এবার মাছেও পড়ল 'পচা' হাত, মাংস-মুরগির পর পাত থেকে কী মাছও গেল
বজবজের নতুন বাজার থেকে মিলল ৭০ কিলো পচা মাছ-মাংস। বজবজ থেকেই ভাগাড় মাংসকাণ্ডের পর্দা ফাঁস হয়।
পচা মাংসের পর এবার পচা মাছ! ঘটনাস্থল সেই বজবজ, যেখান থেকে ভাগাড় মাংসকাণ্ডের পর্দা ফাস হয়। ভাগাড় কাণ্ডের পর থেকেই বজবজ পুরসভা এলাকার একাধিক বাজার থেকে শুরু করে এলাকার বিভিন্ন হোটেল রেস্তোরায় অভিযান চালাচ্ছে। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার বজবজ পুরোসভার উল্টো দিকের নতুন বাজারে হাজির হন বজবজ পুরসভার কর্মীরা। এদিন তাদের অভিযান চলে বাজারের মাছের দোকানগুলিতে।
এই বাজারেই আকবর নামে এক পাইকারি ও খুচরো মাছ-মাংসের বিক্রেতার দোকানে কটু গন্ধ পান পুরকর্মীরা। গন্ধের উৎস সন্ধান করলে মেলে ৩ টি ফ্রিজার। ফ্রিজার খুললে দেখা যায় ওপরে কিছু টাটকা মাছ থাকলেও তার নিচে ডাঁই করা আছে দীর্ঘদিনের পচা মাছ-মাংস। সেখান থেকে প্রায় ৭০ কিলো পচা মাছ-মাংস উদ্ধার হয়।
এত পরিমাণ পচা মাছ-মাংস ফ্রিজারে রেখে দিয়েছেন কেন, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি আকবর। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুরসভায় নিয়ে আসা হয়। জেরা করে জানা যায়, ভাল মাছের টুকরোর সঙ্গে সে পচা মাছ মিশিয়ে দিত। বিয়েবাড়ি বা বড় ভোজের আসরেও পাঠাত পচা মাছ-মাংস। দীর্বেঘদিন ধরেই চলছিল এই ব্যবসা। কিছু হোটেলেও এইগুলি সরবরাহ করা হত বলে অভিযোগ। কোন হোটেলে এই পচা মাছ-মাংস পাঠানো হত, তা খতিয়ে দেখছে বজবজ পুরসভা। আকবরের দোকান সিল করে দেওয়া হয়েছে। বাজেয়াপ্ত মাছ মাংস লেবরেটরিতে পাঠানো হবে। খবর দেওয়া হয়েছে বজবজ থানায়।
প্রসঙ্গত মাস দেড়েক আগে এই বজবজেই পুরসভার ভ্যাটে সন্ধান মিলেছিল ভাগাড় মাংসকাণ্ডের। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে জানা যায় এর পিছনে এক বিশাল চক্র রয়েছে। যার জাল ছড়িয়ে আছে কলকাতা ও তার শহরতলীর বিস্তৃত এলাকা জুড়ে। এমনকী বাংলাদেশেও ওই পচা মাংস পাঠানো হত বলে জানা গিয়েছিল। কলকাতার বিভিন্ন নামি দামি রেস্তোরাঁর খাওয়ারেও মিশে যেত ওই পচা মাংস।
ভাগাড় মাংসকাণ্ড সামনে আসার পর মানুষ তুলনামূলকভাবে মাংস খাওয়া কমিয়েছেন। রাস্তার রোল-চাউমিনের দোকানে তো বটেই ভিড় কমেছে দামি রেস্তোরাঁতেও। অনেকেই আবার মাংস ছেড়ে ডিম, সবজি ইত্যাদি খাওয়ারের দিকে ঝুঁকেছেন। সরকারি বিভিন্ন বৈঠকেও নাকি মাংসের পদ খেতে অস্বীকার করছেন অফিসাররা। মাংস ছাড়া বাঙালীর চলতে পারে, কিন্তু পাত থেকে মাছ উঠে গেলে বাঙালীর পরিচয়ই সঙ্কটে পড়বে। কিন্তু এবার সেই মাছেও পড়ল 'পচা' হাত। এবার তার জেরে মানুষ মাছ খাওয়া বন্ধ রাখবেন কিনা, তা সময়ই বলবে।