মুকুল ‘অগ্নিপরীক্ষা’য় বসছেন উপনির্বাচনে, তৃণমূলকে শিক্ষা দিতে অঙ্কে মগ্ন ‘কৌটিল্য’
বিজেপিতে যাওয়ার আগে নিজের ক্ষমতার পরীক্ষা দিতে চাইছেন তিনি। তাই তিনি ‘টার্গেট’ করছেন আসন্ন উপনির্বাচনকে। সেক্ষেত্রে নতুন মডেলে তৃণমূলকে ‘শিক্ষা’ দিতে চাইছেন তিনি।
এবার নতুন করে অগ্নিপরীক্ষায় বসতে চলেছেন মুকুল রায়। বিজেপিতে যাওয়ার ইচ্ছা এখনও তিনি নিজে মুখে স্বীকার করেননি। তবে তাঁর অভিমুখ যে বিজেপির দিকেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমনকী বিজেপিতে তাঁর যোগদানের সম্ভাব্য তারিখও নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। এই অবস্থায় সবকিছুকে পিছনে ফেলে তিনি এখন কঠিন অঙ্ক কষতে বসেছেন।
বিজেপিতে যাওয়ার আগে নিজের ক্ষমতার পরীক্ষা দিতে চাইছেন তিনি। তাই তিনি 'টার্গেট' করছেন আসন্ন উপনির্বাচনকে। সেক্ষেত্রে নতুন মডেলে তৃণমূলকে 'শিক্ষা' দিতে চাইছেন তিনি। এই উপনির্বাচনেই তিনি দেখে নিতে চাইছেন তাঁর সঙ্গে ঠিক কত লোক রয়েছেন। এমনও হতে পারে এখনই বিজেপিতে না গিয়ে তিনি নির্দল থেকেই এক প্রার্থী দিতে পারেন। কিংবা জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও তিনি প্রার্থী ঠিক করতে পারেন।
আপাতত যা পরিস্থিতি তাতে মুকুল রায়ের মাথায় এমন এক অঙ্ক রয়েছে বলে ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে। তিনি নাকি এ ব্যাপারে কথাও বলছেন বিজেপি, কংগ্রেস, বামেদের সঙ্গে। সেক্ষেত্রে তৃণমূল প্র্রার্থীর বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। অন্তত একটি আসনে পরীক্ষামূলকভাবে এই 'অগ্নিপরীক্ষা'য় বসতে পারেন মুকুল রায়।
সামনেই উপনির্বাচন। উলুবেড়িয়া লোকসভা, সবং ও নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে আগামী মাসেই। সেই নির্বাচনে মুকুল রায়কে সামনে রেথে লড়াইয়ের ভাবনা রয়েছে অন্য বিরোধী দলগুলিরও। একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী দিয়ে লড়াইয়ের নয়া মডেলের পরীক্ষা দিতে তৎপর বিরোধীরা।
এই মুহূর্তে রাজ্যে যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোনও নির্বাচনেই তৃণমূলকে হারানোর মতো ক্ষমতা এককভাবে কোনও বিরোধী দলেরই নেই। তাই জোট বাঁধা ছাড়া বিকল্প কোনও উপায় নেই বিরোধীদলগুলির। এমতাবস্থায় মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়েছেন। তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন বলে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা চলছে।
সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে চাইছে বিরোধীরা। মুকুল রায়কে 'সেনাপতি' করে তাঁর নেতৃত্বে নির্বাচনে লড়ার এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি মুকুল রায়ের সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক দলেরই বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নতুন কোনও প্রতীক হলে তৃণমূলবিরোধী লড়াইয়ে সবাই এক হতে আপত্তি থাকবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলও।
উলুবেড়িয়া লোকসভা নির্বাচন হোক কিংবা সবং বা নোয়াপাড়া বিধানসভা। উপনির্বাচনে তৃণমূলকে শিক্ষা দিতে নতুন অগ্নিপরীক্ষায় জেতার অঙ্ক কষছেন মুকুল রায়। প্রথম পছন্দ উলুবেড়িয়া লোকসভা। তা না হলে সবং বা নোয়াপাড়ায় এই নয়া মডেলের পরীক্ষা হতে পারে।
ইতিমধ্যে বিজেপির তরফে এই মডেলে সায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিজেপির সমর্থন পাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় নেই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুধু সংশয় রয়েছে বামশিবিরকে নিয়ে। বাম শিবির সহমত হলেই নতুন মডেলের পরীক্ষা হতে পারে। হতে পারে মুকুল রায়েরও অগ্নিপরীক্ষাও। মুকুলবাবুর বিশ্বাস, তিনি তৃণমূলের একটা বড় অংশের সমর্থন পাবেন। শুধু তাঁর গোষ্ঠীর সমর্থনই নয়, সবংকে বেছে নিলে শুভেন্দু অধিকারী গোষ্ঠীর সমর্থনও আসবে তাঁর পক্ষে।