ডাক পেয়েও ভবনমুখো হলেন না মুকুল! দু-দশকের সম্পর্ক কি তবে ছিন্ন হওয়ার পথে
দলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে তৃণমূল ভবনে এড়িয়ে চলতেই শুরু করে দিলেন মুকুল রায়? ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক আবাসনে মুকুল রায় কাটালেন দুপুরভর। অথচ তৃণমূল ভবনে একটিবারও তিনি পা রাখলেন না।
তৃণমূল ভবনের সঙ্গে কি সম্পর্ক ছিন্ন করতে শুরু করে দিলেন মুকুল রায়? তৃণমূল ভবনের বিশ্বকর্মা পুজোয় তাঁর অনুপস্থিতি ফের সেই প্রশ্ন তুলে দিল একবার। ফের জল্পনা শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক মহলে- কেন এলেন না মুকুল রায়? যে তৃণমূল ভবন তাঁর ধ্যানজ্ঞান ছিল, সেখান থেকে আমন্ত্রণ আসার পরও কেন তিনি গরহাজির?
তবে কি দলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে তৃণমূল ভবনে এড়িয়ে চলতেই শুরু করে দিলেন তিনি? ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক আবাসনে মুকুল রায় কাটালেন দুপুরভর। অথচ তৃণমূল ভবনে একটিবারও তিনি পা রাখলেন না। মুকুল ঘনিষ্ঠ এক নেতা অবশ্য জানান, 'এর মধ্যে আলাদা কোনও গন্ধ নেই। দাদা এদিন খুব ব্যস্ত ছিলেন। বিকেলের পর তিনি দিল্লি বেরিয়ে গিয়েছেন।'
বেশ কয়েক বছর ধরে তৃণমূল ভবনে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। এবার এই পুজোয় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সি। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়কেও। কিন্তু তিনি ভবনমুখো হলেন না।
তিনি ব্যস্ত থাকলে না যেতেই পারেন। কিন্তু তৃণমূল ভবনের অদূরে থেকেও একবার দর্শন দেবেন না, তা হয় না। আগে হয়ওনি। তাই এখন মুকুলের অনুপস্থিতি নিয়েই নানা জল্পনার সূত্রপাত। তবে কি তাঁকে সমস্ত সাংগঠনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় তৃণমূল ভবনমুখো না হয়ে বার্তা দিলেন দলকে? এদিন অনুগামীদের সঙ্গেই ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একটি আবাসনে কাটিয়েছেন তিনি। তাঁর অনুগামীরা জানান, 'দাদা' কোনওদিনই বিশ্বকর্মা পুজো বা গণেশ পুজোয় যান না। এর মধ্যে আলাদা কোনও গন্ধ খোঁজা বৃথা।
এবারও বিশ্বকর্মা পুজোয় পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তৃণমূল ভবনে যাবতীয় পুজো পাঠের পৌরহিত্যে তিনিই থাকেন। থাকেন সুব্রত বক্সি। আর থাকতেন মুকুল রায়ও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, তৃণমূল ভবনে বিশ্বকর্মা পুজো হয়ে আসছে নিতান্তই যান্ত্রিক কারণে। এই দফতরে রয়েছে কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি। সেই আঙ্গিকেই পুজোর আয়োজন। তৃণমূলকর্মীদের আবদার মেনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুমতি দিয়েছিলেন বিশ্বকর্মা পুজোর। সেই থেকেই রীতি মনে পুজো আয়োজন হচ্ছে।
কিন্তু সে সব ছাপিয়ে তৃণমূল ভবনের বিশ্বকর্মা পুজোতেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও উঠে এসেছেন মুকুল রায়। কলকাতায় থাকলে তৃণমূল ভবনে নিজের ঘরে বসতেন তিনি। তৃণমূলকর্মীরা ভিড় করতেন। তাঁদের নানা আবদার মেটাতেন মুকুল রায়। এটাই ছিল তাঁর নিত্যকর্ম। সেই ধারা কি তাহলে এবার বদলাতে চলেছে? মুকুল রায় কি তাহলে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরুই করে দিলেন প্রায় দুই দশকের সম্পর্ক চুকিয়ে?