মুকুল ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত রাজ্য বিজেপি! কেন এই বিভাজন জানেন সে কথা
মুকুল রায় নেতৃত্বে এলে তাঁদের কী হবে? এটাই এখন বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাঁড়়িয়েছে বিজেপিতে। তাই কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ এলেও অনেকে মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না মুকুল রায়কে।
তৃণমূল কংগ্রেসকে ভাঙতে গিয়ে নিজেদের দলেই বিভাজন রেখা স্পষ্ট করে দিল বিজেপি। তৃণমূল-ত্যাগী মুকুল রায়কে নিজেদের দিকে টানতে গিয়েই বিজেপিকেই এখন ঘোরতর অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। রাজ্য বিজেপি মুকুল রায়কে নিয়ে দ্বিধা-বিভক্ত। বিশেষ করে মুকুল রায়ের নেতৃ্ত্বে নতুন আঙ্গিকে বিজেপি রাজ্যে সংগঠন গড়ার যে পরিকল্পনা করছে, সেখানেই ঘোরতর আপত্তি রয়েছে একাংশের। এর ফলে অস্তিত্বহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন দলেরই একাংশ।
মুকুল রায় নেতৃত্বে এলে তাঁদের কী হবে? এটাই এখন বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাঁড়়িয়েছে বিজেপিতে। তাই কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশ এলেও অনেকে মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না মুকুল রায়কে। তাঁরা মনে প্রাণে চাইছেন মুকুল রায় না আসুন। তাঁর উপর মুকুল রায়কে নিয়ে ভীতিও কাজ করছে বিজেপির অন্দরে। বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের চিঠিও এ প্রসঙ্গে বড়সড় ভূমিকা নিয়েছে।
মুকুল রায়কে নিয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির নির্দেশ আসার পর থেকেই অনেক রাজ্য নেতাই স্পিকটি নট। কিন্তু ঘরোয়া বৈঠকে তাঁরা অসন্তোষ জানাতে ছাড়ছেন না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে তাঁদের ঠুঁটো জগন্নাথ করে মুকুল রায়কে মাথার উপর বসানোর চেষ্টা করছে, তাও তাঁরা বলছেন। ফলে মুকুল রায়ের বিজেপিতে প্রবেশে বাধা অনেক।
এক নীচুতলার নেতা-কর্মীরা মনেপ্রাণে তাঁকে মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের আপত্তি রয়েছে মুকুলকে দলে প্রবেশাধিকার দিতে। দুই, এই অবস্থায় আরএসএস মোক্ষম চালটা চেলেছে। তাঁদের দাবি, মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। শুধু তাঁরা চান, মুকুল রায় লিখিত আবেদন করুন বিজেপি কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।
আরএসএসের এই মোক্ষম চালেই মুকুল রায় ধরাশায়ী। মুকুল রায় কোনওমতেই এই দাবি মানবেন না, এটাই স্বাভাবিক। ফলে মুকুল রায়কে আটকানোর জন্য এই পরিকল্পনা যথেষ্ট। এই ঘটনায় স্বভাবতই উৎফুল্ল বিজেপির মুকুল বিরোধী নেতৃত্ব। তাঁদের এ বিষয়ে ক্ষোভ রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিও। তাঁদের প্রশ্ন, মুকুল রায়কে দলে নেওয়া হবে এই সিদ্ধান্ত যখন হয়েই গিয়েছিল আগেই, তাহলে কেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের পাঠিয়ে মূল্যায়ন করা?
আসলে বিজেপি-র একাংশের আশঙ্কা মুকুল রায় দলে এলে, তাঁর অনুগামীরাই প্রথম সারিতে থাকবেন। এতদিন যাঁরা গেরুয়া ধ্বজা তুলে ধরলেন, তাঁরা থাকবেন না মুকুল রায়ের বিজেপিতে। এই অস্তিত্বহীনতার প্রশ্নেই তাঁরা ভেবে কূল-কিনারা পাচ্ছিলেন না। এতদিন কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যত রাজ্যে নেতৃত্বকে নাক গলাতেই দিচ্ছিল না। কিন্তু আরএসএসের বাধার প্রাচীর সামনে আসতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও থমকে গেল মুকুল রায়কে নিয়ে। ফের প্রশ্ন নেমে এল মুকুল রায়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও।