তৃণমূলে ভাঙনের প্রধান কারণ মুকুলই! ২০১৯ থেকে ২০২১ গোপন পদক্ষেপে জল্পনা
মুকুলই তৃণমূলে ভাঙনের প্রধান কাণ্ডারি, ২০১৯ থেকে ২১- প্রতি পদক্ষেপে স্পষ্ট লক্ষ্য
বিজেপির বাংলা জয়ের মূল হাতিয়ার হল তৃণমূলে ভাঙন। তৃণমূলে ভাঙন ধরিয়ে বিজেপি নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে চাইছে। আর সেই কাজ নীরবে বিগত তিন বছরের বেশি সময় ধরে করে চলেছেন মুকুল রায়। তিনিই গোপনে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন, যার জেরে মাঝেমধ্যেই বেসুরো বাজছেন তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা।
কেউ ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন, কেউ এখনও অপেক্ষায়
২০১৯-এ লোকসভা ভোটের আগে যেমন তৃণমূল ভেঙেই বিজেপির প্রার্থী করেছিলেন অনেককে, এবারও তার অন্যথা হলে অবাক হবেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ বিগত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলে একটু একটু করে ফাটল ধরছে। অনেক নেতা-নেত্রী বেসুরো বাজছেন। কেউ ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন, কেউ এখনও অপেক্ষায়।
বিজেপিতে যোগদানের পরই তৃণমূল ভাঙার পরিকল্পনা
তৃণমূলের সঙ্গে নেতা-নেত্রীদের দূরত্ব তৈরি শুধু গুরুত্বের প্রশ্নে নয়, এর গভীরে রয়েছে একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলেরই সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায়। বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই তিনি তৃণমূলকে ভাঙার পরিকল্পনা করে চলেছেন। প্রথমে তাঁর সঙ্গে কারা বিজেপিতে যেতে পারে তা নিয়ে একটা জল্পনা হয়েছিল। তখন একা যোগদান করলেন ২০১৯-এ তিনি দেখিয়েছিলে তাঁর ক্ষমতা।
তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ মুকুলের, স্বীকার করেন মমতাও
মুকুল
রায়
যে
তৃণমূল
নেতৃত্বের
সঙ্গে
যোগাযোগ
রেখে
চলেন,
তা
আগে
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কথাতেও
ফুটে
উঠেছে।
আর
মুকুল
রায়
থেকে
দিলীপ
ঘোষ-
বিজেপির
অধিকাংশ
তো
দাবি
করেই
থাকেন,
তৃণমূলের
কতজন
সাংসদ-বিধায়ক
যোগাযোগ
রাখছেন
তাঁদের
সঙ্গে।
সেই
সংখ্যাটা
যে
নেহাত
কম
নয়,
তা
দেখা
গিয়েছে
আগেই।
৪
২০১৯-এর ভোটের আগে থেকেই দলত্যাগের হিড়িক
২০১৯-এর ভোটের আগে থেকেই দলত্যাগের হিড়িক পড়ে যায় তৃণমূলে। সৌমিত্র খান থেকে শুরু করে অর্জুন সিং, অনুপম হাজরা, নিশীথ প্রামাণিক-সহ একাধিক নেতাকে তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে প্রার্থী করেন মুকুল রায়। আর লোকসভার সাফল্যের পর সব্যসাচী দত্ত থেকে শুরু করে শোভন চট্টোপাধ্যায়, শুভ্রাংশু রায়-সহ অনেকেই যোগদান করেন।
শুভেন্দু অধিকার সদলবলে বিজেপি-যোগের নেপথ্যে মুকুল
এবার ২০২১-এর আগে শুভেন্দু অধিকার সদলবলে যোগ দিলেন বিজেপিতে। এখানেও মুকুল রায়ের হাত রয়েছে বলে শুভেন্দুই বুঝিয়ে দিয়েছেন। শুভেন্দু বিজেপির পতাকা হাতে নিয়েই বলেন, মুকুল রায় আমাকে বলেছিলেন, শুভেন্দু সম্মান নেই ওখানে, এখানে সম্মান নিয়ে কাজ করবি চলে আয়। মুকুল রায় যে তলে তলে যোগাযোগ রেখেছিলেন, তা প্রতিধ্বনিত হয়েছে শুভেন্দুর কণ্ঠে।
একুশের আগে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধির পিছনে হাত মুকুলের
আর শীলভদ্র দত্ত থেকে সুনীল মণ্ডলরা যে মুকুল রায়ের অঙ্গুলিহেলনেই শুভেন্দুর সঙ্গে জোট বেঁধেছিলেন তাও স্পষ্ট। কেননা মুকুল রায়ের অনুগত বলে পরিচিত শীলভদ্র দত্ত অনেকদিন ধরেই তৃণমূল ছাড়বেন ছাড়বেন করছিলেন, তাঁকে শুভেন্দুর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া বা উত্তরবঙ্গের নেতাদেরও বিজেপিতে নিয়ে আসার পিছনে হাত মুকুলের!
তৃণমূল মুখপাত্রের সামনেই নেত্রীকে ফোন মুকুল রায়ের
মুকুল রায় দল ভাঙানোকে রাজনীতির অঙ্গ বলে মনে করেন। তাই রাখঢাক না করেই তিনি তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার বিষয়টিও স্বীকার করেন। হালে শতাব্দী রায়কেও দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে তিনি বিজেপিতে যোগদান করাতে চেয়েছিলেন। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সামনে তিনি শতাব্দী রায়কে ফোন করেন।
মুকুলকে রোখার কোনও পন্থা বের করতে ব্যর্থ তৃণমূল
পুরনো সম্পর্কের জেরে তৃণমূলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন মুকুল রায়। তাঁদের মন বোঝার চেষ্টা করছেন। কোনও ফাঁক পেলেই ফাটল চওড়া করে তিনি দল ভাঙাচ্ছেন। তার ফলে ২০২১-এর আগে আরও উইকেট পড়তে পারে। আপাতত মুকুল রায়কে রোখার কোনও পন্থা বের করতে ব্যর্থ তৃণমূল কংগ্রেস।
'কে জেপি নাড্ডা?', ছুটি থেকে ফিরেই পুরোনো ফর্মে বিজেপিকে আক্রমণ রাহুল গান্ধীর