। আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ মাঝের ডাবরী এলাকার এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের এই ঘটনা নিয়ে শনিবার শোরগোল পড়ল গোটা জেলাতেই। শেষ পর্যন্ত কুসংস্কার ও অজ্ঞানতার বিরুদ্ধে লড়াই করা এক সংস্থার সদস্যরা গিয়ে ঘটনায় হস্তক্ষেপ করলে মৃত শিশুটিকে দাহ করা হয়। স্পর্শকাতর এই ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
ঘটনায় প্রকাশ শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ বাড়ির উঠোনে বিষধর সাপের কামরে দেয় রাজমিস্ত্রির কাজ করে মৃনাল রায় ১৮ মাসের কন্যা শিশু শম্পা, প্রাথমিকভাবে সাপের কামরের পর প্রথম দু'ঘণ্টা মৃত বাড়িতে ফেলে রেখে দেয়। বাসিন্দাদের উদ্যোগে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শম্পাকে কিন্তু বাঁচাতে পারেনি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল।
শিশু শম্পাকে মৃত ঘোষণা করে জেলা হাসপাতাল এবং এরপরই ঘটনায় আসে শোকার্ত পরিবার মৃত সন্তানকে বাঁচিয়ে তুলতে ডেকে নিয়ে আসে স্থানীয় ওঝাকে। বাড়ির মা মনসা মন্দিরের সামনে কলাপাতায় মৃত শিশুকে শুইয়ে রেখে শুরু হয় প্রবল ঝাড়ফুঁক, জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ার বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংস্থার সম্পাদক কৌশিক দে এবং ঘন্টা কয়েক ঝাড়ফুঁক চলার পর তারা হস্তক্ষেপ করেন এই ঘটনায় পরিবারকে বুঝিয়ে শুনিয়ে ঝাড়ফুঁক থামানো হয় এবং শেষ পর্যন্ত প্রবল অনিচ্ছা সত্বেও মৃত শিশুর সৎকার করে হতভাগ্য পরিবার।
এ ব্যাপারে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সংস্থার পক্ষে কৌশিক বাবু জানান, মানুষকে আরো সচেতন হতে হবে । সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে যদি আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে আসা যেত, তবে হয়তো শিশুটি বেঁচে যেত । আর শিশুটি মারা যাওয়ার পর যে ঝাড়ফুঁকের ঘটনা ঘটেছে এটা যথেষ্ট নেতিবাচক, এসব যদি বন্ধ না হয়,তা হলে সাপে কাটা রোগী বাঁচানো যাবেনা।