বিজেপি এখন মুকুলের! দিলীপ-রাহুল ব্যাকফুটে, বুমেরাংয়ের আশঙ্কা একুশের বিধানসভা ভোটে
বিজেপি এখন মুকুলের! দিলীপ-রাহুল ব্যাকফুটে, বুমেরাংয়ের আশঙ্কা একুশের ভোটে
তিন বছর দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করার পরে এতদিনে দলে পছন্দের জায়গা পেয়েছেন মুকুল রায়। দিলীপ ঘোষ-রাহুল সিনহাদের গৌণ করে নিজে গুরুত্বের আসনে বসেছেন। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির রাশ তুলে নিয়েছেন নিজে্র হাতে। তৃণমূলকে বশে আনার জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন তাঁর পথ চেয়েই বসে রয়েছে।
২০১৮ এবং ২০১৯-এ জোড়া সাফল্য মুকুলের
২০১৭ সালে মুকুল রায় তৃণমূলের সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ঘটা করে সেই যোগদান হলেও মুকুল রায় আদতে কোনও পদ পাননি এতদিন। তিনি এর মধ্যে বাংলায় দুটি নির্বাচনে বিজেপিকে নেতৃত্ব দিয়ে সাফল্যের মুখ দেখিয়েছিলেন। ২০১৮-র পঞ্চায়েতের পর ২০১৯-এর লোকসভায় ২ থেকে বাড়িয়ে ১৮ জন সাংসদ উপহার দিয়েছেন তিনি।
মুকুল বন্দনায় বিজেপির আদি নেতারা ক্ষুব্ধ
এতদিনে পুরস্কার পেয়েছেন মুকুল। ২০২১-এ বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মুকুল রায়ের উপর ভরসা রেখে তাঁকে কেন্দ্রীয় সহ সভাপতির পদে বসানো হয়েছে। তারপর থেকেই বাংলাজুড়ে মুকুল-বন্দনা হচ্ছে শুধু। এতে বিজেপির আদি নেতারা বেশিরভাগই ক্ষুব্ধ। তাঁরা মনে করছেন, আদতে বিজেপির ক্ষতি হচ্ছে।
মুকুলকে নিয়ে বিজেপির ভূমিকায় অসন্তুষ্ট আদিরা
মুকুল রায়ের গুরুত্ব বাড়ার দিনেই রাহুল সিনহার পদস্ফলন হয়েছে। আর মুকুল রায়কে নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা এতটাই মজে আছেন দিলীপ ঘোষরা হয়ে যাচ্ছেন গৌণ। বিজেপির এই ভূমিকা ভালোভাবে নিচ্ছে্ন না বঙ্গ বিজেপির আদি নেতারা। দিলীপপন্থী ও রাহুলপন্থী নেতাদের মনে ক্ষোভ বাড়ছে। অসন্তুষ্ট তাঁদের অনুগামীরা।
মুকুলের হাতের মুঠোয় পুরো বঙ্গ বিজেপিটাই!
এই মহূর্তে গোটা বঙ্গ বিজেপিটাই আদতে মুকুল রায়ের হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা নেতারাই বঙ্গ বিজেপিতে এবং বিভিন্ন শাখা কমিটির মাথায় বসে আছেন। ফলে সমস্ত বিজেপিটাকেই মুকুল রায় নিজের হাতের মুঠোয় করে নিয়েছেন। এই মুহূর্তে বেশি ট্যাঁ-ফুঁ করতে পারছেন না দিলীপ ঘোষ বা রাহুল সিনহারা।
বিজেপিতে চোরা স্রোত বইছে, বুমেরাং হতে পারে
সেই কারণেইই বিজেপি এখন তিনটি স্রোতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে! বিজেপি ২০২১-এর নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ভাবছে মুকুল রায়ই পারেন তৃণমূলকে ভেঙে তছনছ করে দিয়ে বাংলায় বিজেপিকে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু দলের মধ্যে ঐক্য না থাকলে এবং আদি নেতাদের গুরুত্ব না দিলে বুমেরাং হতে বাধ্য।
বঙ্গ বিজেপি যেন নিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তনরা
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপির বেঙ্গল ইউনিট বর্তমানে তিনটি দলে বিভক্ত। একটি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এবং আরএসএসের সমর্থিত। দ্বিতীয় দলটি তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতা-নেত্রী সমন্বিত মুকুল রায়ের নেতৃত্বে এবং তৃতীয়টি রাহুলের পছন্দ অনুসারে পুরানো প্রহরীদের নিয়ে এবং অন্যান্য যাঁরা মনে করেন যে পার্টিটি তৃণমূলের প্রাক্তন নেতারা নিয়ে নিয়েছেন।
তৃণমূলের প্রাক্তন নেতাদের উপর দায়িত্ব, অসন্তোষ বাড়ছে
মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হওয়ার পর দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহারা ব্যাকফুটে পড়ে গিয়েছেন। বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুকুলকে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পদ দিয়েছে। কিন্তু দিলীপ-রাহুলদের স মান গুরুত্ব না দিলে ২০২১-এ বুমেরাং হতে বাধ্য। কারণ তৃণমূলের প্রাক্তন নেতাদের উপর বিজেপির দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট দলের আদি নেতারা।
বিজেপির রাশ মুকুলের হাতে, প্রমাণ নবান্ন অভিযান
বিজেপির এই অসন্তোষ শুধু উফরতলায় নয়, ছড়িয়ে পড়েছে নিচুতলাতেও। কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়ছে। যে কারণে রাহুল সিনহাকে পর্যন্ত তাঁর অনুগামীরা দিল্লি যেতে দিতে চাননি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ডাকে। তারপর রাহুল অনুগামীদের বুঝিয়ে দিল্লি গেলেও লাভ কিছু হয়নি। বঙ্গ বিজেপির সম্পূর্ণ রাশ সেই মুকুলের হাতেই রয়েছে। আর তার প্রমাণ এবারের নবান্ন অভিযান।
টার্গেট ২০২১-এর আগে চিটফান্ড মামলায় গতি! দায়িত্ব থেকে অপসারিত ইডির স্পেশাল ডিরেক্টর