খাসতালুকেই ‘জামানত জব্দ’ মুকুলের, নোয়াপাড়ায় গোহারা হেরে ‘হেভিওয়েট’ তকমা গেল বলে
ফের মুকুলের মুখে চুন-কালি মাখিয়ে দিল তৃণমূল। নতুন দলে গিয়ে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়লেন বিজেপির তথাকথিত ‘প্রাণভোমরা’।
প্রার্থী ঘোষণা থেকে শুরু, তারপর ভোটের দিন ভুয়ো ছবি পোস্ট এবং সবশেষে নিজের খাসতালুকেই গোহারা হার। ফের মুকুলের মুখে চুন-কালি মাখিয়ে দিল তৃণমূল। নতুন দলে গিয়ে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়লেন বিজেপির তথাকথিত 'প্রাণভোমরা'। যাঁকে ঘিরে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বিজেপি, সেই মুকুল রায়ই ডুবিয়ে ছাড়লেন পদ্ম-শিবিরকে। বিজেপি যে এখনও জয়ের সরণিতে ফেরার মতো অবস্থায় আসেনি, সবংয়ের পর তা ফের প্রমাণ করে দিল নোয়াপাড়া।
সবংয়েও যেমন মূল লড়াই দাঁড়িয়েছিল বিজেপি ও সিপিএমের মধ্যে। সে অর্থে জয় পেতে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনও লড়াই-ই করতে হয়নি। তারা ব্যবধান বাড়াতে বাড়াতে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিল। আর শেষপর্যন্ত বিজেপিকে হারিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিল সিপিএম। এক্ষেত্রে হল উল্টোটা। তৃণমূল ধরা ছোঁয়ার বাইরে গিয়ে জয়ী হল ৬৩ হাজারেরও বেশি ভোটে। আর বিজেপি ও সিপিএম অনেক নীচে থেকে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালিয়ে গেল। শেষপর্যন্ত বামকে টপকে গিয়ে দ্বিতীয় হল বিজেপি। সবংয়ের মতো নিজেদের আসনে কংগ্রেস ফের শেষ করল চতুর্থ স্থানে।
সবংয়ে বিজেপির ধ-ব কিছু ছিল না। কিন্তু নোয়াপাড়া ছিল মুকুল রায়ের খাসতালুক। তাই এখানে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসকে জোর পাল্লা দেবে- এমনটাই ভেবেছিল রাজনৈতিক মহল। আদতে কিন্তু দেখা গেল পুরো ভিন্ন চিত্র। কোনও লড়াই-ই দিতে পারল না পদ্মশিবির। আরও স্পষ্ট করে বললে মুকুল শিবিরকে একেবারে গোহারা হারিয়ে দিলেন অর্জুন সিং ব্রিগেড।
একবার ২০১৬ ও ২০১৮-র নির্বাচনী ফলাফলের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে বাস্তব চিত্রটা। ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস এখানে ৭৮,৪৫৩ ভোট পেয়েছিল। আর বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী মধুসূদন ঘোষ ৭৯,৫৪৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ২৩, ৫৭৯। এক্ষেত্রে ২০১৮ সালে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ১,১১,৭২৯। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৩৮,৭১১। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ৩৫,৪৯৭, কংগ্রেস পেয়েছে ১০,৫২৭ ভোট।
এই নিরিখে বলাই যায়- বিজেপি মাত্র ১৫ হাজার ভোট বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। সেক্ষেত্র বাম-কংগ্রেসের ভোট কমেছে ৩২ হাজারেরও বেশি। অর্থাৎ বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস নোয়াপাড়ায় ডাহা ফেল। রেকর্ড ভোটে দলীয় প্রার্থী সুনীল সিংকে জয়ী করিয়ে নায়ক অর্জুন সিং। মুকুল-ফ্যাক্টর এবারও কাজ করল না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও মুখ পুড়ল তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে হেভিওয়েট মর্যাদা পাওয়া মুকুল রায়ের।