মুকুল জল্পনা বাড়িয়েই চলেছেন একুশের ভোটের আগে! তৃণমূলের সঙ্গে চাপে থাকছে বিজেপিও
দিনে তিনেক আগে হঠাৎ করেই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুকুল রায়। তা নিয়ে কম জল্পনা হয়নি। শুক্রবার বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনার দিন তিনি আবার নতুন করে জল্পনা সৃষ্টি করলেন নয়া বার্তায়।
দিনে তিনেক আগে হঠাৎ করেই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন মুকুল রায়। তা নিয়ে কম জল্পনা হয়নি। শুক্রবার বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সূচনার দিন তিনি আবার নতুন করে জল্পনা সৃষ্টি করলেন নয়া বার্তায়। সম্প্রতি মুকুল রায়ের মুখ থেকে মাঝেমধ্যেই শোনা যাচ্ছে বেসুরো ধ্বনি। তাই জল্পনা বাড়ছে একুশের ভোটের আগে।
চিরদিন কাহারও সমান নাহি যায়...
সম্প্রতি বিজেপির তরফে ভিন্ন দল থেকে যোগদানের দরজা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর ঠিক তারপরই মুকুল রায়ের মুখে শোনা যাচ্ছে বৈরাগ্যের সুর। একবার বলছেন নতুনদের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। কোন সময় সরতে হয় তিনি জানেন। আবার বলছেন চিরদিন কেউ এক জায়গায় থাকতে পারে না।
জল্পনা যে বাড়ছে, বলার অপেক্ষা রাখে না
মুকুল রায় নতুনদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার বার্তায় নিজে জায়গা ছাড়ার কথা বলেছিলেন। এবার তিনি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে বলেন, চিরদিন কেউ এক জায়গায় থাকতে পারে না। এর মধ্যে তিনি নিজেকে নিয়েও কোনও বার্তা দিতে চেয়েছেন কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে জল্পনা যে বাড়ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাজনৈতিক পরিবেশ বিষাক্ত, সরব মুকুল
মুকুল রায় বলেন, মানুষের কাছে পৌঁছনোর অনেক রাস্তা রয়েছে। চিরদিন কেউ একজায়গায় থাকতে পারে না। কেউ কারও সঙ্গে থাকতেই পারে এককালে, কিন্তু চিরদিন যে থাকবে, এমন কোনও ব্যাপার নেই। কেউ চলে গিয়েছে বলে রাজনৈতিক আক্রমণ আর প্রতি আক্রমণে রাজনৈতিক পরিবেশকে বিষাক্ত করে তোলার কোনও অর্থ হয় না।
আরও অনেকে জায়গা ছেড়ে দিতে পারে
মুকুল রায় বলেন, রাজ্যে বাম আমলে পরিবর্তনের যে লড়াই শুরু হয়েছিল তাতে অবদান ছিল শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের। এখন তাঁরা মনে করছেন, সেই পরিবর্তন যথার্থ নয়। তাই তাঁরা হয়তো তাঁদের জায়গা ছেড়ে অন্য অবলম্বন খুঁজে নিয়েছে। রাজ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে আরও অনেকে জায়গা ছেড়ে দিতে পারে।
বিজেপির হয়ে বঙ্গে দু-দুটো ভোটের দায়িত্ব, তারপর...
একইসঙ্গে মুকুল রায়ও নিজেকে নিয়ে জল্পনা বাড়াচ্ছেন। মুকুল রায় এবার বিজেপিতে খাতায়-কলমে কোনও দায়িত্ব পাননি। এর আগে তিনি বিজেপির হয়ে বঙ্গে দু-দুটো ভোটের দায়িত্ব সামলেছেন। তাঁকে দিয়ে বিজেপি শুধু তৃণমূল ভাঙার কাজ করিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সেই কাজও এখন প্রায় বন্ধ। কৈলাশ বিজয়বর্গীয় স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন, ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য দল থেকে আর কাউকেই দলে নেওয়া হবে না।
নতুনদের আগমন নিয়ে ঝামেলা বেধেছে বিজেপিতে
সম্প্রতি বিজেপিতে বেনোজল ঢুকে পড়ছে বলে সঙ্ঘ বারবার সাবধান করেছে। বিজেপির আদি নেতা কর্মীদের মধ্যেও তা নিয়ে অসন্তোষ তীব্র হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই নতুনদের আগমন নিয়ে ঝামেলা বেধেছে। তাই আরএসএস বা সঙ্ঘ পরিবারের তরফে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভোটের আগে যোগদানের দরজা বন্ধ রাখার। সেইমতোই বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যোগদানের পর থেকে বিজেপির শক্তি বাড়িয়েছেন
আর দলবদল না হলে মুকুল রায়ের কাজ আদতে কমেই যায়। কেননা তিনি নিজে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে তৃণমূল ভাঙিয়েই চলেছেন। এরই মধ্যে মুকুল রায় অভিযোগ করেন, তাঁকে রাজ্য বিজেপি ঠিকঠাক কাজে লাগাচ্ছে না। দিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহের কাছেই এই অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
মুকুল অনুগামীদের মানতে নারাজ আদি বিজেপি
এরপর আবার কিছু ক্ষেত্রে মুকুল রায় বিরোধী স্লোগান উঠেছে বিজেপিতে। মুকুল রায় যাঁদের বিজেপিতে এনেছেন, তাঁদের অনেককে মানতে নারাজ আদি বিজেপি নেতারা। ফলে নব্যদের অপসারণের দাবিতে আদিরা রাস্তায় নেমে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছে। তারপর 'জায়গা ছেড়ে দেওয়া' এবং 'চিরদিন কারও একই জায়গা থাকে না' বলে মুকুল রায়ের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ।