নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া সন্দেশখালিতে, গণধর্ষণে নৃশংস অত্যাচারের শিকার প্রৌঢ়ার মৃত্যু
৩ জুলাই গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন সন্দেশখালির এক প্রৌঢ়া। ২৫ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েও হেরে গেলেন তিনি। এদিকে, এই ঘটনায় দিল্লির নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন অনেকে।
২০১২ সালের নির্ভয়াকাণ্ডকে এখনও দেশবাসী ভুলতে পারেনি। এরপর এই রাজ্যের বুকেই ঘটেছে কামদুনি থেকে কাকদ্বীপের মতো নৃশংস সব হত্যাকাণ্ড। যেখানে দুই কিশোরীকে শুধু গণর্ধষণই করা হয়নি, নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল ধর্ষকের দল।
জুলাই মাসের ৩ তারিখে সন্দেশখালির ঘটনাও যেন ফের একবার এমনই সব নৃশংসতাকে খেয়াল করিয়ে দিয়েছিল। যদিও, এক্ষেত্রে পাশবিক অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন এক প্রৌঢ়া। গণধর্ষণের সময় তাঁর উপরে এতটাই নারকীয় অত্যাচার চালানো হয়েছিল যে তার বীভৎসতা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন খোদ চিকিৎসকরা।
গত ২৫ দিন ধরে যমে মানুষে টানাটানি চলছিল ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে। কিন্তু, পেরে উঠলেন না তিনি। মঙ্গলবার ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই প্রৌঢ়া। যদিও, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অধরা ৩ অভিযুক্ত। প্রৌঢ়ার বয়ানে ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল সন্দেশখালি পুলিশ। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত পুলিশ রাজ্যেশ্বর মাইতি ওরফে ভোলা নামে এক অভিযুক্তকে ধরতে সমর্থ হয়েছে। প্রৌঢ়ার বৃদ্ধার বাড়ির লোকের অভিযোগ, ভোলা কারওর নামই বলছে না। পুলিশের বিরুদ্ধেও কার্যত নিস্ক্রিয় থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
৩ জুলাই রাতে সন্দেশখালির মাঝেরপাড়ায় নিজের চা-এর দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন বছর ৬১-র প্রৌঢ়া। কিন্তু, দোকানের পাশেই কয়েক জন যুবককে মদ্যপান করতে দেখে তিনি প্রতিবাদ করেন। বহু দিন থেকেই ওই যুবকরা রাত হলে এভাবে সেখানে মদ্যপান করছিল বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার আগেও ওই বৃদ্ধা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, মহিলা বাড়ি ফেরার রাস্তা ধরতেই রাতের অন্ধকারের রাস্তায় তাঁর উপরে চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। এরপর তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। এমনকী, যৌনাঙ্গে লোহার রড থেকে ভাঙা বোতলের কাচ দিয়েও আঘাত করা হয়।
পরের দিন সকালেই গ্রামের রাস্তায় প্রৌঢ়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পরে গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। ২৫ দিন ধরে ভর্তি থাকার পর মঙ্গলবার মৃত্যু হয় প্রৌঢ়ার।