মুকুল কি প্রার্থী হচ্ছেন বিজেপির! জল্পনার মধ্যে ‘মাস্টার স্ট্রোক’টা দিয়েই দিলেন তিনি
এতদিন একটা নির্বাচনও তিনি জিততে পারেননি মমতার হাত মাথায় থাকা সত্ত্বেও। এবার মমতার ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে পদ্ম-শিবিরে এসে চ্যালেঞ্জটা কি নিয়েই নেবেন? – এই জল্পনার মধ্যেই তাঁর মাস্টারস্ট্রোক।
মুকুল রায় কি প্রার্থী হবেন উলুবেড়িয়ায়? এতদিন একটা নির্বাচনও তিনি জিততে পারেননি মমতার হাত মাথায় থাকা সত্ত্বেও। এবার মমতার ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে পদ্ম-শিবিরে এসে চ্যালেঞ্জটা কি নিয়েই নেবেন? - এই অবধারিত প্রশ্নটা উঠে পড়েছিল উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা হতেই। তবে মুকুল রায় প্রার্থী হবেন কি না তা পরের কথা, তার আগে মুকুল রায় মাস্টার স্ট্রোকটা দিয়েই দিলেন।
[আরও পড়ুন:পরিবারতন্ত্র বহাল তৃণমূলে, বামেদের আস্থা হেরোতে, উলুবেড়িয়া-নোয়াপাড়া প্রার্থী কারা]
কী সেই মাস্টারস্ট্রোক? তৃণমূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার আগে তিনি একটা দল তৈরি করেছিলেন। সেই দলকেই তিনি এবার আসরে নামাতে চলেছেন। অন্তত উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবে, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হচ্ছেন ফরিদ খান। উলুবেড়িয়া লোকসভায় সংখ্যালঘু ভোটের প্রাধান্য থাকায় তৃণমূলের ভোটবাক্সে থাবা বসাতে মুকুল রায় এই কৌশল অবলম্বন করতে চলেছেন।
তবে ফরিদ খান তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, 'আমরা জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী দেব বলে চূড়ান্ত করেছি। কিন্তু আমিই দাঁড়াব কি না, তা স্ছির করিনি বা কোনও প্রার্থীর নামই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শুধু উলুবেড়িয়া নয়, আমরা নোয়াপাড়াতেও প্রার্থী দিতে পারি।'
[আরও পড়ুন:'মা'-এর সরকারের 'ফাঁদে' ভারতী, ইস্তফা ঝুলিয়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ রাজ্যের]
জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের এই পরিকল্পনা থেকেই স্পষ্ট মুকুল রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে এবার শেষ অস্ত্রটা প্রয়োগ করতে চলেছেন। তৃণমূলের ভোট কেটে তাঁদের প্রার্থীর জয়ের পথে কাঁটা বিছিয়ে দেওয়াই তাঁদের উদ্দেশ্য। জাতীয়তবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মুকুল রায়ের সম্পর্কের কথা উভয় তরফ থেকে অস্বীকার করা হলেও, রাজনৈতিক মহল মনে করে মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ার পরও মুকুল রায় সমানে যোগাযোগ রেখে চলেন জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। তাঁর অঙ্গুলিহেলনেই জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস এবার আসরে নির্বাচনী নামতে পারে।
এটা আসলে কৌশলী মুকুল রায়ের কুশলী-পরিকল্পনা। অঙ্ক কষে তৃণমূল-বধের রূপরেখা তৈরি করতেই তিনি নিজের হাতে তৈরি দলকে আসরে নামাচ্ছেন। রাজনৈতিক মহল এই ঘটনাকে মমতার বিরুদ্ধে মুকুল রায়ের মাস্টার স্ট্রোক হিসেবেই বর্ণনা করছে। সবংয়ে ভোট বাড়ালেও তৃণমূলের ধারেকাছে থাকতে পারেনি বিজেপি। এবার উলুবেড়িয়া ও নোয়াপাড়ায় বিজেপি জোর ধাক্কা দেওয়ার সমস্ত চেষ্টা করবেন মুকুল রায়।
উলুবেড়িয়ায় সংখ্যালঘু ভোটের দিকে চেয়েই সুলতান-জায়া সাজেদা আহমেদ প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের। আর সিপিএম তাঁদের তরুণ-তুর্কি প্রার্থী সাবিরউদ্দিন মোল্লার উপরই ভরসা রেখেছে। আর এই লড়াইয়ে বিজেপিকে একটা সম্মানজনক জায়গায় রাখতে জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের এক সংখ্যালঘু প্রার্থীকে তাস হিসেবে ফেলতে চাইছেন মুকুল রায়। তাহলেই বিজেপির লড়াইয়ে সুবিধা হয়ে যাবে অনেকাংশে।
আর এই লক্ষ্যে প্রথম বাজি অবশ্যই ফরিদ খান। তার কারণ, ফরিদ খান তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালধু সেলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সংখ্যালঘু মহমলে জনপ্রিয় নেতা। তাঁর সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে যদি মুসলিম ভোট কেটে নেওয়া যায় তৃণমূলকে বিপাকে ফেলে দেওয়া যাবে। সেই অঙ্কই কাজে লাগাতে চাইছেন 'কোটিল্য' মুকুল।