মমতার অধিগ্রহণ শিকেয় তুলে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডে লালবাতি জ্বালাচ্ছেন মোদী, গর্জে উঠল রাজ্য
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকলীন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড অধিগ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মোদীর সরকার সেই সিদ্ধান্তকে কার্যকরী না করে তালা ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েই নিল পাকাপাকি।
কেন্দ্রীয় সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তে শেষপর্যন্ত ঝাঁপ বন্ধ হতে চলেছে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের। হাওড়া ও বার্নপুরের ঐতিহ্যশালী এই রেল কারখানায় লালবাতি ঝোলানোর সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই নিল কেন্দ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকলীন বার্ন স্ট্যান্ডার্ড অধিগ্রহণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মোদীর সরকার সেই সিদ্ধান্তকে কার্যকরী না করে তালা ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েই নিল পাকাপাকি। স্রেফ ঘোষণার অপেক্ষামাত্র। এই ঘটনায় শ্রমিক মহলে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। শ্রমিক সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে একযোগে।
হিন্দুস্তান কেবলস বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এবার কোপ পড়ল বার্নস্ট্যান্ডার্ডের উপর। ২৮৪ কোটি টাকা ক্ষতি দেখিয়ে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। শতবর্ষ প্রাচীন এই কারখানা ৯৯৪ সালে বিআইএফআর-এ গেলেও পূর্বতন সরকার তা টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা নিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার চায় না, ধুঁকতে থাকা কোনও কারখানাকে বিপুল ক্ষতি স্বীকার করে পুনরুজ্জীবিত করতে।
এই কারখানা ৭০০ শ্রমিক নিয়ে চালু হয়েছিল। বর্তমানে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে ৫০০ শ্রমিক রয়েছে। এখনও প্রতি মাসে শতাধিক ওয়াগন তৈরি হয় এই কারখানায়। এখানে নিয়মিত মেরামতিও হয় ওয়াগনের। শ্রমিক সংগঠনের দাবি, একটা চালু কারখান কেন বন্ধ করতে চাইছে কেন্দ্র, তা বোধগম্য হচ্ছে না। শ্রমিক সংগঠনগুলির কথায়, এখনও এক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ৮০ কোটি টাকা দিয়ে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডকে রেলের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। তারপর কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট হতাশাব্যাঞ্জক।
কারখানা বন্ধের এই সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত হতাশ শ্রমিকমহল। শ্রমিক সংগঠনগুলি একযোগে আন্দোলনের নামার কথা ভাবছে। হাওড়া ও বার্নপুরে দফায় দফায় বিক্ষোভ চালাচ্ছেন শ্রমিকরা। কারখানার গেটে সমাবেশ করে তাঁরা আওয়াজ তুলছেন কেন্দ্রের এই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। সিপিএমের শ্রমিক নেতা দীপক দাশগুপ্ত বলেন, আমরা আইনের আশ্রয় নেব। বিজেপি কারখানা বন্ধ করে বিক্রি করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালাব কেন্দ্রের এই বঞ্চনা রুখতে।