মোদী-শাহের নির্দেশে গ্রেফতার! সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি রাজ্যের মন্ত্রীর
রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের যে ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ! গ্রেফতারির দায়িত্বে থাকা ওই সিবিআই কর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুন। এই মর্মে কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে চিঠি তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের।
রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের যে ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ! গ্রেফতারির দায়িত্বে থাকা ওই সিবিআই কর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুন।
এই মর্মে কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে চিঠি তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের।
একদিকে যখন মন্ত্রী, বিধায়কদের গ্রেফতারি নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে তখন এই চিঠি নয়া মাত্রা যোগ দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, কলকাতা পুলিশকে লেখা চিঠিতে মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের আবেদন, এমন পরিস্থিতিতে আমার দলের পক্ষ থেকে আপনার কাছে অনুরোধ করছি, অবৈধভাবে এই গ্রেফতারির দায়িত্বে থাকা সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন।
কারণ কোনওরকম গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্দেশে বলপূর্বক আমাদের মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতার করেছেন ওই আধিকারিকরা। এই চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। যিনি মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেফতারির পরেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ''ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। কারণ, কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা। আদালত জানতে চাওয়ায় আমি বলেছিলাম, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমাদের কাছে এ বিষয়ে সিবিআই কিছু জানতেও চায়নি। কোনও চিঠিও দেয়নি।''
একই সঙ্গে বিমানবাবু এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হাইকোর্টে এই বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যের মন্ত্রীর লেখা চিঠিতে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে মোদী-শাহের বিরুদ্ধে। চিঠিতে অভিযোগ, 'পুরো ঘটনার পিছনে রয়েছে নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের হাত। তাঁদের নির্দেশেই কাজ করছেন রাজ্যপাল।'
বিধানসভা ভোটে জিততে ব্যর্থ হয়েই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পুলিশের কাছে তৃণমূলের দাবি, যেসব আধিকারিকেরা এই তিন তৃণমূল বিধায়ককে গ্রেফতার করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এই অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে ধার্য করার কথাও বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, এই মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি-র দুই বিধায়ক মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেফতার করা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চন্দ্রিমাদেবী।
একই সঙ্গে অতিমারি পরিস্থিতিতে ফিরহাদের ভুমিকার কথা উল্লেখ করে চন্দ্রিমা লিখেছেন, 'করোনা মহামারির পরিস্থিতিতে কলকাতা প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমানে বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দায়িত্ব থেকে তিনি জনমানসে পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন, তাঁকেও কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা না দেখিয়েই বলপূর্বক গ্রেফতার করা হয়েছে'।
উল্লেখ্য, সকাল থেকে নারদা-কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সকাল সকাল তিন বিধায়ক এবং শোভন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই। একের পর এক তৃণমূল নেতাকে আটক করে নিয়ে আসা হয় নিজাম প্যালেসে। এরপরেই নিজাম প্যালেসে ছুটে আসেন তৃণমূলের একের পর এক আইনজীবী।
আসেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিন্দ রাউতের মতো নেতারা। জানা যাচ্ছে, বেলা ১২টার সময় শোভন, ফিরহাদ, সুব্রত এবং মদন মিত্রকে আদালতে তোলা হবে। আর তাঁর আগে তৃণমূলের পালটা স্ট্যাটেজি কি হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনজীবীরাও আদালতে সওয়াল করবেন।
তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে এর লরাই হবে। ফিরহাদের আইনজীবী জানিয়েছেন, আমরা আদালতের কাছে আস্থাশিল। সেখানেই যা হওয়ার হবে