তৃণমূল রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনুক বা ভোজপুরী, ভোটের ফল ঘিরে অশান্তির সুরই বাজবে, আশঙ্কায় বাংলা!
কলকাতা, ১৬ মে : আর হাতে মাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই জানা যাবে বাংলাদের মসনদে বসছে কে। হাজারো বিতর্ক, 'কুৎসা-ষড়যন্ত্র' সত্ত্বেও কী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস কি ফের ক্ষমতায় আসতে পারবে, নাকি, বাম-কংয়ের জোটের জালে মুখে থুবড়ে পড়বেন তৃণমূলনেত্রী, তার জবাব মিলবে আগামী ১৯ মেই। তবে ফল যাই হোক, এদিন বাংলার বুকে ফের কয়েকপ্রস্থ হিংস্রতা, রক্তারক্তি, সংঘর্ষ, অশান্তির ঘটনা যে ঘটবেই তা নিয়ে প্রায় নিশ্চিত আশঙ্কায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
শাসকদলের তরফে স্পষ্টতই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভোটের ফল প্রকাশের দিন রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নির্বাচনে কমিশনের দায়িত্বে। আর তারই সুযোগ নিয়ে রাজ্যে বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইবে শাসক দল, এ আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে বিরোধী দলগুলিও। [কমিশনের কড়া টনিকে ভোটের ফল জানতে হা-পিত্তেশ করতে হবে রাজ্যবাসীকে]
বিজয়মিছিল না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, 'রবীন্দ্র সঙ্গীত নয়', 'ভোজপুরি গান বাজবে', 'সূর্য অস্ত যাবে' এই ধরণের অর্থসূচক সব মন্তব্য তৃণমূল নেতানেত্রীদের গলায় শোনা যাওয়াতে বেশ খানিক চিন্তায় বিরোধী দলগুলি।
গত সপ্তাহে তৃণমূলের জেলবন্দি নেতা মদন মিত্র মন্তব্য করেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বদলা নয়, তবে এবার ১৯ মে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হবে!" কারো বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, এই মন্তব্য সিপিএম-এর মুখ্য নির্বাচনী প্রচারক সূর্যকান্ত মিশ্রর বিষয়েই বলেছেন মদনবাবু। [ছেলেদের বলে দাও তৈরি থাকতে, ১৯ তারিখ ওদের সঙ্গে আবির খেলব : স্ত্রীকে বললেন জেলবন্দি মদন মিত্র]
অন্যদিকে গত ৫ মে নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারি বলেন, তৃণমূল জিতবে, এবং বলেন এবার আর রবীন্দ্রসঙ্গীত নয়।
সূত্রের খবর, 'রবীন্দ্রসংগীত নয়' এই শব্দটি রাজনৈতিক পরিভাষায় অত্যন্ত অর্থবহ। এর অর্থ হল, 'চল ওদের মারি'। এই কথাটি আসলে তৃণমূলের অন্দরে জনপ্রিয় তবে থেকে হয়েছে যবে থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালের ঐতিহাসিক জয়ের পর দলের নেতা কর্মীদের বিজয় মিছিল না করে বাড়িতে বসে রবীন্দ্রসংগীত শুনতে বলেছেন। [মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল এবছর নির্বাচনে হেরে গেলে কী হতে পারে?]
এদিকে মদন মিত্র সাংবাদিকদের সম্প্রতি বলেছেন, "দিদি এবার আর রবীন্দ্র সংগীত শুনতে বলবেন না, বরং ভোজপুরী শুনব, এটাও খুব জনপ্রিয় গান।" তৃণমূল নেতাদের এহেন সব দ্ব্যর্থবোধক আক্রমণাত্মক মন্তব্য়ের জেরে চাপা উত্তেজনার আবহাওয়ায় গোটা বাংলা জুড়েই।