মুকুল কি নিজেকে বদলে ফেলেছেন, নাকি বাংলার রাজনীতিতে নয়া ‘চাণক্য’-কৌশল
মুকুল রায় কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপির টিকিটে প্রথমবার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই মুকুল রায় এক মাস ঘুরতে না ঘুরতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। তারপর সেই কৃষ্ণনগরে গিয়েই তিনি তৃণমূলের হয়ে সওয়াল করলেন।
মুকুল রায় কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপির টিকিটে প্রথমবার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই মুকুল রায় এক মাস ঘুরতে না ঘুরতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। তারপর সেই কৃষ্ণনগরে গিয়েই তিনি তৃণমূলের হয়ে সওয়াল করলেন। একবার বেফাঁস মন্তব্য করে বিজেপির বিজয়-বার্তা দিয়ে ফেললেও পরে সামলে নিয়ে এক বুলি বলে গেলেন মুকুল রায়।
একেবারেই অনুগত সৈনিক, তৃণমূলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ
২০১৬-র আগের মুকুল রায় আর ২০২১-এর পরের মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস যেন আসমান-জমিন ফারাক। আগে তিনি ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। তাঁর বক্তব্য আর দলের হয়ে নীতি-নির্ধারণ ছিল এক। কিন্তু এখন তিনি একেবারেই অনুগত সৈনিক। তৃণমূলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ তিনি।
মমতা যেমন নির্দেশ দেবেন, তা মেন চলবেন মুকুল
তৃণমূল প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে মুকুল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী তথা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন নির্দেশ দেবেন তিনি সেই নির্দেশ মেনে কাজ করবেন। তিনি তৃণমূলের সামান্য একজন সৈনিক। আসন্ন নির্বাচনে তাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেই দায়িত্ব তিনি পালন করবেন।
ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের পতন হবে, দাবি মুকুলের
মুকুল রায় বলেন, রাজ্যের পুর নির্বাচন হোক বা উপনির্বাচন। কিংবা ত্রিপুরার ভোট, তিনি যেমন দায়িত্ব পাবেন, তেমনভাবেই কাজ করবেন। ত্রিপুরা যেতে বললেও তিনি রাজি। এদিন তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্যে মুকুল রায় জানান, বিজেপি ভয় পেয়েছে ত্রিপুরায়। এবার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোটের মাধ্যমেও ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের পতন হবে।
তৃণমূল বেঙ্গল-মডেলেই হারাবে বিজেপিকে
মুকুল রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু করেছেন। বাংলায় বহু উন্নয়মুখী কাজ হয়েছে। মানুষ উপকার পেয়েচে বলেই তাঁরা তৃণমূলকে চেয়েছে। বিপুল আসনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। বাংলার এই জয়ের প্রভাব, তৃণমূল সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্মের প্রভাব এবার পড়তে বাধ্য ত্রিপুরায়।
দলীয় শৃঙ্খলার বেড়িতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন মুকুল!
মুকুল রায়ের কথায় আনুগত্য বুলি শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতির মহলে আলোচনা চলছে, তবে কি দলীয় শৃঙ্খলার বেড়িতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন মুকুল রায়। মুকুল রায়ের আগের সেই গুরুত্ব আর নেই তৃণমূলে। তৃণমূল মানে এখন মমতা। আর কেউ অপরিহার্য নয়। মুকুলের আনুগত্যই তা প্রমাণ করে দিচ্ছে। বাংলার রাজনীতির চাণক্যের আগের সেই মেজাজ এখনও ফেরেনি।
মুকুল রায় কি চাপের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলে
পাশাপাশি এমন প্রশ্নও উঠে পড়েছে, মুকুল রায় কি চাপের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলে। এখনও কোনও বিশেষ গুরুত্ব পাননি। পাননি বিশেষ কোনও পদ। আবার তিনি ফেরাতেও পারেননি তাঁর সব অনুগামীদের। শুধু ছেলেকে নিয়ে তিনি ফিরে এসেছেন। আর নিচুতলায় কয়েকজন ফিরেছেন। এমতাবস্থায় জল্পনার পারদ চড়েছে এদিন মুকুল রায়ের বেফাঁস মন্তব্যে।