ঋতব্রতকাণ্ডে নাম জড়াল মুকুল রায়ের! তীব্র চাঞ্চল্য রাজনৈতিক মহলে
সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বালুরঘাট যে তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন, সেই নম্রতা দত্তই মুকুল রায়ের নাম প্রকাশ্যে এনেছেন।
ঋতব্রতকে বাঁচাতে এবার আসরে নামলেন 'চানক্য' মুকুল রায়! ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্ত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুকুল রায়ের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। নড়ে-চড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসনও। অভিযোগ, ঋতব্রতর বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এক মহিলা চিকিৎসককে আসরে নামানো হয়েছিল। এবং তা হয়েছিল মুকুল রায়েরই অঙ্গুলিহেলনে।
সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বালুরঘাট যে তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন, সেই নম্রতা দত্তই মুকুল রায়ের নাম প্রকাশ্যে এনেছেন। নম্রতার দাবি, মুকুল ঘনিষ্ঠ এক মহিলা চিকিৎসক তাঁকে ফোন করেছিলেন বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য। ফোন করে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল মামলা তুলে নিতে।
কিন্তু কে সেই মহিলা চিকিৎসক? উঠে এসেছে অর্চনা মজুমদার নাম। অর্চনা মজুমদার নামেই এক মহিলা চিকিৎসককে দেখা গিয়েছিল কুণাল ঘোষের পুজো উদ্বোধনে। তিনি মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ। সেদিন মুকুল রায়ের পাশেই ছিলেন অর্চনা দেবী। এখন দুই অর্চনা দেবীই যদি এক হন তাহলে ঋতব্রতকাণ্ডে মুকুল রায়ের নাম জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রকট হয়ে উঠবে।
অভিযোগ, ওই মহিলা চিকিৎসক অর্চনা মজুমদার রবিবার থেকে ফোন ও হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে নম্রতা দত্তকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। নানা অনুরোধ করেন ঋতব্রতর বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু নম্রতা তা মানতে চাননি। তিনি অর্চনা দেবী, এমনকী মুকুল রায়কেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ঋতব্রতকাণ্ডে।
ঋতব্রতর সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবে বকলমে নম্রতা মুকুল রায়েরই হাত দেখছেন। এখন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়ের সঙ্গে রয়েছেন রাজনৈতিকভাবে। ঋতব্রতকে বাঁচানোর জন্যই মুকুল রায় ওই মহিলা চিকিৎসককে দিয়ে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা চালান বলে অভিযোগ নম্রতার।
যদিও অর্চনা মজুমদার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কোনওদিনও নম্রতাকে ফোন করেননি। বরং নম্রতাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যেহেতু তিনি মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছে। ঋতব্রত ইস্যুতে কোনওভাবেই তিনি মাথা ঘামাননি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বহিষ্কৃত সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন সহবাসের অভিযোগ তোলেন নম্রতা দত্ত নামে ওই তরুণী। বালুরঘাট থানা ও কলকাতা পুলিশেও তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকেও সাহায্য চেয়ে টুইট করেন তিনি। তারই জেরে দু-দুবার সিআইডি তলব করে ঋতব্রতকে। ঋতব্রত এখন পর্যন্ত হাজিরা দেননি।
অর্চনা মজুমদার নিজেকে বিধবা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। এবং জানিয়েছিলেন তিনি এআইডব্লুসি-র সভাপতি। সেই পরিচয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে অর্চনাদেবীর। এই মহিলাকে আগে বহুবার মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। এমনকী কুণাল ঘোষের পুজো উদ্বোধনে পাশাপাশি বসেছিলেন মুকুল রায় ও অর্চনা দেবী। নিজাম প্যালেসেও মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা যায় তাঁকে। এখন নম্রতার নয়া বিস্ফোরণে ঋতব্রতকাণ্ডে অন্যদিকে মোড় নিতে শুরু করল।
এদিকে ঋতব্রতকাণ্ডে বালুরঘাটে নম্রতা দত্তের বাড়িতে গেল সিআইডি-র একটি দল। তাঁরা প্রায় ঘণ্টা চারেক নম্র্তার বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন। যাবতীয় প্রশ্নের তথ্যতালাশ করেন। সেইসঙ্গ নথিপত্রও সংগ্রহ করেন তাঁরা। ভবিষ্যতে এইসব প্রমাণ ঋতব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় লাগবে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।