সারদাকাণ্ডে মমতাকে ‘ক্লিনচিট’, দল ছেড়েও কেন এমন কথা মুকুলের
শুধু রাজ্যসভার সদস্যপদ ছাড়া বা তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নই নয়, মুকুল রায় এদিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে কী বোমা ফাটান সেদিকেই নজর ছিল বিরোধীদের। বিশেষ করে সারদা ও নারদ নিয়ে তিনি কী বলেন মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে, তা নিয়ে রাজনৈতিক ময়দান সরগরম ছিলই। সেই জল্পনায় কার্যত জল ঢেলে দিলেন মুকুল রায়। সারদা ও নারদে মমতাকে ক্লিনচিট দিলেন তিনি।

রাজ্যসভার সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে আগাগোড়া তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তোপ দেগে গিয়েছেন মুকুল রায়। কিন্তু সারদা ও নারদ প্রসঙ্গ উঠতেই মুকুল রায় মমতাকে ক্লিনচিট দিলেন। তিনি বলে দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারদা ও নারদ নিয়ে কিছু জানতেন না। এই অভিযোগ যে যার ব্যক্তিগত।
এদিন নাম না করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারতন্ত্র নিয়ে মমতাকে তোপ দাগেন। মমতার দলের এক সময়ের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড মুকুল রায় তোপ দাগেন তৃণমূলের পরিবারতন্ত্র থেকে শুরু করে আরএসএস-যোগ নিয়ে। সব কিছুতেই তৃণমূল নেত্রীকে চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন মুকুল রায়। কিন্তু চিটফান্ড ও সারদা প্রসঙ্গ উঠতেই পাল্টি খেলেন। মমতা এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে মন্তব্য তাঁর।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তৃণমূল ছাড়লেও তৃণমূল নেত্রীর প্রতি তিনি আনুগত্য বজায় রাখলেন। শেষ দিন পর্যন্ত তিনি যে মমতার অনুগত সৈনিক ছিলেন, তা বুঝিয়ে যেতেই মুকুলের এই বার্তা বলে মনে করছে একাংশ। একাংশের ব্যাখ্যা, মুকুল রায় নিজে এখনও ক্লিনচিট পাননি সারদা-নারদ থেকে। তাই এ বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে চাইলেন না। খোঁচাতে চাইলেন মমতাকে।
এদিন মুকুল রায় সারদা ও নারদ ইস্যুতে নিজের সমর্থনেও মুখ খোলেন। তিনি বলেন, আমাকে আটঘণ্টা টানা জেরা করেছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁরা যা জানার জেনেছিলেন। আমি তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছি। আশা করি তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন আমার কোনও সংযোগ ছিল না এ বিষয়ে।
এদিকে বিরোধীরা চূড়ান্ত হতাশ হলেন। তাঁরা ভেবেছিলেন মুকুল রায় সারদা ও নারদ ইস্যুতে বোমা ফা্টাবেন। অনেক রসদ পাবেন মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানোর। কিন্তু তা হল না। মুকুল মমতার প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে বিরোধীদের সেই আশায় জল ঢেলে দিলেন।