আগামী ১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে! করোনা নিয়ে বৈঠক শেষে নবান্নে বললেন মমতা
বাংলার মসনদে বসেই করোনা নিয়ে বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার ২৪ ঘন্টা পরেও বাংলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একই ভাবে উদ্বিগ্ন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। পুজোর আগে কীভাবে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ
বাংলার মসনদে বসেই করোনা নিয়ে বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার ২৪ ঘন্টা পরেও বাংলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একই ভাবে উদ্বিগ্ন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। পুজোর আগে কীভাবে করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবারও দফায় দফায় বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক শেষ আজও একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে রাজ্যবাসীকে আরও একবার সতর্ক করলেন তিনি।
১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে
এদিন নবান্নে করোনা মোকাবিলা নিয়ে ফের বৈঠক করেন। আধিকারিকদের নিয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আগামী ১৫ দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। ভয় দেখাচ্ছি না, সবাইকে সতর্ক করছি।' রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাঁর আর্জি, 'বাসে দয়া করে ভিড় করবেন না। একটু হয়তো বাড়তি অপেক্ষা করতে হবে। লোকাল ট্রেন বাতিলের ফলে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়বেন জানি, তাই রাজ্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
আরও ২০০০ ডাক্তার পাবে রাজ্য
প্রতিদিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন ডাক্তার থেকে স্বাস্থ্য কর্মীরা। এর ফলে বহু স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই কর্মী সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। যে সমস্ত ডাক্তারি পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিলপ করছেন তাঁদের কোভিডের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হবে। এমনটাই সিদ্ধান্ত। মমতা বলেন, তাঁরা এর জন্য একটা সরকারি সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, এই সিদ্ধান্তে রাজ্যে কর্মী সঙ্কটও মিটবে বলে আশা। মমতা বলেন, এর ফলে ২০০০ ডাক্তার-নার্স বেশি পাব। পাশাপাশি ১.৭০ লক্ষ স্থানীয় ডাক্তারকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা কর্মী নাম দিয়ে জেলাস্তরে কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক প্রধানের
সমস্ত হাসপাতালে ৪০ শতাংশ বেড বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কোভিডের জন্য। রাজ্যের ১০৫টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালে পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হবে। বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ডায়মন্ড হারবার ও কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ইতিমধ্যে বসে গিয়েছে এই অক্সিজেন প্যান্ট। তাতে বহু করোনা আক্রান্ত মানুষ উপকৃত হচ্ছে বলে দাবি। ডাক্তারদের একাংশের মতে, যেভাবে করোনা রুখতে একের পর এক সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন নিচ্ছে তা প্রশংসনীয়।
আংশিক লকডাউনে আরও কড়াকড়ি
শপথ নিয়েই বুধবার করোনা নিয়ে আরও কড়া হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আংশিক লকডাউনে আরও কড়াকড়ির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ বৃহস্পতিবার থেকে লোকাল ট্রেন সম্পূর্ণ বন্ধ। ১৪ দিনের জন্যে রাজ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ। বাস এবং মেট্রোর সংখ্যা অর্ধেক করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাতে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। ফলে অনেকটাই রাস্তায় কম লোকসংখ্যা। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের বিভিন্ন বণিকসভাকে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতবারের মতো রাজ্যের বিভিন্ন বাজারের দায়িত্ব তাদেরকে নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। এমনিতেই রাজ্যে ৫০ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই অবস্থায় বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে জনমানসে পরিস্থিতির গুরুত্ব নিয়ে বাড়তি সচেতনতা প্রসারের বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে কোনও এলাকায় যাতে ভিড় না হয় সেটা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলোকে এগিয়ে আসার ডাক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এই বিষয়ে নবান্নে একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মমতা। যেখানে পুজো উদ্যোক্তা থেকে সমস্ত ধর্মের মানুষরা উপস্থিত থাকবেন।