কত টাকায় ‘রফা’ হল মুকুলের সঙ্গে! বিজেপির দেওয়া রসিদেই মিলল প্রমাণ
অনেক বিকল্প থাকলেও বিজেপিকেই অগ্রাধিকার দিলেন মুকুল। তারই জেরে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে উভয়ের মধ্যে কী রফা হল? কত টাকার বিনিময়ে মুকুল বিজেপির হলেন?
তৃণমূলের সঙ্গে ২০ বছরের 'গাঁটছড়া' ভেঙে মুকুল রায় এখন বিজেপি নেতা। দীর্ঘ ২৪ দিনের টালবাহানার পর অশোকা রোডে বিজেপির সদর দফতরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতের উত্তরীয় গলায় পরেছেন সম্প্রতি। তাঁকেই এখন সবথেকে বড় ভরসা মানছেন অমিত শাহ-রা। বাংলায় তৃণমূলকে হটাতে বিজেপির পয়লা নম্বর বাজি মুকুলই।
নানা প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও মুকুল রায় বিজেপিকেই বেছে নিলেন। তার হাতে অনেক বিকল্প থাকলেও বিজেপিকেই অগ্রাধিকার দিলেন। তারই জেরে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে উভয়ের মধ্যে কী রফা হল? কত টাকার বিনিময়ে মুকুল বিজেপির হলেন? তা নিয়েই এখন চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
কিছুদিন আগেই গুজরাটে কোটি টাকার ঘুষ দিয়ে কংগ্রেস বিধায়ককে দলে টানার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। খোদ দলত্যাগী বিধায়ক হাটে হাঁড়ি ভেঙে বিজেপির স্বরূপ প্রকাশ করে দিয়েছিলেন। মুকুল রায়ের ক্ষেত্রে অবশ্য তেমন কিছু ঘটেনি। মুকুল রায় কোনও টাকাই পাননি বিজেপি থেকে। উল্টে মুকুল রায়কে দিতে হয়েছে টাকা। বিজেপিতে যোগ দিতে পাঁচ টাকা 'এন্ট্রি ফি' দিতে হয়েছে তাঁকে।
গেরুয়া শিবিরে এটাই নাকি রীতি। পাঁচ টাকা দিয়ে দলের সদস্যপদ নিতে হয়। আবেদনপত্র্রের সঙ্গে ওই টাকা নেওয়া হয়। একেবারে নিয়ম মেনে ওই টাকার রসিদও দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ মুকুল রায়কে স্বাগত জানানোর পর ঘোষণা করেন তাঁর হাতে ওই পাঁচ টাকার রসিদ তুলে দিতে। সেইমতো রসিদ তুলে দেন কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। এর মাধ্যমেই মুকুল রায় বিজেপির প্রাথমিক সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি পান।
তবে যে রসিদটি মুকুল রায়ের হাতে তুলে দেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক। মুকুল রায়ের রসিদে স্বাক্ষর করেছেন দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি। সেখানেই প্রশ্ন, মুকুল রায় কি তাহলে দিল্লি থেকে যোগ দিলেন বিজেপিতে। এ রাজ্য থেকে বিজেপিতে যোগ দিতে গেলে দিলীপ ঘোষের কাছে আবেদন করতে হত। এবং তখন রসিদে সই থাকত দিলীপ ঘোষের। কিন্তু তা না হওয়ায় মুকুলের বিজেপির সদস্যপদ নিয়ে তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্ক।
উল্লেখ্য, মুকুল রায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষের কাছে তিনি আবেদন করবেন না। সেই কথাতেই তিনি অনড় থাকলেন। দিলীপ ঘোষের কাছে আবেদন না করে, আবেদন করলেন মনোজ তিওয়ারির কাছে। তবে তাঁকে আবেদন করতেই হল। একটা সময় বিজেপিতে আবেদন করবেন না বলেও ক্ষোভ জানিয়েছিলেন মুকুল।