মুকুলের পথ ধরে কারা এল বিজেপিতে, কারা রয়েছেন পা বাড়িয়ে, চিত্র স্পষ্ট
এখনও বড়সড় কোনও নাম মুকুলের সঙ্গে আসেনি বিজেপিতে। বরং মুকুল রায় পদ্মশিবিরে যোগ দেওয়ার পরে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কর্মীদের দলবদলের একটা হিড়িক কিছু ক্ষেত্রে চোখে পড়েছে।
মুকুল রায়কে বিজেপি সাদরে গ্রহণ করলেও এখনও বড়সড় কোনও নাম মুকুলের সঙ্গে আসেনি বিজেপিতে। বরং মুকুল রায় পদ্মশিবিরে যোগ দেওয়ার পরে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কর্মীদের দলবদলের একটা হিড়িক কিছু ক্ষেত্রে চোখে পড়েছে। মুকুল রায় আশ্বস্ত করেছেন আসল সময়েই বুঝতে পারবেন তৃণমূলের কতবড় ক্ষতিটা হল।
[আরও পড়ুন:দিলীপের গাড়ি আটকাল তৃণমূল, রণে ভঙ্গ দিয়ে কার দিকে আঙুল তুললেন তিনি ]
আবার এমনও ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন, কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল গঠন করার পরও সবাই একসঙ্গে ভিড় করেননি তৃণমূলে। বরং ভোটের প্রাক্কালেই দেখা গিয়েছে কংগ্রেসে ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলে যেগদান করেছিলেন কংগ্রেসের বিধায়ক-সাংসদরা। এবারও যে তেমনটা হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়!
অন্যদিকে
আবার
বিজেপি
রাজ্য
সভাপতি
দিলীপ
ঘোষ
দাবি
করেছেন,
'মুকুল
রায়
নন,
তাঁর
হাত
ধরেই
ভাঙবে
তৃণমূল।'
মুকুল
রায়ের
পথ
ধরেই
সেই
ভাঙন
তৃণমূলের
নিচুতলায়
হচ্ছে।
দিলীপ
ঘোষের
উত্তরবঙ্গ
সফরে
সেই
প্রবণতা
লক্ষ
করা
গিয়েছে।
বিশেষ
করে
কোচবিহারের
মেখলিগঞ্জ-সহ
বেশ
কয়েকটি
জায়গায়
তৃণমূল
ছেড়ে
বিজেপিতে
নাম
লিখিয়েছেন
শতাধিক
কর্মী।
সম্প্রতি
দিলীপ
ঘোষের
হাত
থেকে
পতাকা
নিয়েছেন
কোচবিহার
পঞ্চায়েত
সমিতির
তৃণমূল
কর্মাধ্যক্ষ।
সঙ্গে
তাঁর
অনুগামীরাও
মুকুল
রায়ের
হাত
শক্ত
করতে
বিজেপিতে
নাম
লিখিয়েছেন।
আর
দুদিন
আগে
আলিপুরদুয়ারেও
আরএসপির
প্রাক্তন
বিধায়ক
মনোজকুমার
ওরাঁ
যোগ
দেন
বিজেপিতে।
তাঁর
হাতে
গেরুয়া
পতাকা
তুলে
দেন
বিজেপির
রাজ্য
সভাপতি
দিলীপ
ঘোষ।
[আরও পড়ুন:বুদ্ধ-জ্যোতিবাবুরা যা পারেননি অবলীলায় তা করে দেখালেন মমতা, স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায় বাংলা]
শুধু তাই নয়, মুর্শিদাবাদের অধীর গড়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন প্রায় ছ'শো কর্মী। এঁদের অনেকেই ছিলেন কংগ্রেসের অনুগত সৈনিক। তাঁদের আটকাতে পারেননি অধীর চৌধুরী। দলবল করে যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে ভিড় করেছিল, এখন সেইসব মুকুল অনুগামী কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, মুকুল রায়ের আহ্বানেই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। এই তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান ও সদস্য। তাঁদের হাতে পতাকা তুলে দেন জেলা বিজেপি সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ।
এদিকে পঞ্চায়েতকে পাখির চোখ করে আপাতত বড় নামের দিকে ছুটতে রাজি নয় বিজেপি। মুকুল রায়ের পরামর্শ মেনে তৃণমূলের কর্মীদের ভাঙিয়ে নিতেই পরিকল্পনা তৈরি করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্যের ৭৭ হাজার বুথে কর্মী তৈরি রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন মুকুল রায়। সেই লক্ষ্য স্থির করতে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে টার্গেট করেছে বিজেপি।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ্যে আপাতত ২০ হাজার তৃণমূলকর্মী। আগামী ২০ নভেম্বর থেকে মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ জেলা সফর শুরু করেছেন। সেই জেলা সফরেই ২০ হাজার তৃণমূল কর্মীদের যোগদান করানো হবে। এই দলবদলকে প্রচারে আনাই প্রাথমিক লক্ষ্য বিজেপির। সেই কারণে প্রতি জেলাতেই সভার আয়োজন করা হচ্ছে। এই সভায় মুকুল রায় যেমন পরিচিত হবেন বিজেপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে, তেমনি তাঁর হাত ধরে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধরা যোগ দেবেন বিজেপিতে। এই কাজ একমাসের মধ্যে শেষ করাই লক্ষ্য বিজেপির।
মুকুল-দিলীপের প্রাথমিক লক্ষ্যে রয়েছে, দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলা। তারপর মুর্শিদাবাদ ও উত্তরবঙ্গ সফর করবে বিজেপি। সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন নিচুতলার কয়েকজন তৃণমূল নেতা। তাঁদের হাত ধরেই কর্মীরা আসবেন বলে জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির নিয়ম জেলায় যোগদান করাতে গেলে জেলা সভাপতিদের অনুমতি লাগে, সেজন্য জেলা সভাপতিদের নিয়ে বিশেষ একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে।
তবে মুকুল রায় তাঁর অনুগামী হিসেবে কর্মীদের দলবদল করিয়ে তৃণমূলকে সবক শেখাতে চাইছে। এখনও পর্যন্ত কোনও বড় নামকে তিনি নিয়ে যাতে পারেননি সঙ্গে। ধর্মতলায় বিজেপির সভায় আত্মপ্রকাশের দিন উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দল ও নৈহাটির গ্রামীণ প্রাণী ও মৎস্য সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ পার্থসারথি পাত্র সদলবলে বিজেপিতে যোগদান করেন।
তাই কেন একজনও বিধায়ক বা সাংসদকে তিনি আনতে পারলেন না, সে প্রশ্ন রয়েই যায়। এমনকী মুকুল দল ছাড়ার পর বিদ্রোহ ঘোষণা করা নেতারাও এখন চুপ। তাই তৃণমূল ভাঙাতে মুকুল রায় কতখানি সফল হবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলও ধন্দে।